Friday, April 26, 2024
HomeScrollingমেয়াদ শেষেই পৌরসভার দায়িত্ব ছাড়তে হবে, বসবে প্রশাসক: প্রধানমন্ত্রী

মেয়াদ শেষেই পৌরসভার দায়িত্ব ছাড়তে হবে, বসবে প্রশাসক: প্রধানমন্ত্রী

অনলাইন ডেস্ক।।

প্রতি পাঁচ বছরে নির্বাচন আয়োজনের পদ্ধতি কঠোরভাবে অনুসরণের লক্ষ্যে স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) (সংশোধনী) আইন, ২০২১ এর অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সোমবার মন্ত্রিসভার সাপ্তাহিক বৈঠকে এই অনুমোদন দেয়া হয়। গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী ভার্চুয়ালি বৈঠকে যোগ দেন। মন্ত্রিপরিষদের সদস্যবৃন্দ সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষ থেকে বৈঠকে অংশ নেন।

বৈঠকের পর মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, দেখা গেছে যে- মেয়াদের শেষের দিকে, কোন কোন চেয়ারম্যান আদালতে যান এবং পরবর্তী নির্বাচন আয়োজনে বিঘ্ন সৃষ্টি করেন।

তিনি বলেন, আর এভাবেই কিছু চেয়ারম্যান পাঁচ বছরের বেশি, এমনকি ১৫-১৬ বছর পর্যন্ত তাদের পদে বহাল থাকেন। বিদ্যমান আইনের সুযোগ নিয়েই তারা এমনটি করেন। আর এভাবেই পরবর্তী নির্বাচন আয়োজনের আগ পর্যন্ত তারা ওই পদে বহাল থাকেন।

তিনি আরও বলেন, এই অপচেষ্টা বন্ধ করতেই সরকার ২০১৯ আইনের এই সংশোধন করেছে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব প্রস্তাবিত আইনটি সম্পর্কে বলেন, পাঁচ বছর মেয়াদ পূর্ণ হলে সরকার সরকারি চাকরিজীবীদের মধ্য থেকে বা প্রশাসনিক কাজে অভিজ্ঞ ও দক্ষ অন্য কোন যোগ্য ব্যক্তিকে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দিতে পারবে।

তিনি বলেন, নিয়োগপ্রাপ্ত প্রশাসক সর্বোচ্চ ছয় মাসের জন্য এই পদে বহাল থাকতে পারবেন এবং এই সময়ের মধ্যেই নির্বাচন সম্পন্ন হতে হবে।

সভায় নতুন কোন পৌরসভার জন্য তালিকাভুক্ত হতে হলে ওই এলাকার প্রতি কিলোমিটারে ন্যূনতম ২ হাজার জনগণ থাকতে হবে বলে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বর্তমান আইনে প্রতি কিলোমিটারে ন্যূনতম ১ হাজার ৫০০ জনগণ থাকার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সভায় পৌরসভা সচিবের নাম পরিবর্তন করে পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।

খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, প্রস্তাবিত আইনে আরেকটি শর্ত অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। যাতে বলা হয়, কোন পৌরসভা তার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ১২ মাস বেতন বা অন্য কোন ভাতা প্রদানে ব্যর্থ হলে, সরকার সেই পৌরসভার মর্যাদা বাতিল করতে পারবে।

এছাড়াও মন্ত্রিসভায় এসেনশিয়াল সার্ভিসেস মেইনট্যানেন্স অ্যাক্ট, ১৯৫২ ও দি এসেনশিয়াল সার্ভিসেস (সেকেন্ড অরডিন্যান্স), ১৯৫৮ এর মাঝে সমন্বয় করে এসেনশিয়াল সার্ভিসেস অ্যাক্ট, ২০২১-এর খসড়া অনুমোদন দিয়েছে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, প্রস্তাবিত বিলটি পাশ হলে, সরকার প্রয়োজন অনুযায়ী যে কোন বিশেষ জরুরি সেবা প্রদান করতে পারবে।

তিনি আরো বলেন, জরুরি সেবার মধ্যে পদ, টেলিযোগাযোগ, ইন্টারনেট সার্ভিস, আইসিটি, ডিজিটাল সার্ভিস, মোবাইল আর্থিক সেবা, ডিজিটাল আর্থিক সেবা, বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বিতরণ সংক্রান্ত সেবাসমূহ, রেলপথ, জলপথ, সড়কপথ ও আকাশপথে যাত্রী ও পণ্য পরিবহন সেবা অন্তর্ভুক্ত।

খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, সরকার সর্বোচ্চ ছয় মাসের জন্য এই জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে পারবে।

এ ক্ষেত্রে জরুরি ঘোষণার পর সেখানে কোন ধরনের ধর্মঘট হলে তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে।

এই আইনের যে কোন ধরনের লঙ্ঘন শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে এবং যদি কোন শ্রমিক এই আইন লঙ্ঘন করে- তবে তাকে ২৫ হাজার টাকা থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা, ছয় মাসের কারাদণ্ড- অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করা হতে পারে।

মালিকের জন্য এক লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা, এক বছরের কারাদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।

প্রস্তাবিত আইনটিতে অবৈধ ধর্মঘটের জন্য চাকরিচ্যুতির বিধান রাখা হয়েছে। এছাড়াও ছয় মাসের কারাদণ্ড, ২৫ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।

পাশাপাশি, কেউ কোন ব্যক্তিকে আইন লঙ্ঘন করতে উসকানি দিলে তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, এক বছরের কারাদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।

মন্ত্রিসভায় চিটাগং ডিভিশন ডেভেলপমেন্ট বোর্ড অরডিন্যান্স, ১৯৭৬ (রিপিল) অ্যাক্ট,২০২১ এরও অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এটা আদালতের নির্দেশনায় বিদ্যমান আইনটির বিলুপ্তি ঘটাবে- যেখানে বলা হয়েছে, সামরিক শাসন আমলে করা সকল আইন বাতিল।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, মন্ত্রিসভায় দক্ষিণ সুদানসহ কয়েকটি আফ্রিকান দেশের কৃষি জমি লিজ নিয়ে কৃষিপণ্য উৎপাদনের বিষয়টি নিয়েও আলোচনা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই বিষয়ে দ্রুত খোঁজ খবর নিয়ে সেখানে কৃষিপণ্য উৎপাদনের সুযোগ আছে কিনা তা জানতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী, কৃষিমন্ত্রী ও বাণিজ্যমন্ত্রীকে নির্দেশ দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী দেশের কৃষিপণ্যের জন্য আরো বাজার খুঁজতে নির্দেশ দিয়েছেন।

এ ব্যাপারে স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশগুলো বাংলাদেশের শাকসবজি নিতে আগ্রহী বলে তিনি উল্লেখ করেন।

সরকার রপ্তানির বাড়ানোর জন্য কৃষিপণ্যগুলো পরীক্ষা ও সনদ প্রদানের লক্ষ্যে একটি আন্তর্জাতিক-মানের পরীক্ষাগার নির্মাণ করতে পূর্বাচলে কৃষি মন্ত্রণালয়কে দুই একর জমি বরাদ্দ দিয়েছে।

সভায় দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ক্লাস শুরুর বিলম্বের বিষয়েও আলোচনা করা হয়েছে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, সভায় কৃষিমন্ত্রী জানিয়েছেন যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সিন্ডিকেটের ওপরেই ক্লাস শুরুর বিষয়টি নির্ভর করছে।

মন্ত্রী আরও বলেন, ছাত্রাবাসগুলোর খারাপ অবস্থার কারণেই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হতে দেরি হচ্ছে। কারণ ছাত্রাবাসগুলো দেড় বছরের বেশি সময় বন্ধ ছিল।

তিনি আরো বলেন, সরকার ইতিমধ্যেই দুটি পাবলিক পরীক্ষার ঘোষণা দিয়েছে এবং বর্তমান পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে বা এই পরিস্থিতির আরও উন্নতি ঘটলে যথা সময়েই পরীক্ষাগুলো অনুষ্ঠিত হবে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘পরিস্থিতির অবনতি না ঘটলে এই পরীক্ষা আয়োজনের ক্ষেত্রে কোন সমস্যা নেই।’

এ সময় প্রধানমন্ত্রী ১৮ বছরের কম বয়সীদের ভ্যাকসিন প্রদানের উপায় বের করতে স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে নির্দেশ দেন।

মন্ত্রিসভায় জোরপূর্বক শ্রম সম্পর্কিত আইএলও কনভেনশন ১৯৩০ এর ২৯ ধারা সংশোধনীর অনুমোদন দিয়েছে।

এই সংশোধনীর ফলে ইউরোপীয় দেশগুলোতে দেশের পণ্য রপ্তানি আরও সহজ হবে।

RELATED ARTICLES
Continue to the category

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments