Friday, April 26, 2024
HomeScrollingপদ্মায় বিলীন চরের বাতিঘর খ্যাত শিবচরের সেই বিদ্যালয়

পদ্মায় বিলীন চরের বাতিঘর খ্যাত শিবচরের সেই বিদ্যালয়

মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার বন্দরখোলা ইউনিয়নে চরাঞ্চলের বাতিঘর খ্যাত সেই বিদ্যালয়টি অবশেষে পদ্মায় বিলীন হয়ে গেল।

স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, বুধবার মধ্যরাতে বিদ্যালয়টির মাঝ বরাবর দ্বিখণ্ডিত হয়ে হেলে যায়। উপজেলার বন্দরখোলা ইউনিয়নের নূরুদ্দিন মাদবরেরকান্দি গ্রামে অবস্থিত  এস ই এস ডি পি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের ৩ তলা ভবনটি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নদীতে ডুবে যায়।

২০০৯ সালে স্থাপিত হয় নূরুদ্দিন মাদবরের কান্দি এস. ই.এস.ডি.পি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়টি। বন্দরখোলা ইউনিয়নের চরাঞ্চলে স্থাপিত এই বিদ্যালয়টির কারণে শিবচর উপজেলার বন্দরখোলা ইউনিয়নের মমিন উদ্দিন হাওলাদারকান্দি, জব্বার আলী মুন্সীকান্দি, বজলু মোড়লের কান্দি, মিয়া আজম ব্যাপারীর কান্দি, রহমত হাজির কান্দি, জয়েন উদ্দিন শেখ কান্দি, মসত খাঁর কান্দিসহ প্রায় ২৪ টি গ্রাম ও ফরিদপুর জেলার সদরপুর উপজেলার চর নাসিরপুরসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের ছেলে-মেয়েরা এই বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করত। বিদ্যালয়টি ছিল চরাঞ্চলের একমাত্র দৃষ্টিনন্দন তিনতলা ভবনসহ আধুনিক সুবিধা সমৃদ্ধ বিদ্যালয়।

বিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চরের এই বিদ্যালয়টিতে শিক্ষার্থীদের সকলেই চরের বাসিন্দা। মূল ভূ-খণ্ড এখান থেকে বেশ দূরে হওয়ায় চরের ছেলে-মেয়েরা অন্যত্র গিয়ে লেখাপড়া করার সুযোগ পেত না। এই বিদ্যালয়টি হওয়ার কারণে এখানে চরের ছেলেমেয়েরা লেখাপড়া করত। চরের ছোট ছোট প্রায় ২৪ টি গ্রাম থেকে তিন শতাধিক শিক্ষার্থী ছিল বিদ্যালয়টিতে।

স্থানীয়রা জানায়, পদ্মার নিকটবর্তী হওয়ায় প্রতি বছরই বন্যার পানিতে ডুবে যেতো বিদ্যালয়সহ আশপাশের এলাকা। গত বছর পদ্মানদী ভাঙতে ভাঙতে পেছন দিক দিয়ে বিদ্যালয়টির নিকটে চলে আসে। এরপর গত বছরই ওই এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ড জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন ঠেকিয়ে রাখে। চলতি বর্ষা মৌসুমেও ভাঙন ঠেকাতে জিও ব্যাগ ডাম্পিং চলতে থাকে ওই এলাকায়। তবে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রচণ্ড স্রোতের কারণে জিও ব্যাগ ফেলে তেমন সুবিধা করতে পারছে না কর্তৃপক্ষ। এর ফলে বুধবার রাতে তিন তলা ভবনের বিদ্যালয়টির কিছু অংশ হেলে পরে।

বন্দরখোলা ইউনিয়নের তিন নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মো. ইসমাইল জানান, ‘বুধবার রাত ১১ টার দিকে হঠাৎ করেই বিকট শব্দ হয় স্কুলের ভবনের মধ্য থেকে। শব্দ পেয়ে অসংখ্য মানুষ ট্রলারে করে বিদ্যালয়টি দেখতে আসে। আমাদের সামনেই বিদ্যালয়টি মাঝখান থেকে ফাটল ধরে পেছন দিকে হেলে পরে।’

তিনি আরও জানান, ‘বিদ্যালয়টি মনোরম পরিবেশে একটি দৃষ্টিনন্দন বিদ্যালয় ছিল। রাতে বিদ্যালয়টিতে ভাঙন ধরলে এলাকাবাসী কান্নায় ভেঙে পরে। চোখের সামনে এভাবে বিদ্যালয়টি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে দেখে স্থানীয়রা আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়ে।’

এদিকে, পদ্মায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় চরাঞ্চলে ভাঙনের তীব্রতা বেড়েছে। ঘরবাড়ি ভেঙে নিরাপদ স্থানে ছুটে যাচ্ছে চরাঞ্চলের অসংখ্য মানুষ। এ ছাড়া পানিবন্দী হয়ে পরেছে হাজার হাজার মানুষ। ঘরবাড়ি তলিয়ে যাওয়ায় গবাদিপশু নিয়ে দুর্ভোগে দিন কাটাচ্ছে চরাঞ্চলের মানুষেরা।

RELATED ARTICLES
Continue to the category

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments