Friday, April 26, 2024
Homeসারাদেশরংপুর বিভাগজেলা আইনশৃঙ্খলা সভায় দহগ্রামের চোরাচালান বাণিজ্য নিয়ে অসন্তোষ!

জেলা আইনশৃঙ্খলা সভায় দহগ্রামের চোরাচালান বাণিজ্য নিয়ে অসন্তোষ!

লালমনিরহাট সংবাদদাতা:

গতকাল রোববার লালমনিরহাট জেলা আইন শৃঙ্খলা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা প্রশাসক আবু জাফরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় এ সময় আলোচনার এক পর্যায়ে দহগ্রামের বেপরোয়া চোরাচালান বাণিজ্যের বিষয়টিও উঠে আসে। আলোচনা-পর্যালোচনার পর চোরাচালানের ভয়াবহ পরিস্থিতি শুনে চরম অসন্তোষ প্রকাশ করেন জেলা প্রশাসন কর্মকর্তারা।

জানা গেছে,এর আগে গত সপ্তাহে রোববার পাটগ্রাম উপজেলা আইন শৃঙ্খলা সভায় আবারও দহগ্রামের চোরাচালান বাণিজ্য ও নানা অনিয়ম অসঙ্গতি বেশ গুরুত্বসহকারে আলোচনা করা হয়। ওই দিনের সভায় দহগ্রাম চেয়ারম্যান কামাল হোসেন প্রধান তাঁর বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশে তো দূরের কথা পৃথিবীতে এমন নিয়ম কোথাও আছে কি’না জানা নেই। চারদিকে ভারতবেষ্টিত দহগ্রাম – আঙ্গারপোতা এলাকায় গবাদিপশু গরু শুমারী করা হয়। দুই বছর আগেও শুমারী হয়েছিল বলে দাবী করেন তিনি। ২০১৬-১৭ সালে প্রথমবার শুমারীর সময়
দহগ্রামে গরু তালিকা হয় ৮ হাজার ১’ শ ১১ টি। গত কয়েক বছরে অনেক গাভী গরুর বাচ্চা (বাছুর) হয়েছে। সেগুলো তালিকাভুক্ত হয়নি। বছরে বছরে গরুর রং চেহারা পরিবর্তন হয়। দেশের কোথাও এ নিয়ম আছে কি’না প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে জানতে চান দহগ্রাম চেয়ারম্যান। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দহগ্রামের কৃষকদের গরুর তালিকায় অনেক সময় রং চেহারা মিল না পেলে বিজিবি আটকে দিয়ে সিজার দেন। প্রতিবাদ করারও উপায় থাকে না। সপ্তাহে ৬০ টি হিসেবে এক বছরে ( ৫২ সপ্তাহে) ৩১২০ টি বিক্রি করতে পারেন দহগ্রামবাসী। এরপরও হিসেব করলে শুমারীর খাতায় থাকা গরু দ্বিগুণ ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারনা করা হচ্ছে।

বিজিবি – বিএসএফের বেঁধে দেয়া নিয়মে প্রতি শনিবার ও বুধবার ৩০ টি করে সপ্তাহে ৬০ টি গরুর স্লীপ প্রদান করা হলেও এলাকার জনগণের চাহিদা মিটেনা। দহগ্রাম চেয়ারম্যানের এমন দুঃখের কথা শুনে পাটগ্রাম উপজেলা আ’লীগ সভাপতি পূর্ণ চন্দ্র রায় সভায় বলেন, বিজিবি’র হাতে আটককৃত ভারতীয় গরুর স্লীপ পরিষদ আর দিবে না। বিজিবি সেগুলো নিজ ক্ষমতা বলে তিনবিঘা করিডোর দিয়ে পার করবেন। এ বিষয়টি বিজিবি’র কর্মকর্তাদের জানানোর প্রস্তাব করলে উপস্থিত পানবাড়ি কোং কমান্ডার সুবেদার নজরুল ইসলাম উপর মহলে অবগত করার বিষয়ে সভায় প্রতিশ্রুতি দেন।

পাটগ্রাম ইউএনও সাইফুর রহমান বলেন, এরপর বিজিবি’র হাতে আটককৃত ভারতীয় অবৈধ গরু থানা পুলিশের হাতে কিংবা কাস্টমসে হস্তান্তর করতে হবে। নতুবা একজন ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে। বিজিবি বিওপিতে স্পট নিলাম দেওয়ার বিধান নেই বলে মন্তব্য করা হয়। নিলামে বারবার একই ব্যক্তি নিলাম ডাকে অংশ নেন কি’না এবং চেয়ারম্যান মেম্বরদের দেয়া গবাদিপশু বিক্রয়ের স্লীপ বারবার একই ব্যক্তি পাচ্ছেন কি’না তা খতিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন পাটগ্রাম ইউএনও সাইফুর রহমান। তিনি বলেন, অবৈধ মালামাল জব্দ করার পর পুলিশ -বিজিবি’র কাজ কাস্টমসকে হস্তান্তর করা। এরপর তারা গুদামজাত দেখিয়ে নিলাম ডাকের ব্যবস্থা নিবেন এটাই নিয়ম।বিগতদিনে নিলাম প্রক্রিয়াটি ছিল একেবারে অনিয়মতান্ত্রি।

দহগ্রামে বিজিবি’র হাতে আটককৃত ভারতীয় গরু -মহিষ নিলাম প্রক্রিয়া নিয়ে আপত্তিকর প্রশ্ন দেখা দেয়। সীমান্ত পথে আসা অবৈধ গরু ধরে কাস্টমসকে জানিয়ে বিওপি’র ভিতরে স্পট নিলামের আয়োজন করেন বিজিবি। এটি কোন নিয়ম নয় দাবী করে বিজিবি’র প্রতি আইনী নির্দেশনা মেনে চলার আহবান জানানো হয়।

পাটগ্রাম ইউএনও সাইফুর রহমান জানান,পাটগ্রাম আইনশৃঙ্খলা সভার কার্যবিবরণী জেলা প্রশাসক আবু জাফরকে অবহিত করা হয়।তিনি রংপুর ৫১ বিজিবি’র ব্যাটালিয়ন পরিচালক (সিও) লে.কর্ণেল ঈসহাক হোসেন ও ৬১ বিজিবি’র ব্যাটালিয়ন পরিচালক (সিও) লে. কর্ণেল মীর শাহরিয়ারকে সভায় উপস্থিত থাকার জন্য আমন্ত্রন জানান। লালমনিরহাট ১৫ বিজিবি’র ব্যাটেলিয়ন পরিচালকসহ এ প্রথম একই সভায় তিনটি ব্যাটালিয়নের পরিচালকগণ ( সিও) উপস্থিত ছিলেন। এ সময় পুলিশ সুপার আবিদা সুলতানাসহ জেলার অন্যান্য কর্মকর্তাগণও উপস্থিত ছিলেন।

RELATED ARTICLES
Continue to the category

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments