মাদারীপুরের কালকিনিতে আধিপত্য নিয়ে বর্তমান ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানের কর্মী-সমর্থকদের সংঘর্ষে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ (ওসি) আহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওসি শামীম হোসেনকে রাজধানীর পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
রোববার (২০ নভেম্বর) বিকালে কালকিনি উপজেলার আলীনগর ইউনিয়নের ফাঁসিয়াতলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, কালকিনি উপজেলার আলীনগর ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান শাহীদ পারভেজ ও সাবেক চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান মিলনের মধ্যে আধিপত্য নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। এমনকি দুই জনের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে প্রায়ই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এরই জেরে বিকালে বর্তমান চেয়ারম্যানের সমর্থক রেজাউল নামে এক ভ্যানচালককে মারধর করে। এ নিয়ে ফাঁসিয়াতলা এলাকায় দুই পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষের জড়িয়ে পড়ে।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান কালকিনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামীম হোসেনসহ সঙ্গীয় ফোর্সরা। এ সময় উভয়পক্ষের লোকজন বেশ কয়েকটি হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। বোমার আঘাতে আহত হন ওসি শামীম হোসেন, এক পুলিশ সদস্যসহ উভয়পক্ষের আরও ৮ জন। আহত শামীম হোসেনকে উদ্ধার করে প্রথমে কালকিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, পরে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ওসিকে রাজধানীর পঙ্গু হাসপাতালে প্রেরণ করে চিকিৎসক।
এছাড়া আহত রেজাউলকে মাদারীপুর সদর হাসপাতাল থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হয়। গ্রেপ্তার আতঙ্কে আহতরা কেউ ভর্তি হয়নি সরকারি কোনও হাসপাতালে। এদিকে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবিলায় এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ। সাবেক চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান মিলনের সঙ্গে ঘটনার পর ফোনে যোগাযোগ করে তাকে পাওয়া যায়নি।
আলীনগর ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান শাহীদ পারভেজ ফোনে জানান, আমি ঢাকায় আছি। পুলিশ নিজেরাই দেখছে কারা হামলা চালিয়েছে। পুলিশই বলতে পারবে কারা ঘটনা ঘটিয়েছে। তবে আমাদের এক ভ্যানচালকে মেরেছে সে গুরুতর আহত। আমরা অবশ্যই মামলা করবো।
কালকিনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শামীম হোসেন জানান, দুই পক্ষের সংঘর্ষ থামাতে গেলে বোমা ছুঁড়ে মারে দুর্বৃত্তরা।
মাদারীপুরের সিভিল সার্জন ডা. মুনীর আহম্মেদ খান জানান, ওসি শামীম হোসেনের বাম পায়ে বোমার ক্ষত চিহ্ন রয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে রাজধানীর পঙ্গু হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার চাইলাউ মারমা বলেন, দুই পক্ষের সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে সংঘর্ষকারীদের হাত বোমায় কালকিনি থানার ওসি শামীম হোসেন আহত হয়। এছাড়া রেজাউল নামে একজন গুরুতর আহত হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত তিনজনকে আটক করা হয়েছে।
Leave a Reply