অনলাইন ডেস্ক।।
বাংলাদেশের রক-মেটাল ভক্তদের একটি অন্যরকম আবেগের নাম ওয়ারফেজ। ১৯৮৪ সালের ৫ জুন পাঁচ তরুণ কমল, হেলাল, মীর, নাইমুল ও বাপ্পি মিলে গঠন করেন এই ব্যান্ডটি। দীর্ঘ সাত বছর পর প্রকাশিত হয় তাদের সেলফ টাইটেলড প্রথম অ্যালবাম। অ্যালবাম প্রকাশের সময় ওয়ারফেজের পাঁচ সদস্য ছিলেন সঞ্জয় কামরান রহমান (ভোকাল) শেখ মনিরুল আলম টিপু (ড্রামস), বাবনা করিম (বেজ গিটার, ভোকাল) ইব্রাহিম কমল আহমেদ (লিড গিটার) ও রাসেল আলী (কিবোর্ড ও গিটার)।
নব্বই দশকের শুরুতে যখন সফট ও মেলোডিয়াস ব্যান্ড গানে ভাসছে দেশ, ঠিক সে সময়ই ওয়ারফেজের স্কিলড-প্রফেশনাল হেভি ডিউটি ভয়েস, রুক্ষ ও তীব্র গিটার ওয়ার্ক, দ্রুতগতিসম্পন্ন নন-ফিল্টারড কি-বোর্ড ঝড়, খ্যাপা বেজ আর পাওয়ার ড্রামিং-কে কিন্তু বেশ ভালোভাবেই নিয়েছিল তরুণ সমাজ। রাতারাতি সুপার গ্রুপ বনে যায় ওয়ারফেজ। প্রথম অ্যালবামে তাদের ‘একটি ছেলে’ বা ‘বসে আছি’ থেকে ‘কৈশোর’- প্রায় সব গানকেই খুব ভালোভাবেই নেয় শ্রোতারা। ওয়ারফেজের হাত ধরে দেশে আসে মেটাল জোয়ার।
ওয়ারফেজের প্রথম অ্যালবামের ‘একটি ছেলে’ একটি অসম্ভব জনপ্রিয় গান। গানটির গীতিকার ও সুরকার ছিলেন ব্যান্ডটির সাবেক সদস্য বাবনা করিম। সম্প্রতি তার একটি ফেসবুক পোস্টে তিনি লেখেন ‘একটি ছেলে’ গানের জন্মকথা। ইংরেজিতে লেখা সেই স্ট্যাটাসের সরল বাংলা পাঠকদের জন্য দেওয়া হলো। পড়ে জেনে নিতে পারেন বিখ্যাত সেই গানটির জন্মকথা।
‘নব্বই দশকের গোড়ার কথা। আমি তখন বুয়েটে, ওয়ারফেজ-এর সাথে শো করছি না। ওই সময়টা ছিল আমার জীবনের খুব বাজে একটা সময়। অন্ধকার সময়- বলতে পারেন। একা একা, নির্জনে সময় কাটাই। এই সময়ই আমি প্রথম গান লেখা শুরু করি। তবে জানি না- কার জন্য। কিসের জন্য, তা-ও স্পষ্ট নয়। হতে পারে আমার হতাশার অভিব্যক্তিগুলো প্রকাশের জন্য। হয়তো আমার প্রিয় ভাই তান্নার মৃত্যুশোককে ভুলে থাকার জন্য।’
‘একটি ছেলে’ অনেকটাই ছিল আমার করা প্রথম কম্পোজিশন ‘বিচ্ছিন্ন আবেগ’-এর মতো।
‘কমল তার উচ্চশিক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার জন্য তৈরি। আমি ভাবলাম, কমল বিদেশে চলে যাওয়ার আগে ওদের সবার সাথে একবার দেখা করি। জয় ইসলাম-এর বাসায় দেখা করার কথা ভাবা হলো। আমি সে সময় ঠিক নিজেকে দেখানোর অবস্থায় ছিলাম না, আমার অবস্থা আগেই বলেছি- অন্যরকম ছিল।’
‘যাই হোক, ওয়ারফেজ-এর সামনে প্রথমবারের মতো আমার গানগুলো উপস্থাপন করলাম। এটা তাদের কাছে বেশ আশ্চর্যের ছিল যে আমার কাছে এতগুলো গান তৈরি আছে। মনে হয় সে সময় আমার করা কোনো কম্পোজিশনের জন্য ওয়ারফেজ প্রস্তুত ছিল না।’
‘এরপর আমার পরিচয় হয় রাসেল আলী এবং সঞ্জয় কামরান রহমান এর সাথে। তখন ওর শিশু, ১৬-১৭ বছর বয়স হবে ওদের। সঞ্জয় ছিল আগুন। ও ‘একটি ছেলে’ গানটিকে এক অন্যরকম প্রাণ দিল। কারণ ওর ছিল অসাধারণ ডেলিভারি। আমার মনে আছে…..গানটির শেষে ওর দীর্ঘ টানটি এককথায় ছিল অসাধারণ। আমি শিহরিত ছিলাম, বিস্মিতও।’
‘এ কথা অনেকটা জোর দিয়েই বলা যায়, ওয়ারফেজ এর গানের স্বাদ বাড়িয়েছেন সঞ্জয়। আমার প্রতিটি কম্পোজিশন সঞ্জয় তার ডেলিভারির মাধ্যমে অন্য একটি স্তরে নিয়ে যেতেন।’
Leave a Reply