ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে ধবলধোলাই হওয়ায় টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে যাওয়ার রাস্তা অনেকটাই কঠিন হয়ে পড়েছিল ভারতের জন্য। তবে বোর্ডার-গাভাস্কার সিরিজের প্রথম ম্যাচ জিতে সম্ভাবনা অনেকটাই বাড়িয়ে নিয়েছিলেন রোহিত শর্মারা। তবে মুদ্রার অপর পিঠ দেখতেও খুব বেশি দেরি করতে হলো না ভারতীয়দের। অজিদের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট হারায় আবার অনিশ্চয়তার মুখে ফাইনালে খেলা। ভারতের এমন পারফরমেন্সে প্রশ্ন উঠেছে রোহিত শর্মার ভূমিকা নিয়ে।
পিঙ্ক বল টেস্টে তাঁর মিডল অর্ডারে নেমে আসা যেমন প্রশ্নের মুখে, তেমনই মাইক্রোস্কোপের নীচে তাঁর অধিনায়কত্ব নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। পরপর চার টেস্টে তাঁর অধিনায়কের হার, তার উপরে দেশের মাঠে গত ১০ ইনিংসে একটি অর্ধশতকের ইনিংস ছাড়া রান নেই।
পিঙ্ক বল টেস্টে অধিনায়কের ব্যর্থতা নিয়ে রবি শাস্ত্রী বলেন, ‘রোহিতের বডি ল্যাঙ্গোয়েজ আমার ভালো লাগেনি। আমি ওর মধ্যে আরও আগ্রাসন দেখতে চেয়েছিলাম। এই দুটো টিমের মধ্যে সিরিজে আমরা বহু উত্থান–পতন দেখেছি। ভারতকে কিছু করতে হলে ব্রিসবেনে পরের টেস্টেই করতে হবে। এবং ক্যাপ্টেনকে এর জন্য সামনে থাকতে হবে। প্রয়োজনে আবার ওপেন করুক রোহিত। সেটা খুব পজি়টিভ একটা স্টেপ হবে।’
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, ক্যাপ্টেন রোহিত কি ফিরবেন ওপেনার হিসেবে? টেস্টে ওপেনার হিসেবে রোহিতের রেকর্ড খারাপ নয়। ৬৪ ইনিংসে করেছেন ২৬৮৫ রান, গড় ৪৪.০২। স্ট্রাইক রেট ৫৯ এর উপরে। এর মধ্যে আছে নয়টা সেঞ্চুরি। আবার ছয় নম্বরে ব্যাট করেও ২৭ ইনিংসে আছে ১০৪৬ রান, গড় ৪৯.৮০। পিঙ্ক বলে না হোক, লাল বলে শুরুতে অজি পেস অ্যাটাককে পাল্টা আক্রমণ করার সেরা বাজি হতেই পারতেন রোহিত।
কিন্তু তিন বছর আগেও টেস্টে যে রোহিতকে ক্রিকেটদুনিয়া দেখেছে, এই বছরে তা পাওয়া যাচ্ছে না। ইনিংসের শুরুতে পায়ের নড়াচড়া নিয়ে সমস্যা বরাবরই ছিল, কিন্তু পিঙ্ক বল টেস্টে তা আরও বেশি। ম্যাথু হেডেনের কথায়, ‘অজি বোলাররা যদি আপনার উইক স্পট পেয়ে যায়, যদি বোঝে আপনার আত্মবিশ্বাসে কোথাও একটা ফাটল আছে, সেখানেই ওরা টার্গেট করবে। রোহিতকে ব্রিসবেনেও টার্গেট করা হলে আমি অন্তত অবাক হব না।’
ভারতের সাবেক ক্রিকেটার আকাশ চোপড়া নিজের ইউটিউব চ্যানেলে রোহিতের সমালোচনা করে বলেন, ‘বুমরাহ চার ওভার বল করেই একটি উইকেট শিকার করে। কিন্তু এরপর হুট করেই তার বল বন্ধ করে দেয়া হয়। টানা বল করার যে বিষয়টা সেটা অ্যাডিলেটে লক্ষ্য করা যায়নি। এটা পুরোটাই অধিনায়কের দায়। রোহিত শর্মার অধিনায়কত্বে কোনো নতুনত্ব নেই। আমরা এটাকে রক্ষনাত্মক কৌশল বলব। সে অস্ট্রেলিয়াকে ভালো করার সুযোগ করে দিয়েছে।’
আকাশ চোপড়া বলেন, ‘পার্থে সে অধিনায়ক ছিলো না। সুতরাং সেই ম্যাচে জয় রোহিত শর্মার বেলায় গণ্য হবে না। আমরা যদি ধোনি, কোহলি এবং রোহিতের অধিনায়কত্ব বিশ্লেষণ করি তবে খুবই বাজে একটা উদাহরণ পাবো। এটা উদ্বেগের বিষয় যে তারা ধারাবাহিকভাবে ঘরের মাঠে বাজে ফল করেছে। রোহিতের অধিনায়কত্বে কোনো প্রাণ নেই।’