গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে ফসলি জমি থেকে অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু তোলা হচ্ছে। এতে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ফসলি জমি। হুমকির মধ্যে পড়ছে আশপাশের বসতবাড়িও।
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রভাবশালী একটি চক্র বিভিন্ন ফসলি জমি থেকে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে পাইপের মাধ্যমে অবাধে বালু উত্তোলন করছে। প্রতিবাদ করতে গেলেই তারা বিভিন্ন ভয়ভীতি ও হুমকি দেয়। প্রশাসনিকভাবে নিষেধ থাকলেও আইন অমান্য করে তারা সর্বত্র এই কাজ করছে। এমনকি নিরীহ মানুষের ফসলি জমি দখল করে বালু উত্তোলন করছে। সাধারণ মানুষের জমি কেনার কথা বলে অল্পটাকায় কিনে নেয়ার চেষ্টা করেন তারা। প্রস্তাবে রাজি না হলে তাদের নানাভাবে হয়রানি ও হুমকি দেওয়া হয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার পুইশুর ইউনিয়নের উত্তর শিতারামপুর এলাকায় ড্রেজার মেশিন মালিক টুটুল ভেন্ডার এবং টুটুল মোল্লা একই নামের দু-জন বেক্তিসহ আরও ৫ জন ড্রেজার মেশিন মালিক বিভিন্ন জায়গায় ফসলি জমিতে গর্ত করে পাইপ নিচে বসিয়ে প্রকাশ্যে বালু উত্তলনের কাজ করছেন এবং বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কৃষক ও জমির মালিকেরা অভিযোগ করে বলেন, এই অঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরে কিছু বালু খেকো ব্যবসায়ী অবৈধভাবে ফসলি জমি থেলে বালু তুলে যাচ্ছে।অবৈধ বালু উত্তোলন করতে নিষেধ করলে বিভিন্ন ভয়ভীতি ও ক্ষমতার প্রভাব দেখায় তারা। এই জমি থেকে বালু তোলার ফলে পার্শ্ববর্তী ফসলি জমিগুলো হুমকির মুখে পড়ছে। তাঁরা আরও বলেন, এই উত্তর শিতারামপুর এলাকায় জলবদ্ধতার কারণে বছরে মাত্র একবার বোরো ফসল করা সম্ভব হয়। আমাদের মতো অনেক নিরীহ মানুষের বোরো ফসলের জমি নষ্ট করে, পাইপ টানিয়ে অসাধু ব্যবসায়ীরা অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে। অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধের বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করেন স্থানীয় জমির মালিক ও কৃষকেরা।
এদিকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের বিষয়টি আওতাধীন রামদিয়া ইউনিয়ন ভূমি সহকারী এস.এম.আনিচুর রহমান জানেন কী না? জানতে চাইলে জানান, অবৈধ বালু উত্তোলনে বিষয়টি তিনি জানেন। কিছুদিন আগে ৪-৫টি ড্রেজার মেশিন বন্ধ করে দিয়েছেন এবং অবৈধ বালু ব্যবসায়ীদের নিষেধ করে আসছেন। পুনরায় আবার একই স্থানে নিষিদ্ধ ড্রেজার মেশিন চলছে কীভাবে প্রশ্নে আনিচুর রহমান বলেন, এ বিষয়ে আমি জানি। আমার কিছু করার নাই। আপনাদের যদি কিছু জানার বা বলার থাকে তাহলে আপনারা উদ্বর্তন কতৃপক্ষ’কে বলেন আর জানান।
এ দিকে উপজেলার রাজপাট,শিলটে-তেতুলিয়া,হাতিয়ারা,সিংগাসহ বিভিন্ন এলাকায় ফসলি জমি নষ্ট করে বালু উত্তোলনের চিত্র পরিলক্ষিত হয়েছে। এসব এলাকার লোকজনের অভিযোগ, বারবার বালু তুলতে নিষেধ করলেও ব্যবসায়ীরা বালু উত্তোলন বন্ধ করেননি।
এ বিষয়ে কাশিয়ানী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজান জান্নাত বলেন, অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধে প্রশাসনের অভিযান অব্যাহত আছে। তারপরেও কেউ বালু উত্তোলনের অভিযোগ করলে গুরুত্বসহকারে দেখা হবে এবং যথাযথভাবে ব্যাবস্থা নেয়া হবে।