ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ ভূখণ্ড গাজা ও লেবাননে ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বর হামলা অব্যাহত আছে। গতকাল শনিবার দখলদার দেশটির হামলায় আরও ৭১ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অনেকে। এর মধ্যে গাজায় হামলায় নিহত হয়েছেন অন্তত ৩৮ ফিলিস্তিনি। আর লেবাননে হামলায় মারা গেছেন ৩৩ জন। খবর আল জাজিরার।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শনিবার গাজা ভূখণ্ডজুড়ে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় অন্তত ৩৮ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে কামাল আদওয়ান হাসপাতাল এবং নুসিরাতের আল-ফারুক মসজিদেও হামলা করেছে দখলদার দেশটি। আহতদের মধ্যে অনেকের অবস্থা গুরুতর। হামলায় বিধ্বস্ত স্থাপনার নিচে এখনো অনেকে আটকা পড়েছেন। তাদের উদ্ধার তৎপরতা চালানো হচ্ছে।
অন্যদিকে ইসরায়েলি হামলায় মধ্য বৈরুতে একটি আটতলা ভবন ধ্বংস হয়েছে। এতে ২০ জন নিহত হয়েছেন। পূর্ব লেবাননে আরেকটি ইসরায়েলি অভিযানে ১৩ জন নিহত হয়েছেন বলে দেশটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।
ইসরায়েলি হামলায় গাজায় এখন পর্যন্ত ৪৪ হাজার ১৭৬ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন এক লাখ চার হাজার ৪৭৩ জন।
এছাড়া ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। মূলত ইসরায়েলি আক্রমণ গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ মনে করছে, গাজা উপত্যকাজুড়ে ধ্বংস হওয়া বাড়ির ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন। মূলত গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব সত্ত্বেও ইসরায়েল অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে তার নৃশংস আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে।
জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর হামলার কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আর খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজার সকলেই এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছেন। এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ৭০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। ইসরায়েল ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে।
অপরদিকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় লেবাননে অন্তত ৩ হাজার ৬৭০ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া আহত হয়েছেন অন্তত ১৫ হাজার ৪১৩ জন।