শরিয়তসম্মত পন্থায় উপার্জিত ধন-সম্পদ ও আহার্য্যকে আমরা হালাল রিজিক বলে জানি। বাস্তব অর্থে রিজিক শুধু অর্থকড়ি কিংবা খাওয়া-দাওয়া নয়; ঈমান-আমল, ইলম ও নেককার স্ত্রী-সন্তানসহ মানুষের সামগ্রিক জীবনের বৈধ সব উপায়-উপকরণই রিজিকের অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ তাআলা সবাইকে রিজিক দান করেন। কোরআন মাজিদে ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয় আল্লাহ হলেন তিনি, যিনি রিজিকদাতা এবং মহাশক্তিধর ও মহাপরাক্রমশালী।’ (সুরা জারিয়াত: ৫৮)
হালাল রিজিক ইবাদত কবুলের শর্ত। হারাম রিজিক ঈমান ও আমল নষ্টের কারণ। তাই মহান আল্লাহ নবী-রাসুলদের হালাল রিজিক গ্রহণের নির্দেশ দিয়ে বলেন, ‘হে রাসুলরা, তোমরা পবিত্র বস্তু থেকে খাদ্য গ্রহণ ও সৎকর্ম করো। তোমরা যা করো সে সম্পর্কে আমি অবগত।’ (সুরা মুমিনুন: ৫১)
কোরআন ও হাদিসে হালাল উপার্জনের গুরুত্ব বর্ণনার পাশাপাশি দোয়ারও শিক্ষা রয়েছে। এ সংক্রান্ত পবিত্র কোরআনে বর্ণিত একটি দোয়াটি হলো— اللهُ لَطِيفٌ بِعِبَادِهِ يَرْزُقُ مَنْ يَشَاءُ،وَهُوَ الْقَوِيُّ الْعَزِيزُ উচ্চারণ: ‘আল্লাহু লাতিফুম বি-ইদিহি ইয়ারজুকু মাই ইয়াশায়ু ওয়া হুয়াল ক্ববিউল আজিজ।’ অর্থ: ‘আল্লাহ নিজ বান্দাদের প্রতি অনুগ্রহপরায়ণ, যাকে ইচ্ছা তিনি রিজিক দেন, তিনি শক্তিশালী, পরাক্রান্ত।’ (সুরা: আশশুরা: ১৯)
হাদিসেও হালাল রিজিক উপার্জনের দোয়া রয়েছে। একটি দোয়া পড়লে হালাল উপার্জন বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি ঋণ পরিশোধের ব্যবস্থাও হয়ে যাবে মর্মে হাদিস রয়েছে। দোয়াটি হলো— اَللّهُمَّ اكْفِنِى بِحَلَالِكَ عَنْ حَرَامِكَ وَاغْنِنِى بِفَضْلِكَ عَمَّنْ سِوَاكَ উচ্চারণ: ‘আল্লাহুমমাকফিনি বিহালালিকা আন হারামিকা ওয়াগনিনী বিফাদ্বলিকা আম্মান সিওয়াকা। অর্থ: ‘হে আল্লাহ! হারামের পরিবর্তে তোমার হালাল রুজি আমার জন্য যথেষ্ট করো। আর তোমাকে ছাড়া আমাকে কারো মুখাপেক্ষী করো না এবং স্বীয় অনুগ্রহ দিয়ে আমাকে স্বচ্ছলতা দান করো।’ হজরত আলী (রা.) এক ব্যক্তিকে এই দোয়া শিক্ষা দিয়ে বলেন, এটি তুমি পাঠ করলে আল্লাহই তোমার ঋণমুক্তির ব্যাপারে দায়িত্ব নেবেন, যদি তোমার ঋণ পর্বতসমানও হয়। (তিরমিজি: ৩৫৬৩; মুসনাদ আহমদ: ১৩২১)
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কোরআন-হাদিসে বর্ণিত উল্লেখিত দোয়াগুলো বেশি বেশি পড়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।