সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের হাতে তুলে দিল জ্যৈষ্ঠের ফল
মাদারীপুর প্রতিনিধি
মাদারীপুরে সুবিধাবঞ্চিত দেড় শতাধিক শিশুদের হাতে হাতে পৌঁছে দিয়েছে জ্যৈষ্ঠের মৌসুমি ফল। শুক্রবার বিকেল ৫টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত জেলার ৬টি স্থানে ঘুরে এ কর্মসূচি পালন করে প্রথম আলো মাদারীপুর বন্ধুসভার সদস্যরা।
বন্ধুসভার সদস্যরা জানায়, চলতি ফল মৌসুমে প্রতিটি ফলের দাম বেশি হওয়ায় সুবিধাবঞ্চিত শিশুরা এই ফল খাওয়া থেকে বঞ্চিত হয়। তাই এসব সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মুখে হাসি ফোটাতে মাদারীপুর বন্ধুসভার বন্ধুদের নিজেস্ব অর্থায়নে কেনা হয় আম, লিচু, পেয়ারা ও কলা। পরে জেলা সদরের দুধখালী ইউনিয়নের ওআইসি পল্লী, মস্তফাপুর, ঘটেকচর, আমগ্রাম ব্রিজ, শকুনি লেকপাড়সহ জেলার ছয়টি স্থানে ঘুরে ঘুরে প্রতিটি সুবিধাবঞ্চিত শিশুর হাতে তুলে দেওয়া হয় তিনটি করে আম, দশটি লিচু, দুটি কলা ও একটি পেয়ারা।
ওআইসি পল্লীতে জ্যৈষ্ঠের ফল হাতে পেয়ে খুশি বাবাহারা ছয় বছরের শিশু সামিয়া বলে, ‘এ বছর আম, লিচু খাই নাই। আম্মায় কামে যায় না, অসুস্থ। ঘর থিকা বাহিরে আহে না। আমি এই ফলগুলা আম্মার কাছে লইয়া দিমু। ঘরে গিয়া আমি আর আম্মায় একসঙ্গে ফল খামু।’
ঘটেকচর এলাকার বেদে পল্লীর ২০টি ঘরে সুবিধাবঞ্চিত অন্তত ৩০টি শিশু আছে। তাদের হাতেও একই ভাবে জ্যৈষ্ঠের ফল পৌঁছে দেয় বন্ধুসভার বন্ধুরা। এই পল্লীতে বসবাস করা জুঁই বেগম বলেন, ‘আমার গরীব মানুষ। সাপ খেলাখুলা দেখিয়ে কোন রকম চলতাছে। দুই ছেলে এক মাইয়া লইয়া খুব কষ্ট হয়। ওদের তিন বেলা ঠিক মত খাওন দিতে পারি না। ফল কিনে দিবো কোথা থিকে। ওগের হাতে আম্মেরা ফল আইনা দিছেন তাতেই আমরা খুশি।’
মাদারীপুর বন্ধুসভার সভাপতি সোহেল রানার নেতৃত্বে এই কর্মসূচিতে অংশ নেয় মাদারীপুর বন্ধুসভার উপদেষ্টা চিকিৎসক অখিল সরকার, মোহসিন খান, প্রথম আলোর মাদারীপুর প্রতিনিধি ও বন্ধুসভার উপদেষ্টা অজয় কুন্ডু, বন্ধুসভার সাধারণ সম্পাদক সুর্বণা হাই হিরা, নারী বিষয়ক সম্পাদক লিজা আক্তার, পাঠচক্র বিষয়ক সম্পাদক পূজা সরকার, তথ্য ও প্রযুক্তি সম্পাদক আল-শাহারিয়াত করিম, সাহিত্য সম্পাদক আজগর হাওলাদার, সমাজ কল্যানসম্পাদক সোহাগ সরদার, কার্যকারী সদস্য হাবিবুর রহমান, মেহেদী হাসান শুভ, আয়শা সিদ্দিকা, আসমা আক্তার, সিমান্ত সরকার, সোনিয়া আক্তার, মহসিন হোসেইন সুজন প্রমুখ।
মাদারীপুর বন্ধুসভার সভাপতি সোহেল রানা বলেন, ‘আমাদের মূল উদ্দেশ্যে ছিল জ্যৈষ্ঠের ফল মৌসুমে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মুখে হাসি ফেটানো। আমরা দেড়শ শতাধিক শিশুর হাতে আম, লিচু, কলা ও পেয়ারা ফল তুলে দিয়েছি। তাদের মুখে হাসি ফুঁটাতে পেরেছি। এটাই আমাদের সবার কাছে আনন্দের। সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের কল্যাণে স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষাসহ আরও কয়েকটি কর্মসূচি হাতে নিয়েছি। পর্যায়ক্রমে কর্মসূচিগুলো পালন করা হবে।’