তবে জেলার একমাত্র কোভিড ডেডিকেটেড ঘোষিত ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় একই সময়ে ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আব্দুল মোমেন।
একই সময়ে আরও দুইজন করোনাক্রান্ত রোগী কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধী অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে বলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আকুল উদ্দিন জানিয়েছেন।
গত ২৪ ঘণ্টায় মৃতদের অধিকাংশই অক্সিজেন সংকটের শিকার বলে অভিযোগ রোগীর স্বজনদের।
শহরের থানাপাড়া এলাকার বাসিন্দা নার্গিস হাসপাতালের মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি আছেন।
তার মামা ঝন্টুর অভিযোগ, শনিবার রাত থেকে তীব্র অক্সিজেন সংকটে ভুগছিলেন নার্গিস, হাসপাতালে সিলিন্ডার না পেয়ে আমি ওর কষ্ট সইতে পারিনি। শেষ পর্যন্ত বাসদ পার্টির অফিস থেকে একটা সিলিন্ডার এনে দিয়েছি।
আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. তাপস কুমার সরকার জানান, নির্ধারিত শয্যার চেয়ে অধিকসংখ্যক রোগীর চাপে অনেক আগেই আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা সেবার একমাত্র অবলম্বন পথ্য হিসেবে প্রয়োজনীয় অক্সিজেন সরবরাহ সক্ষমতা হারিয়েছে অনেক আগেই।
সংকট মোকাবিলায় বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে সংগৃহীত অক্সিজেন দিয়েও কুলিয়ে উঠছে না। আমরা চেষ্টা করছি সর্বোচ্চ সক্ষমতাকে কাজে লাগাতে।
তিনি বর্তমান অক্সিজেন সক্ষমতার চিত্র তুলে ধরে বলেন, হাসপাতালের নিজস্ব ৩৪৮টি, কনসেন্ট্রেট ফরমেশনে ৩২টি, সংসদ সদস্যের নেতৃত্বে ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের প্রদত্ত ১০০টি এবং সেন্ট্রাল অক্সিজেন সাপোর্টে আরও ৩৪ জনের অক্সিজেন সাপোর্ট নিয়ে বর্তমান ভর্তিকৃত ২৭৩ রোগীর সেবা দেয়া হচ্ছে। ভর্তি রোগীদের অধিকাংশেরই অক্সিজেন সাপোর্ট অপরিহার্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।
হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. আব্দুল মোমেন জানান, মৃত্যু হওয়া সব রোগীর ক্ষেত্রেই অক্সিজেন লেভেল কমে যাওয়ার কারণে তাদের মৃত্যু হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, কুষ্টিয়া ২৫০ বেডের করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে বর্তমানে ২৭৩ জন রোগী ভর্তি আছে। এদের মধ্যে ২’শজন করোনা পজিটিভ ও ৭৩ জনের করোনা উপসর্গ রয়েছে।
কুষ্টিয়া সিভিল সার্জন ডা. এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় (শনিবার সকাল ৮ থেকে রবিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত) জেলায় ৬০৯টি নমুনা পরিক্ষায় ১৯৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ৩২ শতাংশ।
রবিবার মৃত্যু সংখ্যা হিসেবে ১৫ জনের তালিকা প্রেরণ করা হয়েছে খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে। এই পর্যন্ত কুষ্টিয়া জেলায় সর্বমোট মৃত্যু সংখ্যা দাঁড়ালো ২৪৫জনে।
বৃহস্পতিবার থেকে সারাদেশে শুরু হওয়া লকডাউনের আজ ৪র্থ দিন। এই লকডাউন বাস্তবায়নে পুলিশ ব্যাপক তৎপরতা চালাচ্ছে।
শনিবার দিনব্যপী সরকারি বিধিনিষেধ অমান্যকারী ৪৪ জনের কাছ থেকে ৬৩ হাজার ৪শত টাকা জরিমানা আদায় করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
সেনা সদস্যদের টহল দিতেও দেখা গেছে। আগের দিনগুলোর তুলনায় শহরে মানুষ কম বের হয়েছেন।