বিধান মজুমদার, বিশেষ প্রতিনিধি।।
পেডে ভাত না থাকলে মাস্ক দিয়া করমু কি? পেটের ভাত হইলো আসল। যদি মাস্ক পইড়া পথে বইয়া থাকি আপনে ২ টাকা দিবেন আমারে? না এই সরকার দিবে? কেউ জিগাইবো না। আল্লায় যদি আমাগো বাচায় তাইলে বাচমু, আর মারলে মইরা যামু। আমাগো পরিবহন শ্রমিকের লিজ্ঞা কিচ্ছু নাই। এইডা তো লকডাউন না, শেষ ডাউন আমাগো লিজ্ঞা। মাদারীপুর সদর উপজেলার মস্তফাপুর ঢাকা বরিশাল মহাসড়কে রাখা একটি ট্রাক ড্রাইভার ক্ষোভে আক্ষেপে এমন টাই বলছিলেন পরিবহন শ্রমিক শামসুদ্দিন মিয়া (৫৫)।
করোনভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে এক সপ্তাহের ‘কঠোর লকডাউন’ শুরু হচ্ছে বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) থেকে। ‘লকডাউন’ চলাকালে প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হলেই শাস্তির মুখমুখী হতে হবে। বিধিনিষেধ অমান্য করলে ছয়মাসের জেল ও জরিমানাও হতে পারে। বন্ধ থাকবে সব সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি অফিস।
৭ দিনের এমন সর্বাত্বক লকডাউনের ফলে বাস ট্রাক বন্ধ হয়ে যাওয়াতে অনেকটাই বিপাকে পড়ে গেছেন পরিবহন শ্রমিকেরা। গাড়ির চাকা না ঘুরলে যে, পরিবারের মুখেও খাবার জুটবে না। কিন্তু করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে কঠোর ভূমিকা পালন করছেন সরকার। যার ফলে শ্রমিকেরা খুব কষ্টেই দিনযাপন করছেন।
মাদারীপুর পুরান বাসস্ট্যান্ড ও মস্তফাপুর এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সারি সারি দাঁড়িয়ে আছে অসংখ্য আন্তঃজেলা বাস, মিনিবাস। বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর থেকেই এসব পরিবহনের শ্রমিকরা ধার দেনা করে পরিবার ও নিজেদের মুখে ২ বেলা খাবার গুজে দিচ্ছেন। সারাবছর চাঁদা দিয়েও এই পরিস্থিতিতে বাস-ট্রাক মালিক শ্রমিক ফেডারেশনের কাছ থেকে পাচ্ছে না কোন রকম আর্থিক সহযোগিতা এমনটা জানালেন কয়েকজন পরিবহন শ্রমিকরা।
মাদারীপুর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদকের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তাকে না পেয়ে। প্রচার সম্পাদক আব্বাস মোল্লার কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, গতবারের লকডাউনে আমরা পাঁচ হাজার শ্রমিকের মাঝে ত্রান সামগ্রী দিয়েছি। এইবার এখনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় নি। অতিদ্রুত আমরা সিদ্ধান্ত মোতাবেক শ্রমিকদের জন্য সাহায্যের ব্যবস্থা নিবো।