
আশরাফুর রহমান।।
চুরির অপবাদ দিয়ে মাদারীপুরের কালকিনিতে মো. রাজু মোল্লা -(১৮) নামে এক অসহায় ভ্যান চালককে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন চালিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে প্রতিপক্ষের ও স্থানীয় মাতুব্বরদের বিরুদ্ধে। উপজেলার বাঁশগাড়ী ইউনিয়নের জমাদ্দার কান্দি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এদিকে এই ঘটনায় ওই যুবক অসুস্থ হয়ে পরলে তাকে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অপরদিকে রাজু মোল্লার মা ইয়াসমিন বেগম বাদী হয়ে ৫ জনকে আসামী করে আদালতে একটি হত্যা চেষ্টা মামলা দায়ের করেন। বৃহস্পতিবার (১৩নভেম্বর) সকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ভূক্তভোগী পরিবার।
মামলা ও ভূক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, উপজেলার বাঁশগাড়ী ইউনিয়নের জমাদ্দার কান্দি গ্রামের সজল মুন্সীর বসতঘরে তালাবদ্ধ অবস্থায় কোন প্রকার সিঁধ এবং জানালা না কাটা থাকলেও সম্প্রতি ওই ঘরে চুরি হয়েছে বলে প্রচার করেন সজল মুন্সীর পরিবার। পরে ফকিরের কাছ থেকে রুটি পড়া এনে স্থানীয় মাতুব্বরদের সহযোগীতায় অসহায় ভ্যান চালক রাজু মোল্লাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন চালিয়ে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে ওই রুটি খাওয়ানো হয়। এতে করে রাজু মোল্লা অসুস্থ হয়ে পরলে তাকে উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। এই ঘটনায় রাজু মোল্লার মা ইয়াসমিন বেগম বাদী হয়ে ৫ জনকে আসামী করে আদালতে একটি হত্যা চেষ্টা মামলা দায়ের করেন।
মামলার বাদী ইয়াসমিন বেগম কান্না জরিত কণ্ঠে বলেন, আমার ভ্যান চালক ছেলে রাজুকে চুরির অপবাদ দিয়ে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন চালিয়ে স্থানীয় মাতুব্বরদের সহযোগীতায় রুটি পড়া খাওয়ায় স্বজল মুন্সীর লোকজনে। পরে আমি ওই মাতুব্বরদের চাঁপের মুখে আমার নিজের ব্যবহৃত একটি স্বর্ণের চেইন ও নগদ ১০ হাজার টাকা দিয়ে আমার ছেলেকে তাদের কাছ থেকে অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করি। এই ঘটনায় আমি তারেক মুন্সী, মিথিলা আক্তার ও মুনছুর মুন্সীসহ ৫ জনকে আসামী করে আদালতে একটি হত্যা চেষ্টা মামলা করি। আমি তাদের বিচার দাবী করছি।
জলিল, জব্বার ও কাওছারসহ বেশ কয়েকজন স্থানীয় সচেতন ব্যক্তি বলেন, রুটি পড়া দিয়ে চোর ধরতে পারলে প্রশাসনের কোন প্রয়োজন ছিলো না। আসলে অপরাধীদের বিচার হওয়া উচিত।
সজল মুন্সীর মা সাহানাজ বেগম বলেন, আমার ছেলে সজল মুন্সীর ঘরের কোন প্রকার সিঁধ এবং জানালা কাটা নেই। কিন্তু আমার পুত্র বধু বলছে সে বাড়ি না থাকায় তার ঘরে চুরি হয়েছে। তাই আমরা রাজু মোল্লাকে রুটি পড়া খাওয়াইছি। তাকে মারধোর করা হয়নি।
স্থানীয় মাতুব্বর ও শিক্ষক মহসিন বলেন, আমার কাছে স্বর্ণের চেইন ও টাকা জমা আছে।
এব্যাপারে কালকিনি থানার ওসি কে এম সোহল রানা বলেন, একটি চুরির ঘটনায় রাজু নামের একটি ছেলেকে যার বাড়িতে চুরি হয়েছে তারাসহ এলাকার লোকজন মিলে রুটি পড়া খাওয়ায়। এতে রাজু অসুস্থ হয়ে পরলে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করেন। এবং এ বিষয়ে রাজুর মা আদালতে একটি হত্যা চেষ্টা মামলা করেন। তবে মামলার কপি পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
