

টঙ্গীবাড়ী (মু্ন্সিগঞ্জ) সংবাদদাতা।।
মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ী থানা সংলগ্ন টঙ্গীবাড়ী ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চিকিৎসকদের ভুল চিকিৎসায় একাধিক রোগী মারা গেলেও এখনো কোনো পদক্ষেপ নেয়নি প্রশাসন। এঘটনায় হতাশা প্রকাশ করেছে স্থানীয় জনগণ। ভূল চিকিৎসা আর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলায় ছোট বড় দূর্ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটে এই হাসপাতালে। সম্প্রতি গত (৮সেপ্টেম্বর ২০২৫ইং) সোমবার সকাল ৯ টার দিকে উপজেলার আব্দুল্লাহপুর ইউনিয়নের পাইকপাড়া গ্রামের আরিফ শেখ এর গর্ভবতী স্ত্রী ২ সন্তানের জননী রাবেয়া কে নিয়মিত চেকআপ করাতে নিয়ে আসা হয় টঙ্গীবাড়ী ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক জেসমিন জাহান অপারেশনের পরামর্শ দেন এবং দুপুর আড়াইটায় অস্ত্রোপচারের সময় নির্ধারণ করেন। পরে নির্ধারিত সময়ে রোগীকে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হলে তাকে একটি ইনজেকশন দেওয়া হয়। এরপর রাবেয়ার শারীরিক অবস্থা দ্রুত অবনতির দিকে গেলে ক্লিনিক কতৃপক্ষ রাবেয়া কে ডামেকে রেফার্ড করেন। সেখানে আল্ট্রাসনোগ্রাম করে দেখা যায় রাবেয়ার গর্ভের সন্তান মৃত।
পরে রাতে অপারেশন করে মৃত বাচ্চার ডেলিভারি করা হয় এবং রুগীর অবস্থা আশংকা জনক হওয়ায় রুগীকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হলে বৃহস্পতিবার ভোরে রাবেয়ার মৃত্যু হয়।
নিহতের বোন ফাতেমা অভিযোগ করে বলেন, “ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের অবহেলা ও ডাক্তারদের ভুল চিকিৎসার কারণেই আমার বোন ও তার সন্তান মারা গেছে। আমরা এ ঘটনার সঠিক বিচার চাই।” হাসপাতালের নার্স চম্পা খাতুন বলেন, আমি কিলব্যাক ইনজেকশন পুশ করার সাথে সাথেই রুগীর অবস্থা খারাপ হয়। পরে তাকে ঢাকা রেফার্ড করা হয়।
চিকিৎসক ডা. জেসমিন জাহান এ বিষয়ে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানিয়ে ডা. কামরুল হাসানের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন।
ডা. কামরুল হাসান বলেন, রোগীটি আমাদের ক্লিনিকে চিকিৎসা নিতে এসেছিলেন। তাকে সিজার করার জন্য ওয়েটিং রুমে রাখা হয়েছিল। কিন্তু হঠাৎ করেই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তখন তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর পরামর্শ দেওয়া হয়। এখানে আমরা তেমন কোনো চিকিৎসাই দিইনি।
এদিকে এর আগেও এই ক্লিনিকে সিজার করতে এসে গর্ভের সন্তান সহ চিকিৎসকদের ভুল চিকিৎসায় প্রান হারায় সোনারং গ্রামের পিন্টুর স্ত্রী ২ সন্তানের জননী আখি আক্তার। সেই ঘটনার পরপরই ক্লিনিক বন্ধ করে পালিয়ে যান কর্তৃপক্ষ ও চিকিৎসকরা। পরে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিয়ে পুনরায় চালু করা হয় এই ক্লিনিক।
এব্যাপারে মুন্সীগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ এ টি এম ওবায়দুল্লাহ বলেন, অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।