Tuesday, July 1, 2025
HomeScrollingবিএনপি এখনো ফাইনাল খেলায় নামেনি: গয়েশ্বর

বিএনপি এখনো ফাইনাল খেলায় নামেনি: গয়েশ্বর

অনলাইন ডেস্ক।

চলমান গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনে বিএনপি গণতান্ত্রিক বিশ্বের সহযোগিতা চায় উল্লেখ করে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, ‘বিএনপি কর্মীরা এখনো ফাইনাল খেলায় নামেনি; রাষ্ট্রীয় প্রশাসনে যারা আছেন, জনগণের পক্ষে থাকেন। আমাদের সাথে মিছিল করার দরকার নেই, তবে লুটেরা খুনি এই সরকারকে টিকিয়ে রাখার জন্য অতি উৎসাহ প্রকাশ করলে এর জবাব দিতে জনগণ বাধ্য হবে।’

বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) ঢাকা মহানগর বিএনপির মিরপুর জোনের উদ্যোগে জ্বালানি তেল, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যের ঊর্ধ্বগতি এবং পুলিশের গুলিতে ভোলায় ছাত্রদল নেতা নুরে আলম, স্বেচ্ছাসেবক দলের আব্দুর রহিম ও নারায়ণগঞ্জে যুবদল নেতা শাওন হত্যার প্রতিবাদে এক সমাবেশে যোগ দিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। সমাবেশে খালেদা জিয়া, তারেক রহমানের ছবি সম্বলিত প্ল্যাকার্ড, মিছিল নিয়ে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী অংশ নেন।

গয়েশ্বর বলেন, ‘গণতন্ত্রের জন্য যারা রক্ত দিয়েছেন, তাদের কারো রক্ত বৃথা যেতে পারে না। অতীতে কারো রক্ত বৃথা যায়নি। রক্ত দিয়ে স্বাধীনতা কিনেছি, গণতন্ত্র এনেছি; রক্ত দিয়ে আমরা স্বাধীনতা রক্ষা করব এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করব।’

তিনি বলেন, দেশি-বিদেশী আর প্রতিবেশী এবং আপনাদের আশেপাশে কিছু সংস্থার লোকরা ঝুঁড়ি নিয়ে নেতাদের বাসায় যায়, আর দুই শ আসন শেখ হাসিনার জন্য…। আসন কী কারো বাপের? যে দেশের লোকেরা এটা করেন, আমরা কি তাদের দেশে বাস করি? স্বাধীন বাংলাদেশে কূটনৈতিক শিষ্টাচার মেনে চলবেন। অভ্যন্তরীণ ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করবেন না।

বিএনপির এই নেতা বলেন, গণতান্ত্রিক বিশ্বের কাছে আহ্বান থাকবে, জনগণের গণতান্ত্রিক এই লড়াইয়ে তাদের পাশে থাকুন। আপনাদের সহযোগিতা চাই। গণতান্ত্রিক বিশ্বের সদস্য হিসেবে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও ভোটাধিকার প্রশ্নে সহযোগিতা চাই। আমাদেরকে কালই ক্ষমতায় এনে দিতে হবে না। জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে তারা কাকে ক্ষমতায় বসাবে।

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের আগের একটি প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, এরশাদ সাহেব আপনি নির্বাচনে অংশ না নিলে বিএনপিই ক্ষমতায় আসবে এ কথা বলেছিল সুজাতা সিং। কিন্তু সম্প্রতি, ভারতের বিদায়ী হাইকমিশনার বললেন, তারা কোনো ব্যক্তি বা দলের পক্ষে নয়। বহুদিন পরে বলল। এ কথাটার মানে বুঝতে হবে। তারা এই বোঝাবহন করে আর কলঙ্কিত হতে চায় না। কারণ, তারাও একটি গণতান্ত্রিক দেশ। তাদেরও তো অন্যান্য দেশের সাথে চলতে হয়। জবাব দিতে হয়। সুতরাং শেখ হাসিনার সব খেলা শেষ। সাহায্য আনতে গিয়ে সাহায্য পায়নি, নিশ্চিত থাকেন।

গয়েশ্বর রায় বলেন, এখন দিনের ভোট রাতে কাটারও লোক নেই। সে কারণে ভোট দিনেই হবে। শেখ হাসিনাকে ছাড়াই হবে অর্থাৎ তার পদত্যাগ নিশ্চিত করতেই হবে। আপনারা যেভাবে জেগে উঠেছেন, সামনে এগুবার পথটা অব্যাহত রাখতে হবে। যদি চিকন লাঠিতে না পোশায়, এরপরে প্রত্যেকে হাতে মোটা মোটা বাঁশের লাঠি নিয়ে রাস্তায় নামবেন। কোনো ছাড় দেওয়া যাবে না। আমার ভাই মরেছে, মরতে হয় আমিও মরব। তবে, রক্তের ঋণ পরিশোধ করব। বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করব।

দেশে শতকরা পাঁচ ভাগ পুলিশ খারাপ উল্লেখ করে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, পুলিশ সদস্যদের বলব, আপনাদের ভুল বোঝানো হয়। বিএনপি ক্ষমতায় আসলে আপনাদের চাকরি থাকবে না। এটা অত্যন্ত ভুল ধারণা। আমরা জানি কোনটা ইচ্ছায় কোনটা অনিচ্ছায়। এই কাণ্ডজ্ঞান বিএনপির নেতাদের আছে। সবার তালিকা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাওয়া যাবে। আমাদের শত্রু ভাববেন না, আপনারা জনগণের পক্ষে আসেন। জনগণ আপনাদের সম্মান করবে। মনে করবেন না, আপনাদের পোশাককে ভয় করে, তারা আপনাদের পোশাককে সম্মান করে।

তিনি বলেন, যে খালেদা জিয়া ৯ বছর গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করে গণতন্ত্র এনে দিয়েছেন। তাকে বিনা কারণে জেলখানায় আটক করা হয়। যে তারেক রহমানের কোনো মামলা প্রমাণিত হয় না, তারপরও আদালত শেখ হাসিনাকে খুশি করতে তাকে দণ্ড দিয়ে রায় দিয়েছে। তিনি এখন দেশের বাইরে থেকে চলমান আন্দোলন সংগ্রামের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তাকে সহযোগিতা করতে আপনারা আন্তরিকতা ও সফলতার স্বার্থে ধীরে ধীরে এগিয়ে যান। ওরা পরাজিত হবে, পালাতে চাইবে। কিন্তু পালাতে দেব না। বিজয় আমাদের হবেই।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, বক্তব্যের পর্ব অনেক হয়েছে, বক্তব্যে সরকার যাবে না। আর বক্তব্যে দেশ স্বাধীন হয় নাই। দেশ স্বাধীন হয়েছে যুদ্ধে, সেই যুদ্ধের ঘোষণা দিয়েছিলেন জিয়াউর রহমান। সেই যুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছিলন জিয়াউর রহমান এ কথা সঠিক? উপস্থিত নেতারা সমস্বরে বলেন, ঠিক।

তিনি আরো বলেন, এই সরকার কোনো কিছুর দাম কমাবে না। প্রথম দায়িত্ব এই সরকারকে নামানো। এরপর অবাধ সুষ্ঠু ভোটের মাধ্যমে জনগণ যাদের ক্ষমতায় বসাবে তারা নিত্যপ্রয়োজনীয় সব কিছু দাম কমাবে, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করবে। এই আওয়ামী লীগ সরকারের কাছে কোনো দাবি করে লাভ নেই। তাই, জনগণের দাবি এক, শেখ হাসিনার পদত্যাগ। সমাবেশে আসার সময় আপনাদের হাতে ছোট ছোট লাঠির মাথায় পতাকা ছিল। পুলিশ তা রেখে দিতে চেয়েছিল। আপনারা দেননি। এরপর মোটা মোটা বাঁশির লাঠি নিয়ে রাস্তায় নামতে হবে। প্রত্যেকের হাতে লাঠি থাকবে। কাউকে আঘাত করার জন্য নয়; আমাদের চলমান আন্দোলনে নেতাকর্মীদের আত্মরক্ষার জন্য। আঘাত আসলে তো পাল্টা আঘাত করতেই হবে। সেখানে তো ছাড় দেওয়ার কোনো উপায় নেই।

এ সময় ঢাকা উত্তর সিটির দুই নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী তাবিথ আউয়ালের ওপর বনানীর মোমবাতি প্রজ্বলন কর্মসূচিতে হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান গয়েশ্বর।

ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আমিনুল হকের পরিচালনায় আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপি নেতা আবদুস সালাম, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, তাবিথ আউয়াল, বজলুল বাছিত আঞ্জু, নাজিম উদ্দিন আলম, আনোয়ারুজ্জামান আনোয়ার, রফিকুল আলম মজনু, মামুন হাসান, শফিকুল ইসলাম মিল্টন, রাজীব আহসন, আবদুর রাজ্জাক প্রমুখ।

 

 

RELATED ARTICLES
Continue to the category

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments