গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে চরভাটপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে অর্পিতা বসু তিথি (১৫) নামের এক স্কুল শিক্ষার্থীর বিষ পানে আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযোগ শিক্ষকদের।
রবিবার (১০’আগষ্ট) সকাল ৯ টা ১৫ মি. দিকে উপজেলার চরভাটপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে ৯’ম শ্রেণি কক্ষে ঘটনাটি ঘটে। মুমূর্ষু অবস্থায় সহকারী শিক্ষক মো. আসাদুজ্জামান ও অর্পিতা বসু তিথির দুই বান্ধবী আসিয়া ও সুরাইয়া মিলে চিকিৎসার জন্য কাশিয়ানী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তৎক্ষনাৎ গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন। গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মৃত অর্পিতা বসু তিথির শিক্ষক মো. আসাদুজ্জামান জানান, সকালে স্কুলে আসি তখন ৯’ম শ্রেণির দুই শিক্ষার্থী আসিয়া এবং সুরাইয়া এসে বলেন স্যার অর্পিতা বসু তিথি কেমন জানি করছে এবং তার মুখ থেকে গন্ধ বেরোচ্ছে। তখনই অর্পিতা বসু তিথিকে নিচে আনি এবং বাসায় খবর পাঠাই। চিকিৎসা জন্য কাশিয়ানী হাসপাতালে নিয়ে জাই। কাশিয়ানী হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক অর্পিতা বসু তিথি’কে গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন। তখন অর্পিতা বসু তিথি বাবা গনেস পদ বসু গোপালগঞ্জ হাসপাতালে নিয়ে যায়।
চরভাটপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) তাহরিমা খানম জানান, অর্পিতা বসু তিথি কাশিয়ানী উপজেলার দক্ষিণ চরভাটপাড়া গ্রামের গনেস পদ বসু মেয়ে। চরভাটপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে ৯’ম শ্রেণির ছাত্রী। তার অসুস্থের খবর পেয়েই সহকারী শিক্ষক আসাদুজ্জামান স্যার আমাকে জানান। অর্পিতা বসু তিথি’কে দ্রুত চিকিৎসা জন্য নিয়ে যেতে বলা হয়।
তিনি আরও জানান, অর্পিতা বসু তিথির সঙ্গে থাকা বান্ধবী সুরাইয়া এবং আসিয়া তথ্য মতে অর্পিতা বসু তিথি স্কুল এসে কিছুই খায়নি। ধারণা করা হচ্ছে বাসা থেকেই কীছু খেয়ে এসে স্কুলে অসুস্থ হয়ে পড়ে।
বান্ধবী সুরাইয়া ও আসিয়া বলেন, অর্পিতা অন্যান্য দিনের থেকে একটু অস্বাভাবিক ছিলো। স্কুলে এসেই ক্ষমা চাচ্ছিল এবং বার বার বলছিল আমি আর হয়তো থাকবনা এই বলেই ঠলে পড়ছিল। তখন কামরুজ্জামান স্যারকে জানাই এবং অর্পিতাকে কাশিয়ানী হাসপাতালে নিয়ে জাই।
মৃত অর্পিতা বসু তিথি’র ফুফু জানায়, অর্পিতা জেদি প্রকৃতির এবং বাবা-মায়ের খুব আদরের ছিল। কোন বিষয়ে কাউকে কীছু বলতোনা। অর্পিতা মোবাইল দেখাছিল তখন ছোট ভাই মোবাইল ফোন চাইলে অর্পিতা না দেয়ায় মা এসে ফোন নিয়ে ছোট ভাইকে দিয়ে দেয়। এ ঘটনায় অর্পিতা এবং মায়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়, মা গাল-মন্দ করে। সকালে অর্পিতা রান্না ঘর থেকে খাবার খেয়ে ৮ টা ৩০ মি. দিকে স্কুলে চলে যায়। ৯টা ৪০মি. দিকে খবর পাই অর্পিতা বিষ খেয়েছে। কাশিয়ানী হাসপাতাল থেকে গোপালগঞ্জ হাসপাতালে নিয়ে গেলে অর্পিতার মৃত্যু হয়।
কাশিয়ানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল হোসেন বলেন, খবর পাওয়ার পরপরই পুলিশ ঘটনা স্থল চরভাটপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে পৌঁছেছে। তদন্ত চলছে এবং প্রয়োজনীয় আইনগত কার্যক্রম চলমান রয়েছে।