যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরে সোমবার (২৯ জুলাই) এক বন্দুক হামলায় চারজন নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে একজন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত পুলিশ কর্মকর্তা রয়েছেন। তিনি নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগে কর্মরত ছিলেন।
এ ঘটনায় আরও একজন গুরুতর আহত হয়েছেন। পুলিশ জানায়, বন্দুকধারী হামলাকারী আত্মহত্যা করেছেন।
শহরের একটি অফিস ভবনে ঘটনাটি ঘটেছে। সেখানে স্থানীয় সময় সোমবার হামলার সময় বন্দুকধারী প্রথমে পুলিশ কর্মকর্তার ওপর গুলি চালান, এরপর এক নারীকে গুলি করেন। পরে ওই হামলাকারী ভবনের বিভিন্ন জায়গায় এলোপাথাড়ি গুলি চালান।
নিহত বাংলাদেশি পুলিশ কর্মকর্তার নাম দিদারুল ইসলাম (৩৬)। তিনি নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগে তিন বছর ছয় মাস কর্মরত ছিলেন। দিদারুল ইসলাম সম্প্রতি ছুটিতে ছিলেন। তার স্ত্রী সন্তানসম্ভবা এবং তার দুটি ছোট সন্তান রয়েছে।
নিউইয়র্ক পুলিশ কমিশনার জেসিকা টিশ হামলায় নিহত দিদারুল ইসলামকে একজন বীর পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে অভিহিত করেছেন।
বন্দুকধারী শেন তামুরা, লাস ভেগাসের বাসিন্দা, তার মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা ছিল। তবে হামলার কারণ এখনও জানা যায়নি।
এ ঘটনায় আরও একজন গুরুতর আহত হয়েছেন এবং তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। নিউইয়র্ক সিটির মেয়র এরিক অ্যাডামস বলেছেন, “এটি একটি ভয়াবহ ঘটনা, যেখানে পাঁচজন নিরপরাধ মানুষকে গুলি করা হয়েছে।”
নিরাপত্তা ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে, বন্দুকধারী একটি বিএমডব্লিউ গাড়ি থেকে এম৪ রাইফেল নিয়ে ভবনের দিকে এগিয়ে যান এবং সেখানে গুলি চালান। বন্দুকধারী পরে ভবনের ৩৩ তলায় চলে যান এবং এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা করেন।
পুলিশ জানায়, হামলার পর বন্দুকধারীর গাড়ি থেকে একটি রাইফেল কেস, রিভলভার, গুলি ও ম্যাগাজিন উদ্ধার করা হয়েছে।
এ ঘটনার পর নিউইয়র্ক ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান। ওই অফিস ভবনে শীর্ষ আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং ন্যাশনাল ফুটবল লিগের (এনএফএল) অফিস রয়েছে।
এ সময় অফিস ভবনের ভেতর বেশ কিছু মানুষ আতঙ্কিত হয়ে আশ্রয় নেন। একজন সাক্ষাৎকারে বলেন, গুলির শব্দ শুনে আমরা একটি কনফারেন্স রুমে আশ্রয় নিয়ে দরজা আটকে দিয়েছিলাম। সবাই খুব ভয় পেয়েছিলাম।
এদিকে, স্থানীয় টিভি চ্যানেলের ফুটেজে দেখা গেছে, ভবন থেকে মানুষ হাত উপরে তুলে বেরিয়ে আসছে। ভবনটিতে নিউইয়র্ক পুলিশের দুটি বাহিনী অতিরিক্ত নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিল। এই ঘটনায় জরুরি ব্যবস্থাপনা বিভাগ জানায়, এলাকাটিতে যানজট ও রাস্তা বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে গণপরিবহন বিঘ্নিত হয়েছে।