রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন কলেজের ক্যাম্পাসে বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৭ জনে। নিহতদের মধ্যে ২৫ জনই শিশু। এর মধ্যে ২০ জনের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২২ জুলাই) সকালে বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান।
তিনি জানান, দুর্ঘটনায় আহত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আরও ৭৮ জন। তাদের মধ্যে ৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
ডা. সায়েদুর রহমান বলেন, এখন পর্যন্ত ২০ জনের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আমরা অব্যাহতভাবে চিকিৎসাসেবা চালিয়ে যাচ্ছি। তবে কিছু রোগীর অবস্থা এখনও সংকটাপন্ন।
তিনি জানান, দুর্ঘটনার শিকারদের মধ্যে অনেক শিশু রয়েছে, যাদের বয়স ১২ বছরের নিচে। তাদের বেশির ভাগেরই শরীরের বড় একটি অংশ দগ্ধ হয়েছে। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি তাদের বাঁচিয়ে রাখার।
জানা গেছে, শিশুদের বাইরে নিহত দুইজনের একজন হলেন বিমানটির পাইলট ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির আহমেদ সাগর। আরেকজন হলেন ওই কলেজের শিক্ষক মাহরিন চৌধুরী (৪২)। যিনি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অন্তত ২০ জন শিশু শিক্ষার্থীকে বাঁচিয়েছিলেন।
সোমবার (২১ জুলাই) দুপুর ১টা ৬ মিনিটে বিমান বাহিনীর ‘এফ-৭ বিজিআই’ মডেলের একটি বিমান উড্ডয়নের কিছুক্ষণের মধ্যেই উত্তরার মাইলস্টোন কলেজের একটি ভবনে আছড়ে পড়ে। প্রচণ্ড শব্দ আর আগুনের গোলায় পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ক্লাস চলাকালীন দুর্ঘটনা ঘটায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে দেখা দেয় ব্যাপক বিভ্রান্তি ও আতঙ্ক।
দুর্ঘটনার সময় কলেজে প্রথম থেকে সপ্তম শ্রেণির ক্লাস চলছিল। হঠাৎ বিকট শব্দ ও আগুনে শিক্ষার্থীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। কেউ কান্নায় ভেঙে পড়ে, কেউ শ্রেণিকক্ষ ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে আসে।
ভয়াবহ এই দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২৭ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আহত হয়েছেন শতাধিক। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।