করোনা মহামারি পরিস্থিতিতে গতবছরের মতো এবারও স্বাস্থ্যবিধি মেনে জাতীয় ঈদগাহের বদলে কোরবানির ঈদের প্রধান জামাত হবে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে।
বুধবার সকাল ৭টায় বায়তুল মোকাররমে প্রধান জামাতের পর আরও চারটি জামাতের ব্যবস্থা থাকছে এ মসজিদে।
জাতীয় মসজিদে প্রথম জামাতে ইমামতি করবেন সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ মুফতি মাওলানা মিজানুর রহমান। এরপর সকাল ৮টা, সকাল ৯টা, ১০টা এবং বেলা পৌনে ১১টায় আরও চারটি জামাত হবে।
মহামারির কারণে কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায়ও দেশের সর্ববৃহৎ ঈদ জামাত হচ্ছে না।
করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে বিবেচনায় ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জারি করা স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলতে সবাইকে অনুরোধ করেছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন।
বায়তুল মোকাররমের মতো ঢাকার অন্যান্য মসজিদেও এক বা একাধিক ঈদ জামাতের ব্যবস্থা থাকছে।
বিভাগীয় শহরগুলোর ঈদ জামাত:
সিলেট
মহামারির কারণে এবারও সিলেটের শাহী ঈদগাহসহ শহরের কোনো ঈদগাহে ঈদ জামাত হবে না। সকাল ৮টায় প্রধান জামাত হবে হজরত শাহজালাল জামে মসজিদে।
এ মসজিদের খতিব আসজাদ আহমদ বলেন, মসজিদের ভেতরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে জামাতের আয়োজন করা হচ্ছে। মসজিদের বাইরে কেউ নামাজে অংশ নিতে পারবেন না।
রবিবার সন্ধ্যায় নগর ভবনে শাহী ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির সঙ্গে এক বৈঠকে সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, শহরের ছোট-বড় সব মসজিদে স্বাস্থ্যবিধি মেনে একাধিক জামাত আয়োজন করা যাবে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে।
ঈদের জামাত ও কোরবানির আনুষ্ঠানিকতায় সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে অনুরোধ জানান মেয়র।
সিলেটের ডিসি এম কাজী এমদাদুল ইসলাম বলেন, জেলায় পাঁচ হাজার ২০৩টি জামে মসজিদ রয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে মসজিদগুলোতে ঈদের জামাত আয়োজন করতে বলা হয়েছে।
ময়মনসিংহ
ময়মনসিংহে ঈদের প্রধান জামাত হবে আঞ্জুমান ঈদগাহ মসজিদে। সেখানে এবার তিনটি জামাত হবে।
ময়মনসিংহের বিভাগীয় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াদুদ জানান, প্রথম জামাত হবে সকাল ৮টায়। এরপর সকাল পৌনে ৯টায় দ্বিতীয় জামাত এবং সাড়ে ৯টায় তৃতীয় জামাত হবে। শহরের বড় মসজিদে সকাল সোয়া ৮টায় একমাত্র ঈদ জামাতটি হবে।
তাছাড়া বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে সকাল সাড়ে ৮ টায়, আকুয়া মোড়ল মসজিদে সকাল সাড়ে ৭টা ও ৮টায় ঈদের জামাত হবে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য সবাইকে বলা হয়েছে। প্রত্যেক মসজিদে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা থাকবে। সবাইকে জায়নামাজ সঙ্গে নিয়ে আসতে হবে।
রাজশাহী
রাজশাহীতে এবার কোরবানির ঈদের প্রধান জামাত হবে হযরত শাহ মখদুম কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে। তবে আবহাওয়া প্রতিকূল হলে ঈদগাহের বদলে শাহ মখদুম দরগা জামে মসজিদে প্রধান জামাত হবে বলে জানিয়েছেন জামিয়া ইসলামীয়া শাহ মখদুম (র.) মাদরাসার অধ্যক্ষ মোহাম্মদ শাহাদাত আলী।
তিনি বলেন, সকাল সাড়ে ৭টায় প্রথম এবং সকাল ৮টায় দ্বিতীয় জামাত হবে ঈদগাহে। সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে, ওজু করে, মুখে মাস্ক পরে এবং সঙ্গে জায়নামাজ নিয়ে আসতে হবে।
সকাল ৮টায় শহরের সাহেববাজার বড় রাস্তায়, টিকাপাড়া মোহাম্মপুর জামে মসজিদ কমপ্লেক্সে সকাল ৭টা ও ৮টায়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে সকাল ৮টায় এবং রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় জামে মসজিদে সকাল ৭টায় জামাত হবে।
ডিসি মো. আবদুল জলিল বলেন, জেলার বেশির ভাগ এলাকায় ঈদগাহে জামাত হবে না। মহামারী পরিস্থিতির কারণে নামাজ পড়তে হবে এলাকার মসজিদে। নামাজ পড়তে আসা সাবাইকে মানতে হবে সরকার ঘোষিত সব স্বাস্থ্যবিধি। এবার সংশ্লিষ্ট মসজিদ কমিটিই নির্ধারণ করে দিচ্ছে ঈদের নামাজের সময়সূচি। মহামারীর কারণে জেলা প্রশাসন এবারও সময়সূচি নির্ধারণ করেনি।
রাজশাহী মহানগর পুলিশ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, সব ঈদগাহে জীবাণুনাশক স্প্রে স্যানিটাইজার রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। কাতারে দাঁড়ানোর সময় দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। কোলাকুলি ও হাত মেলানো পরিহার করতে হবে। জায়নামাজ ছাড়া কোনো ব্যাগ ও ভারী দ্রব্যাদি বহন নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
রংপুর
রংপুরের এবার কোরবানির ঈদের প্রধান জামাত হবে সকাল ৮টায় জেলা মডেল মসজিদে।
বিভাগীয় ইসলামী ফাউন্ডেশনের পরিচালক মো. নূরুল ইসলাম বলেন, একই সময় কেরামতিয়া মসজিদে হবে আরেকটি জামাত। এছাড়া জেলার পাঁচ হাজার ৯০টি মসজিদে ঈদের নামাজের সময়সূচি নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে।
সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে অনুরোধ করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, নামাজের আগে মসজিদ জীবাণুনাশক দিয়ে পরিস্কার করতে বলা হয়েছে। মসজিদের সামনে সচেতনতমূলক পোস্টার প্রদর্শন করা হবে। কাতারে দাঁড়ানোর সময় দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করতে হবে। মসজিদের সামনে হ্যান্ড স্যানিটাইজার বা সাবান-পানির ব্যবস্থা রাখার জন্য সব মসজিদ কমিটিকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।