তিনি বলেন, স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতি নিয়ে ঢালাও ভাবে বললে হবে না। দুর্নীতির সুনির্দিষ্ট অভিযোগ দিতে হবে। মাস্কের কথা বলছেন- সেই মাস্ক কোনো দিনই কেনা হয়নি। পেমেন্ট করা হয়নি, রিসিভ করা হয়নি। ভালো করে খতিয়ে দেখে সঠিক কথাটি বলবেন।
বুধবার সংসদে বাজেট পাসের প্রক্রিয়ার সময় বিরোধী দলের সংসদ সদস্যদের বিভিন্ন ছাঁটাই প্রস্তাবের জবাব দিতে গিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এর আগে জাতীয় পার্টি, বিএনপি ও গণফোরামের সদস্যরা ছাঁটাই প্রস্তাবের ওপর তাদের বক্তব্য দেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্য দেয়ার সময় সংসদ সদস্যরা চিৎকার চেঁচামেচি করে প্রতিবাদ জানান।
হাসপাতালে বেহাল অবস্থার অভিযোগের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, সব এমপিরা তো হাসপাতালের চেয়ার, উন্নয়ন কমিটির সাথে জড়িত। আপনারা প্রত্যেকে দায়িত্বে আছেন। এই বিষয়গুলো আপনাদেরই দেখার কথা। মেশিন চলে না, লোক লাগবে- এগুলো তো আপনাদের দেখতে হবে। কিন্তু আপনারা তো সেটা দেখেন না। নার্স, ডাক্তার বা যন্ত্রপাতি লাগলে তো আপনাদের বলতে হবে। শুধু অভিযোগ দিলে তো হবে না। যা যা প্রয়োজন আছে তার ব্যবস্থা করা হবে। কিন্তু চেয়ারম্যান হিসেবে এগুলো দেখার দায়িত্ব আপনাদের ওপর বর্তায়।
সংসদ সদস্যদের উদ্দেশ্য করে মন্ত্রী বলেন, সব লকডাউন, আপনারা কেউ তো বাইরে (দেশের বাইরে) যেতে পারেননি। সেবা কোথায় নিচ্ছেন? বাংলাদেশের হাসপাতালেই সেবা নিচ্ছেন। যেতে তো পারছেন না কোথাও। হাসপাতাল সেই সেবা দিতে পারে বিধায় আপনারা সেবা নিচ্ছেন। ভালো আছেন।
ভ্যাকসিন সংগ্রহ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ভ্যাকসিন আমরা আনার চেষ্টা করছি। আগামী ২/৩ তারিখের মধ্যে ২৫ লাখ মডার্নার ভ্যাকসিন চলে আসবে। চীনা ভ্যাকসিনও একই সময়ে চলে আসবে। কোভ্যাক্স থেকে আমরা ৬ কোটি ৩০ লাখ ভ্যাকসিন ডিসেম্বরের মধ্যে পাব। সিনোফার্মার সাথে চীনা দেড় কোটি ভ্যাকসিনের চুক্তি হয়েছে। সব মিলিয়ে ডিসেম্বর পর্যন্ত ১০ কোটি ভ্যাকসিনের ব্যবস্থা রয়েছে। এটা দিয়ে আমরা ৫ কোটি মানুষকে টিকা দিতে পারব। জনসন অ্যান্ড জনসনকে রিসেন্টলি অনুমতি দিয়েছি। সেখানকার ৭ কোটি ভ্যাকসিন দিয়ে ৭ কোটি মানুষকে টিকা দিতে পারব। আগামী বছরের প্রথম কোয়ার্টারে পাব। সব মিলিয়ে আগামী বছরের প্রথম কোয়ার্টারের মধ্যে ৮০ শতাংশ মানুষকে টিকা দিতে পারব।
মন্ত্রী বলেন, দেশের স্বাস্থ্য সেবার সব স্বাভাবিক কাজের পাশাপাশি করোনার চিকিৎসা চলছে। প্রায় এক কোটি লোককে আমরা ভ্যাকসিন দিয়েছি। সেখানে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকার কাজ হয়েছে। আমরা প্রায় ৫০ লাখ মানুষের কভিড-১৯ টেস্ট করেছি। সেখানে দুই হাজার কোটি টাকার কাজ হয়েছে। এক লাখ করোনার রোগীকে চিকিৎসা দিয়েছি। সেখানে দুই হাজার কোটি টাকা খরচ হয়েছে। এসব কাজ আমরা করেছি বিনা মূল্যে। অক্সিজেন সেন্টার লাগানো হয়েছে ১০০, ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে ১০০। আরও অন্যান্য অতিরিক্ত কাজ হয়েছে। এ বছরের এডিপির ১২ হাজার কোটি টাকার বাজেট ছিল, ভ্যাকসিন বাদ দিলে এর ৮৫ শতাংশ অর্জন হবে। ভ্যাকসিনের ৮ হাজার কোটি টাকা ধরা হলে সেটা ১৫০ শতাংশ আমাদের অর্জন। এই হিসাবটা আমরা করি না।
জনশক্তির ঘাটতি থাকার কথা উল্লেখ করে জাহিদ মালেক বলেন, এই করোনার মধ্যেও আমরা চিকিৎসক, নার্সসহ ২০ হাজার লোক নিয়োগ দিয়েছি। টেকনিশিয়ান নিয়োগ চলমান রয়েছে। এটা নিয়ে একটা জটিলতা হয়েছিল। অল্প দিনের মধ্যে আমরা এটা সম্পন্ন করতে পারব। মামলার কারণে নিয়োগে কিছুটা সমস্যা হয় বলে তিনি জানান।