মাহমুদা আক্তার মিতুকে হত্যায় তার স্বামী সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আক্তারের সহযোগী ছিল নয়জন। এ ছাড়া হত্যকাণ্ডের পর তিন লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে বিকাশের মাধ্যমে। বুধবার সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
পিবিআই মঙ্গলবার রাতে বাবুল আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদের পর তাকে হেফাজতে রাখে। মিতু হত্যায় বাবুলের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে বলে জানায় পিবিআই। এরপর মিতুর বাবা মোশারফ হোসেন বুধবার দুপুরে চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানায় নতুন একটি মামলা দায়ের করেন।
তার করা মামলার অপর আসামিরা হলেন বাবুলের ‘সোর্স’ কামরুল ইসলাম শিকদার ওরফে মুছা, এহতেশামুল হক ভোলা, মোতালেব মিয়া ওরফে ওয়াসিম, মো. আনোয়ার, সাইদুল আলম শিকদার ওরফে সাক্কু, শাহজাহান ও কালু।
মামলার পর বেলা আড়াইটার দিকে সাবেক এসপি বাবুল আক্তরকে আদালতে নিলে তার পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয় বলে সাংবাদিকদের জানান পিবিআই চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান।
তিনি বলেন, আমরা বাবুল আক্তারের আচার-আচরণ বিশ্লেষণ করি এবং প্রত্যক্ষ করি। যে হত্যাটা হয়েছিল, সেখানে আর্থিক লেনদেনও হয়েছে। সেই লেনদেনের বিষয়টি আমরা আধুনিক তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে জানতে পারি। আমরা জানতে পারি এ হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী বাবুল আক্তার এবং তার সঙ্গে নয়জন সহযোগী ছিল।
তিনি বলেন, বাবুল আক্তারের একসময়ের ব্যবসায়িক পার্টনার সাইফুল হকের মাধ্যমে কয়েক দফায় বিকাশের মাধ্যমে তিন লাখ টাকা লেনদেন হয়। কাজী আল মামুন ছিল খুনের মূল পরিকল্পনাকারী মুসার আত্মীয়। সাইফুল হক বাবুল আক্তারের টাকা মুসার আত্মীয় কাজী আল মামুনকে বিকাশের মাধ্যমে কয়েক দফায় দেন। মোট তিন লাখ টাকা দেওয়া হয় হত্যাকাণ্ডের পর। কাজী আল মামুন মুসা এবং তার স্ত্রীকে সেই টাকা প্রেরণ করেন।
পিবিআই কর্মকর্তা আরো জানান, বাবুল ও মিতু আক্তারের মধ্যে পারিবারিক কলহ ছিল এবং তা চরম আকার ধারণ করে।
এ ছাড়া সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে গায়ত্রী নামে এক নারীর সঙ্গে বাবুল আক্তারের সম্পর্কের বিষয়টির প্রমাণ পাওয়া গেছে বলেও জানান তিনি।
তবে হত্যার কারণ জানতে আরো অধিক তদন্ত প্রয়োজন বলে জানান নাজমুল হোসেন।
২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি মোড়ে ছেলেকে স্কুল বাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় প্রকাশ্যে গুলি চালিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয় মিতুকে।
পদোন্নতি পেয়ে পুলিশ সদরদপ্তরে যোগ দিতে ওই সময় ঢাকায় ছিলেন বাবুল। তার ঠিক আগেই চট্টগ্রাম নগর গোয়েন্দা পুলিশে ছিলেন তিনি।
হত্যাকাণ্ডের পর নগরীর পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাত পরিচয় কয়েকজনকে আসামি করে একটি মামলা করা হয়, যার বাদী ছিলেন বাবুল আক্তার নিজেই।
তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই পরিদর্শক সন্তোষ চাকমা বুধবার দুপুরে সেই মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন আদালতে।