
মোঃ আরিফুল ইসলামঃ
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বেনাপোল পৌরসভার বড় আচড়া (১)নং ওয়ার্ডে একটি গুরুত্বপূর্ণ উঠান বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত উঠানো থেকে অংশগ্রহণ করেন মৃত ধানের শীষ প্রতীক প্রাপ্ত প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির সাবেক কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক জনাব মফিকুল হাসান তৃপ্তি।বেনাপোল স্থলবন্দর সংলগ্ন এই এলাকায় নারী ও পুরুষ উভয়েরই ব্যাপক উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। অনুষ্ঠান শুরু থেকে উদ্দীপনা ও উচ্ছ্বাসে পরিপূর্ণ ছিল। এলাকাবাসী তাদের দীর্ঘদিনের সমস্যা ও উন্নয়নের প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
উঠান বৈঠকে মফিকুল হাসান তৃপ্তি বলেন,আমি এই এলাকারই সন্তান। শৈশব থেকে চোখের সামনে দেখেছি—বেনাপোল স্থলবন্দর পাশের এই এলাকার সম্ভাবনা ঠিক কতটা বিশাল, আর অবহেলা কতটা ভয়াবহ। রেললাইনের পাশের বস্তিতে গরিব মানুষ যেভাবে অসম্মান, অনিরাপত্তা এবং অমর্যাদার মধ্যে জীবনযাপন করছে—সেটা আমি নিজের চোখে দেখেছি, অনুভব করেছি। তাই আমি বলতে চাই, এই এলাকার মানুষ যে মানবিক পরিবেশ পাওয়ার অধিকার রাখে—এটা আমার রক্তে আছে। বিএনপি সরকার গঠন করলে, এলাকার ছেলে হিসেবে আমি এমপি নির্বাচিত হলে, জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে সর্বোচ্চ ভূমিকা রাখব, ইনশাআল্লাহ। বড় আচড়ার প্রতিটি পরিবার যেন নিরাপদ আবাসন, বিশুদ্ধ পানি, স্যানিটেশন এবং ন্যূনতম মানবিক সুযোগ-সুবিধা পায়—এটা আমি নিজের দায়িত্ব হিসেবে দেখি।
বেনাপোল স্থলবন্দর শুধু দেশের অর্থনীতি নয়, প্রতি বছর হাজার কোটি টাকা রাজস্ব অর্জনের কেন্দ্র। এই অর্থের সঠিক ব্যবহার করে শিক্ষিত যুবক-যুবতীদের জন্য কর্মসংস্থান বৃদ্ধি এবং ক্ষণিককালীন সহায়তার ব্যবস্থা করব, যাতে তারা নিজের দক্ষতা ও স্বপ্ন পূরণের সুযোগ পায়। রাস্তাঘাট, ড্রেনেজ, স্ট্রিট লাইট, নিরাপত্তা—এসব আমার কাছে কাগজের উন্নয়ন নয়; এগুলো মানুষের দৈনন্দিন জীবন বাঁচানোর বাস্তব চাহিদা। আমাদের ছেলে-মেয়েরা আধুনিক শিক্ষা, কারিগরি দক্ষতা এবং প্রশিক্ষণের সুযোগ পেলে—এই পুরো এলাকা আগামী প্রজন্মের জন্য নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলবে। কৃষির উন্নয়ন, বাজারজাতকরণ, সেচ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন—এসব করব, যা বড় আচড়াকে সামনের দিকে এগিয়ে নেবে। উঠান বৈঠকে ব্যাপক নারী ও পুরুষের উপস্থিতি প্রমাণ করে এই এলাকার মানুষ উন্নয়নের জন্য কতটা আগ্রহী।
আমি বিশেষভাবে এলাকাবাসীকে সতর্ক করতে চাই—যে জামাতে ইসলামী ধর্মকে অপব্যবহার করে রাজনৈতিক সুবিধা নিতে চায়, তাদের প্ররোচনায় বিভ্রান্ত না হওয়া জরুরি। মা-বোনদেরও উৎসাহ দেই যেন তারা সঠিকভাবে ইসলামী শিক্ষা অর্জন করে, নামাজ ও রোজার প্রতি নিয়োজিত থাকে, যাতে ধর্মের সঠিক মূল্যবোধ বজায় থাকে। পাশাপাশি, জামাতে ইসলামীর সব ধরনের ষড়যন্ত্র, বিভাজনমূলক কার্যক্রম ও স্বাধীনতার ইতিহাসকে হেয় করার প্রচেষ্টা থেকে জনগণকে সতর্ক থাকতে হবে। এই জামাতে ইসলামী দেশের ঐক্যকে ক্ষুণ্ণ করতে চায়, তাদের ফাঁদ থেকে সজাগ থাকা আমাদের দায়িত্ব।
আমরা যারা দেশ ও মানুষের কল্যাণকে কেন্দ্র করে জীবনযাপন করেছি—যেমন তারেক রহমানের দায়িত্ববোধ, বেগম খালেদা জিয়ার সংযম ও সংগ্রাম এবং জিয়াউর রহমানের ন্যায়পরায়ণতা ও সততা—এসব আদর্শ এলাকার যুবকদের জন্য অনুপ্রেরণা হতে পারে। আমি এই এলাকার মানুষকে শুধু কথা দিয়ে নয়—একটি সম্মানজনক, আধুনিক, নিরাপদ এবং স্বনির্ভর জীবন বাস্তবায়নের স্বপ্ন নিয়ে পাশে থাকতে চাই। কারণ এই এলাকার ভালো থাকা মানে—আমার নিজের ভালো থাকা।
বেনাপোল পৌর বিএনপি সভাপতি নাজিমুদ্দিন, শার্শা থানা যুবদলের সদস্য সচিব ও যশোর জেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ইমদাদুল হক ইমদাদ, শার্শা থানা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আসাদুজ্জামান আসাদ, শার্শা থানা যুবদলের মেহেদী হাসান, সাধারণ সম্পাদক আবু তাহের ভারত, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আল মামুন বাবলু, সহ-সভাপতি শাহাবুদ্দিন, ইদ্রিস মালেক, নাসিমুল গনি বল্টু, যুগ্ম সম্পাদক মেহেরুল্লাহ, সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল আহাদ এবং সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইসরাফিল হোসেন বক্তব্য রাখেন। তারা স্থানীয় সমস্যা, জনগণের উন্নয়ন এবং সামাজিক সম্পর্ক জোরদারের দিক তুলে ধরেন।
উপস্থিত ছিলেন স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক রাকিবুল হাসান রিপন, পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম শহীদ, এবং ছাত্রদলের নেতারা—যশোর জেলা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি শাহানুর রহমান শাওন, ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি মোহাম্মদ বিপ্লব মন্ডল, ইনজামামুল হক, শার্শা থানা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক বিপ্লব হোসেন, আহ্বায়ক জিয়াউর রহমান, বেনাপোল পৌর ছাত্রদলের সদস্য সচিব ইসতিয়াক আহমেদ শাওন এবং সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন তুহিনসহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা।
