উচ্চ গতির ইন্টারনেট নিশ্চিত করতে প্রায় সাতশ কোটি টাকা ব্যয়ে বাংলাদেশকে তৃতীয় সাবমেরিন কেবলের সঙ্গে যুক্ত করার প্রস্তাবে চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এই অনুমোদন দেওয়া হয়।
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে নেওয়া ‘বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে তৃতীয় সাবমেরিন কেবল স্থাপন’ শীর্ষক এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিসিএল)।
একনেক সভা শেষে পরিকল্পনা কমিশনের জ্যেষ্ঠ সচিব ড. শামসুল আলম এক সংবাদ সম্মেলনে এসব জানান।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী এ প্রকল্পকে সময়োপযোগী হিসেবে বর্ণনা করেছেন। এ প্রকল্প বাস্তবায়নের পর ব্যান্ডউইথ রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনেরও সুযোগ সৃষ্টি হবে।
এ প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৯৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে প্রায় ৩০১ কোটি টাকা সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে যোগান দেওয়া হবে। বাকি ৩৯২ কোটি টাকার যোগান দেবে প্রকল্প বাস্তবায়কারী কোম্পানি বিএসসিসিএল।
চলতি বছরের অক্টোবরে বাস্তবায়নের কাজ শুরু করে ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।
বর্তমানে কক্সবাজার ও কুয়াকাটার ল্যান্ডিং স্টেশনের মাধ্যমে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া, মধ্য পূর্ব পশ্চিম ইউরোপ-৪ বা (এসএমডব্লিউ-৪) ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া ও পূর্ব এশিয়া, মধ্য পূর্ব পশ্চিম ইউরোপ-৫ (এসএমডাব্লিউ-৫) সাবমেরিন কেবলে যুক্ত হয়ে বিএসসিসিএল ব্যান্ডউইথ সেবা দিচ্ছে।
নতুন প্রকল্পের আওতায় এসএমডাব্লিউ-৬ সাবমেরিন কেবলে যুক্ত হতে ১৩ হাজার ২৭৫ কিলোমিটার কোর সাবমেরিন কেবল এবং এক হাজার ৮৫০ কিলোমিটার ব্রাঞ্চ সাবমেরিন কেবল বসাতে হবে।
প্রকল্প প্রস্তাবে বলা হয়েছে, সিঙ্গাপুর থেকে ফ্রান্স পর্যন্ত সংযুক্ত এসএমডাব্লিউ-৬ সাবমেরিন কেবল ভারত মহাসাগর, আরব সাগর, লোহিত সাগর হয়ে ভূমধ্যসাগর অবধি বিস্তৃত হবে।
এর কোর ল্যান্ডিং স্টেশন হবে সিঙ্গাপুর, ভারত, জিবুতি, মিশর ও ফ্রান্সে। বাংলাদেশের ব্রাঞ্চটি বঙ্গোপসাগর হয়ে কক্সবাজারে কেবল ল্যান্ডিং স্টেশন পর্যন্ত বিস্তৃত হবে।
২০০৫ সালে বাংলাদেশ প্রথম সাবমেরিন কেবল এসএমডাব্লিউ-৪ এবং ২০১৭ সালে দ্বিতীয় সাবমেরিন কেবল এসএমডাব্লিউ-৫ এ যুক্ত হয়। আলাদা দুটি কনস্টোমিয়ামের মাধ্যমে এই সাবমেরিন কেবল দুটি পরিচালিত হচ্ছে।
একনেকের বৈঠকে এদিন সাবমেরিন কেবল প্রকল্পসহ ২ হাজার ১১৫ কোটি টাকার মোট চারটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বাকি তিন প্রস্তব ছিল আগের তিনটি প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধির জন্য।
এর মধ্যে ১ হাজার ৪৪০ কোটি ৮৭ লাখ টাকা সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে, ৩৭৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা প্রকল্প সহায়তার খাত থেকে এবং ৩০০ কোটি ৮৩ লাখ টাকা সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন থেকে দেওয়া হবে বলে জানান শামসুল আলম।
১. নরসিংদী জেলার অন্তর্ভুক্ত আড়িয়াল খাঁ নদী, হাড়ি ধোয়া নদী, ব্রহ্মপুত্র নদ, পাহাড়িয়া নদী, মেঘনা শাখা নদী ও পুরাতন ব্রহ্মপুত্র শাখা নদী পুনঃখনন (প্রথম সংশোধনী) প্রকল্প সংশোধন করে ব্যয় বাড়ানো হয়েছে ৪০৩ কোটি ১৪ লাখ টাকা।
২. ডিজিটাল সংযোগের জন্য টেলিকমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক আধুনিকীকরণ (প্রথম সংশোধিত) প্রকল্পের ব্যয় বেড়েছে ৭৪১ কোটি ৫৪ লাখ টাকা।
৩. মিউনিসিপাল গভর্ন্যান্স অ্যান্ড সার্ভিসেস (প্রথম সংশোধিত) প্রকল্পে ব্যয় বেড়েছে ২৭৭ কেটি ৩৫ লাখ টাকা।
সম্পাদক ও প্রকাশক- মেহেদী হাসান
Copyright © 2025 Livenews24. All rights reserved.