ঘণ্টাপ্রতি দিতেন ছয় ডলার। কাজ করাতেন সারাদিন-সারারাত। ছিল না সাপ্তাহিক ছুটি। নিউজিল্যান্ডের অকল্যান্ডে মিষ্টির দোকান দেওয়া মোহাম্মদ আতিকুল ইসলাম এই অভিযোগে এখন সাড়ে চার বছরের সাজা খাটছেন। সম্প্রতি প্যারোল চেয়ে নিরাশ হয়েছেন।
আতিকুল প্যারোল চান গত মাসে। রবিবার নিউজিল্যান্ড হেরাল্ড ওই রায়ের বিস্তারিত প্রকাশ করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর আতিকুল যে ব্যবহার করেছেন তাতে আদালত ক্ষুব্ধ। তার বিরুদ্ধে রায় বিকৃত করতে চাওয়ার তিনটি অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে।
আদালত মনে করছে, আতিকুল এখনো তার কর্মীদের জন্য হুমকি।
আতিকুলের সঙ্গে তার স্ত্রী নাফিসা আহমেদেরও সাজা হয়েছিল, দুই বছর ছয় মাস। কিন্তু এক বছরের কম সময় জেল খেটে নাফিসা সাময়িক মুক্তি পেয়েছেন।
প্যারোল বোর্ড বলছে, ‘রায় ঘোষণার সময় বিচারকেরা দেখেছেন মিস্টার ইসলাম তার কর্মকাণ্ডের কোনো দায় নিতে নারাজ। তার কোনো অনুশোচনাও ছিল না।’
প্যানেল প্রধান জেন লভেল স্মিথ বলেন, ‘আতিকুল তার ১২ বছর বয়সী ছেলে সন্তানের সঙ্গে থাকতে মুক্তি চেয়েছেন। বোর্ডকে বলেছেন সব পরিস্থিতির জন্য তিনি খুব দুঃখিত। একই সঙ্গে আবার বলছেন এই রায় তার জন্য মারাত্মক হয়ে গেছে।’
‘বোর্ড মনে করছে আতিকুলের দুঃখ প্রকাশের ধরন সন্তোষজনক নয়।’
‘কর্মীদের প্রতি তার আচরণ লজ্জাজনক। মুক্তি পেলে তিনি ভুক্তভোগীদের ক্ষতির কারণ হতে পারেন।’
২০২১ সালের জুনে আতিকুলের বিষয়ে আবার শুনানি হবে।
অকল্যান্ডে আতিকুল এবং তার স্ত্রীর রয়েল সুইট ক্যাফে নামের একটি মিষ্টি তৈরির ব্যবসা ছিল। সেখানে কাজ করাতে বাংলাদেশ থেকে কয়েক জনকে নিয়ে যান। তারা ধারের টাকায় নিউজিল্যান্ডে যান।
গত বছর মে মাসে বিচারক রায় ঘোষণার সময় বলেন, ‘দীর্ঘ সময় কাজ করার জন্য কর্মীদের সামাজিক জীবন বলতে কিছুই ছিল না। তাদের কার্যত কমিউনিটি থেকে আলাদা করে রাখা হয়েছিল।’
একজন কর্মী এসবের প্রতিবাদ করলে আতিকুল তাকে এভাবে উত্তর দেন, ‘এটা একটা ব্যবসা। থাকলে থাকবা, না থাকলে নাই।’
কর্মীরা স্থানীয় বাংলা পত্রিকায় কাজ চেয়ে বিজ্ঞাপন দিলে আতিকুল পাসপোর্ট ছিনিয়ে নেন!
আতিকুল তার এক বন্ধুর মাধ্যমে আদালতে দাখিল করা প্রতিবেদনে বলেন, ১২-১৪ ঘণ্টা কাজ করা বাংলাদেশের একটা স্বাভাবিক নিয়ম!
তবে একজন কর্মী আদালতকে বলেন, বাংলাদেশে এতটা কাজ তারা কখনো করেননি।
সম্পাদক ও প্রকাশক- মেহেদী হাসান
Copyright © 2024 Livenews24. All rights reserved.