কুড়িগ্রাম সংবাদদাতা:
কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার রানীগঞ্জ ইউনিয়নের পুটিমারী সরদারপাড়া বাঁধ এলাকায় এক ব্যবসায়ীকে মারধর ও তার দোকানে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী মোঃ আলমগীর হোসেন (৪০) চিলমারী মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন।
অভিযোগ অনুযায়ী, আলমগীর হোসেন দীর্ঘদিন ধরে বাঁধসংলগ্ন রাস্তায় মুদি, কাটা কাপড় ও স্যান্ডেলের দোকান পরিচালনা করে আসছেন। পারিবারিক জমিজমা ও নানা বিষয়কে কেন্দ্র করে তার সঙ্গে প্রতিবেশী মঞ্জিল মিস্ত্রী ও তার পরিবারের দীর্ঘদিনের বিরোধ রয়েছে।
আলমগীরের অভিযোগ, ২৩ নভেম্বর ২০২৫ রাত সাড়ে ৮টার দিকে বিবাদীপক্ষ তার দোকানে এসে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং একপর্যায়ে দোকান থেকে টেনে-হিঁচড়ে বাইরে নিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করে। এতে তিনি শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম হন। স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এলে অভিযুক্তরা প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে সটকে পড়ে।
পরে স্থানীয়ভাবে বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করলেও বিবাদীপক্ষ আরও ক্ষিপ্ত হয় বলে দাবি করেন তিনি।
এরপর ২৭ নভেম্বর ২০২৫ গভীর রাতে নতুন ঘটনা ঘটে। রাত আনুমানিক ১টা ৩০ মিনিটে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে ঘর থেকে বের হয়ে আলমগীর দেখেন দোকানে আগুন লেগেছে। তিনি ছুটে গেলে অভিযুক্তদের পালিয়ে যেতে দেখতে পান বলে অভিযোগে উল্লেখ করেন। তার চিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে এসে আগুন নেভানোর চেষ্টা চালায়। ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই স্থানীয়রা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। পরে ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি পরিদর্শন করে।
অগ্নিকাণ্ডে দোকানের মালামালসহ প্রায় ৫০ হাজার টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন ভুক্তভোগী।
স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আহাব্বর হোসেন জানান, গভীর রাতে মানুষের ডাকাডাকি ও চিৎকার শুনে তিনি বাড়ি থেকে বের হন। তিনি দেখেন তার বাড়ির সামনে আলমগীর হোসেনের দোকানে আগুন লেগেছে। তিনি উপস্থিতি হলে দেখেন স্থানীয়রা আগুন নেভানোর চেষ্টা করছেন।
আউয়াল সরদার জানান, তিনি বাড়িতে শুয়ে ছিলেন। হঠাৎ চিৎকার শুনে রাত ১টারও পরে ঘরে থেকে বের হয়ে দেখেন দোকানের নিচে আগুন জ্বলছে।
মোছাঃ ছকিতন নেছা জানান, ডাকাডাকি শুনে তিনি ও তার ছেলে ঘটনাস্থলে আসেন। তিনি বলেন, আগুন দাউ দাউ করে জ্বলছে। তার ছেলে আগুন নিভানোর চেষ্টা করার সময় হাতেরও ক্ষতি হয়।
উক্ত বিষয়ে মঞ্জিল মিস্ত্রির সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, দুদিন আগে জমির আইল কাটা নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে কিছু কথাকাটাকাটি হয়। পরে উভয় পক্ষ বসে বিষয়টি সমাধান করার সিদ্ধান্ত নেয়। গতকাল রাতে দোকানে আগুন লাগার ঘটনাটি বিষয় জানতে চাইলে তিনি জানান, তারা এ বিষয়ে কিছুই জানেন না।
চিলমারী মডেল থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেন, ঘটনার বিষয়ে ফোন পাওয়ার পরপরই পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সম্পাদক ও প্রকাশক- মেহেদী হাসান
Copyright © 2025 Livenews24bd সত্যের সাথে প্রতিদিন. All rights reserved.