
টঙ্গীবাড়ী সংবাদদাতা।।
মুন্সিগঞ্জের টঙ্গীবাড়ী উপজেলার পুরা দুর্গা চরণ উচ্চ বিদ্যালয়ের খেলার মাঠটি দীর্ঘদিন ধরে পানিতে তলিয়ে আছে। ড্রেজারের বালু ভরাটের পর অতিরিক্ত পানি এই মাঠে ফেলে দেওয়ায় তা এখন একেবারে জলাশয়ে পরিণত হয়েছে। বিষয়টি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর উপজেলা প্রশাসন পানি নিষ্কাশনের উদ্যোগ নিলেও এখনো কার্যকর পদক্ষেপ দেখা যায়নি। বরং মাঠের জমে থাকা পানিতে শুরু হয়েছে মাছ চাষ—যা নিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে।
বুধবার (২৯ অক্টোবর) সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের খেলার মাঠ পানিতে ডুবে আছে। এটা যে বিদ্যালয়ের খেলার মাঠ দেখে বুজার উপায় নেই।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কয়েক মাস আগে ড্রেজারের মাধ্যমে আশপাশের ফসলি জমি বালু দিয়ে ভরাট করার সময় অবশিষ্ট পানি বিদ্যালয়ের মাঠে ফেলা হয়। এর ফলে বিদ্যালয়ের খেলার মাঠটি দীর্ঘদিন ধরে পানিতে নিমজ্জিত থাকে এবং শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা ও শারীরিক অনুশীলনের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়।
বিষয়টি নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হলে উপজেলা প্রশাসন মাঠের পানি নিষ্কাশনের আশ্বাস দিলেও এখনো তা বাস্তবায়ন হয়নি। উল্টো সম্প্রতি দেখা গেছে, মাঠে মাছের চাষ শুরু হয়েছে এবং নিয়মিত সেখানে মাছের খাবার দেওয়া হচ্ছে।
বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাঠ শুকানোর কথা বলা হলেও এখন সেখানে মাছ চাষ হচ্ছে। এতে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা ও শরীরচর্চা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।”
অবিভাবক আলমগীর হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “এটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠ, ব্যক্তিগত পুকুর নয়। মাঠ শুকিয়ে শিক্ষার্থীদের খেলার সুযোগ ফিরিয়ে দিতে হবে।”
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কামরুল হাসান এর সাথে একাধিকবার কথা বললে তিনি বেশ কয়েকবার জানান “সেলো মেশিন ওয়ালার সাথে কথা হয়েছে। বর্তমানে তার মেশিন অন্যত্র কাজ করছে, কাজ শেষ হলে শীঘ্রই মাঠের পানি নিষ্কাশন করা হবে।”
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, “বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে পাম্প দিয়ে পানি নিষ্কাশনের জন্য বলা হয়েছে। মাছ চাষের বিষয়টি জানা ছিল না, দ্রুত খোঁজ নিচ্ছি।”
স্থানীয়রা বলছেন, বিদ্যালয়ের মাঠ শিক্ষার্থীদের বিনোদন ও শারীরিক বিকাশের জন্য উন্মুক্ত রাখা জরুরি। তারা মাঠ দখল বা অন্য কাজে ব্যবহারের বিরুদ্ধে প্রশাসনের কঠোর ব্যবস্থা কামনা করেছেন।
