শীতের মৌসুম শুরু হয়েছে। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে শীতের প্রকোপ বেড়েছে। সামনে ভালোমতোই শীত নামার সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। শীতের মৌসুমে সাধারণত ফজরের নামাজের সময় ঘর থেকে কাপড় দিয়ে নাক-মুখ পেঁচিয়ে বের হন মুসল্লিরা। এরকম নাক-মুখ পেঁচানো অবস্থায় নামাজ পড়া যাবে কি না, বিশেষত ঠাণ্ডাজনিত রোগের আশংকা থাকলে নাক-মুখ ঢেকে নামাজ পড়ার বিধান কী জানতে চান অনেকে।
এর উত্তরে ফুকাহায়ে কেরাম বলেন— ইসলামে অসুস্থতা ও অপারগতার বিষয়টা ভিন্ন। ইসলাম মানুষের ওপর তার সাধ্যের বাইরে কিছু চাপিয়ে দেয় না। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহ কারো ওপর সামর্থ্যের অতিরিক্ত বোঝা চাপিয়ে দেন না।’ (সুরা বাকারা: ২৮৬)
তাই শরয়ি ওজর থাকলে নাক-মুখ ঢাকা জায়েজ। যেমন- করোনাকালীন সময়ে অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকিতে মানুষকে বাধ্য হয়ে মুখে মাস্ক পরে নামাজ আদায় করতে হয়েছিল। তখন তা শরয়ি অপারগতায় পরিণত হয়েছিল। অতএব, বিপদের মুহূর্তে, রোগাক্রান্ত হওয়ার আশংকা কিংবা অসুস্থ ব্যক্তিদের রোগ বেড়ে যাওয়ার আশংকা থাকলে মুখে কাপড় দিয়ে নামাজ আদায় করার ক্ষেত্রে শরিয়তে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। (রাদ্দুল মুহতার: ১/৬৫২)
তবে মনে রাখা উচিত, সাধারণ অবস্থায় নামাজে মুখ ঢেকে রাখা মাকরুহ। কেননা রাসুলুল্লাহ (স.) স্বাভাবিক অবস্থায় এভাবে নামাজ আদায় করতে নিষেধ করেছেন। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) নামাজরত অবস্থায় মুখমণ্ডল ঢাকতে নিষেধ করেছেন। (ইবনে মাজাহ: ৯৬৬) হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত অন্য হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (স.) নামাজের সময় কাপড় ওপর থেকে নিচের দিকে ঝুলিয়ে দিতে ও মুখ ঢেকে রাখতে নিষেধ করেছেন। (আবু দাউদ: ৬৪৩)
তাই নামাজ অবস্থায় বিনা ওজরে রুমাল বা চাদর ইত্যাদি দিয়ে মুখ ঢেকে রাখবে না। (রাদ্দুল মুহতার: ১/৬৫২) আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে ইসলামি শরিয়তের যাবতীয় নির্দেশনা মেনে চলার তাওফিক দান করুন। আমিন।