জামালপুর সংবাদদাতা।।
জামালপুর শহরের রশিদপুর ইজ্জাতুন্নেছা উচ্চ বিদ্যালয়ে রহস্যজনক চুরির ঘটনা ঘটেছে। অফিসকক্ষের জানালার গ্রিল কেটে সাড়ে তিন লক্ষাধিক নগদ টাকা চুরি করেছে দুর্বৃত্তরা। তবে কোনো মূল্যবান ফাইলপত্র খোয়া যায়নি বলে ধারণা করছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে পুলিশ।
বুধবার (২৮ নভেম্বর) গভীর রাতে এ চুরি সংঘটিত হয়েছে বলে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ধারণা। তবে স্থানীয়রা বলেছেন, এটা একটা পরিকল্পিত চুরির নাটক। এর গভীরে অন্য কোনো ষড়যন্ত্র কাজ করেছে হয়তো।
ওই বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, অফিসকক্ষের পেছনের একটি জানালার গ্রিল কাটা। ধারণা করা হচ্ছে, এই গ্রিল কেটেই দুর্বৃত্তরা কক্ষে ঢুকেছে। অফিসকক্ষ ও তার পাশের কক্ষের ৩টি আলমারির তালা ও ২টি ফাইল কেবিনেটের ড্রয়ার ভাঙা। তবে কোনো মূল্যবান ফাইলপত্র ও দস্তাবেজ খোয়া যায়নি।
স্থানীয়রা জানান, চুরির ঘটনাটি পূর্ব পরিকল্পিত মনে হচ্ছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছেই আলমারি ও কেবিনেটের চাবি গচ্ছিত থাকে। ৭ দিন ধরে ছাত্রছাত্রীদের কাছে থেকে সংগ্রহকৃত টাকাগুলো তিনি ব্যাংকে না রেখে ড্রয়ারে কেন রাখলেন, এটাই রহস্যজনক বিষয়। এর আগে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের বই-খাতাপত্র ও গাছ কেটে বিক্রির অভিযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের দপ্তরি মীর হোসেন জানান, প্রতিদিনের মতো বিকেল সাড়ে চারটায় বিদ্যালয়ে সমস্ত কক্ষে তালা দিয়ে আমি চলে যাই। অফিসকক্ষের চাবি একসেট আমার কাছে থাকে এবং আরেকসেট থাকে প্রধান শিক্ষকের কাছে। আমি (বৃহস্পতিবার) সকালে এসে অফিসকক্ষে তালা লাগানো অবস্থায় পাই। আমি অফিসকক্ষের তালা খুলে অন্যান্য কক্ষের তালা খুলতে চলে যাই। পরে আয়া অফিসকক্ষে ঢুকে দেখেন যে, আলমারির তালা ও কেবিনেটের ড্রয়ার ভাঙা।
বিদ্যালয়ের নাইটগার্ড মো. কাবিল উদ্দিন শেখ বলেন, প্রতিরাতের মতো গতকাল রাতেও আমি বিদ্যালয়ে পাহারার কাজে নিয়োজিত ছিলাম। সবকক্ষে ঠিকঠাক তালা দেওয়া ছিল। ভেতরে যে চোর ঢুকেছে এবং আলমারির তালা ভেঙেছে, এর কোনো শব্দ আমি পাইনি। আমি সকালে ঘটনাটি জানতে পেরেছি। আমি ৩৯ বছর ধরে এ বিদ্যালয়ে কর্মরত আছি। এর আগে বিদ্যালয়ে চুরির কোনো ঘটনাই ঘটেনি!
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আনিছুজ্জামান জানান, চোরেরা গ্রিল কেটে অফিসকক্ষে ঢুকে আলমারির তালা ও কেবিনেটের ড্রয়ার ভেঙেছে। আলমারির ড্রয়ারে ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে বেতন ও পরীক্ষার ফি বাবদ এক সপ্তাহ ধরে জমা করা সাড়ে তিন লক্ষাধিক নগদ টাকা রাখা ছিল। ওই টাকাগুলোই নিয়ে গেছে চোরেরা। তবে কোনো মূল্যবান কাগজপত্র ও সার্টিফিকেট খোয়া যায়নি বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। সমস্ত কাগজপত্র ও দস্তাবেজ যাচাইয়ের পর প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।
তিনি আরও জানান, আমার কাছেই থাকে আলমারি ও কেবিনেটের চাবি। দপ্তরির কাছে অফিসকক্ষসহ অন্যান্য কক্ষের শুধু দরজার একসেট চাবি থাকে। ঘটনাটি গভীর রাতের কোনো এক সময় সংঘটিত হয়েছে বলে আমাদের ধারণা। চুরির ঘটনায় থানায় মামলা হবে বলেও জানান তিনি।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে জামালপুর সদর থানার ওসি (ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) আবু ফয়সল মো. আতিক সাংবাদিকদের জানান, খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসেছি। বিদ্যালয়ে চুরির ঘটনায় সঠিক তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
LN24BD /mukta
সম্পাদক ও প্রকাশক- মেহেদী হাসান
Copyright © 2024 Livenews24. All rights reserved.