শেখ মোঃ ইমরান,গোপালগঞ্জ..
গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার বাগঝাপা গ্রামের ইয়াসিন শেখ রাহিক ৪৩ তম বিসিএসে প্রাণী সম্পদ ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন। রাহিকের মতে, বিসিএস একটি ধৈর্য্য পরীক্ষা। বিসিএস পরীক্ষায় সফলতা পেতে হলে অবশ্যই কঠোর পরিশ্রমী এবং ধৈর্যশীল হতে হবে।
স্নাতক পড়াকালীন সময়ে একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি বিসিএসের প্রস্তুতি নেয়া শুরু করলে অনেকাংশেই এগিয়ে থাকা যায় বলে মনে করেন ইয়াসিন শেখ রাহিক। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়,ময়মনসিংহ থেকে ভ্যাটেরিনারি সাইন্স স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করা ইয়াসিন শেখ রাহিকের কাছে সাফল্যের পেছনে নিজ আত্মবিশ্বাস ও পরিবারের অনুপ্রেরণাটাই মুখ্য। ইয়াসিন শেখ রাহিকের বাবা শেখ নজির আহমেদ মুকসুদপুর উপজেলার LGED তে একটি প্রকল্পের Consultant Engineer । মা সবিনা ইয়াসমিন হলেন কাশিয়ানী উপজেলাধীন মাজড়া আল হাজ্ব এ.জি উচ্চবিদ্যালয়ের সিনিয়র সহকারী শিক্ষক। ইয়াসিন শেখ রাহিকের প্রাথমিক শিক্ষাজীবন শুরু হয় নানা বাড়ী খুলনা মহেশ্বরপাশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে থেকে। সেখান থেকে ইয়াসিন শেখ রাহিক প্রথম শ্রেণি থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত লেখেপড়া করেন। পরবর্তীতে মা সাবিনা ইয়াসমিনের কাশিয়ানী উপজেলাধীন মাজড়া আল হাজ্ব এ.জি উচ্চবিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসাবে চাকরি হলে ২০০৩ সলে ইয়াসিন শেখ রাহিক প্রাথমিক শিক্ষাজীবন ৩৭নং বাগঝাপা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শেষ করেন।
তারপর মাজড়া আল হাজ্ব এ.জি উচ্চবিদ্যালয়ে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাজীবন শুরু করেন তবে সেখানেও তিনি তার উচ্চমাধ্যমিক শেষ করতে পারেননি। মানসম্মত শিক্ষার জন্য মাজড়া আল হাজ্ব উচ্চবিদ্যালয় ছেড়ে খুলনা MCSK (Military Collegiate School,Kulna) ৮ম শ্রেণিতে ভর্তি হন। MCSK স্কুল থেকে এসএসসি এবং এইচএসসি পাস করেন। এরপর ভর্তি হন বাংলাদেশের কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়,ময়মনসিংহে। ইয়াসিন শেখ রাহিক শৈশব থেকেই লেখা পড়ায় মনোযোগী ও ভালো ছিলেন পাশাপাশি শিক্ষাজীবনে খেলাধুলায়ও বেশ কৃতিত্বপূর্ন অর্জন রয়েছে তার। ইয়াসিন শেখ রাহিক বলেন, মূলত বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পরে বিসিএস সম্পর্কে আরও বেশি জানতে পারি এবং আগ্রহী হই। মা-বাবা মাঝেমধ্যে বলতেন ভালোভাবে পড়াশোনা কর, বিসিএস ক্যাডার হতে হবে। তখন থেকে বিসিএস ক্যাডার হওয়ার স্বপ্ন দেখা ও দৃঢ়তা শুরু করি। আমার এই সফলতার পেছনে মহান সৃষ্টিকর্তা এবং আমার পরিবারের সম্পূর্ণ অবদান। তাই এই সফলতায় মহান সৃষ্টিকর্তা ও বাবা-মা সহ পরিবারের সবাইকে ধন্যবাদ জানাই।
তিনি বলেন, স্নাতক সম্পন্নের পরেই মূলত আমি বিসিএস প্রস্তুতি শুরু করি। বিসিএসের জন্য সবচেয় কঠিন এবং গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হচ্ছে প্রিলিমিনারি পরীক্ষা। ইয়াসিন শেখ রাহিকের প্রথম কর্মজীবন শুরু হয় প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের একটি প্রজেক্টে LEO(Livestock Extension Officer) হিসাবে। পরবর্তীতে তিনি সোনালী ব্যাংকের অফিসার (ক্যাশ) পদে যোগদান করেন। তিনি বলেন, ৪১তম বিসিএস আমার দ্বিতীয় বিসিএস ছিল। তবে ৪৩ তম বিসিএসএ প্রিলিমিনারী পাশ করার পর আমি উত্তম প্রস্তুতির জন্য আমার সোনালী ব্যাংকের চাকরিটি ছেড়ে দিই। যদিও তার কিছুদিন পর আমার প্রাইমারি স্কুলের সহকারী শিক্ষক পদে একটি চাকুরি হয়, সেখানেই এখন কর্মরত আছি। আমি ৪১ বিসিএস থেকে নন-ক্যাডার( প্রাইমারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক) হিসাবে সুপারিশপ্রাপ্ত হই। তৃতীয়বারে ৪৩তম বিসিএসে প্রাণী সম্পদ ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছি। প্রথমে আমি আমার শক্তিশালী এবং দুর্বল দিকগুলো শনাক্ত করি। দুর্বল দিকগুলোতে বেশি গুরুত্ব দিয়েছি। বিশেষ করে কোথায় ভুল হচ্ছে সেটা ধরতে পেরেছি। এইভাবে আমি আমার বিসিএস প্রস্তুতি নিয়েছি। ইয়াসিন শেখ রাহিকের কাছে বিসিএস একটি ধৈর্য পরীক্ষা। তার মতে, বিসিএস পরীক্ষায় সফলতা পেতে হলে অবশ্যই কঠোর পরিশ্রমী এবং ধৈর্যশীল হতে হবে। স্নাতকে পড়ার সময়েই একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি বিসিএসের প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করলে অনেকাংশেই এগিয়ে থাকা যায়। নিজের শক্তিশালী এবং দুর্বল দিক গুলো শনাক্ত করতে হবে। সেইভাবে নিজেকে প্রস্তুত করতে হবে। প্রথমেই সব বিষয়ের সিলেবাস এবং মানবণ্টন সম্পর্কে ধারণা নিতে হবে। কোনোভাবেই ধৈর্য হারানো যাবে না। একবার ব্যর্থ হলে পুনরায় আরো ভালোভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে।
সম্পাদক ও প্রকাশক- মেহেদী হাসান
Copyright © 2024 Livenews24. All rights reserved.