আন্তর্জাতিক ডেস্ক।।
ব্রিটিশ বহুজাতিক প্রসাধন প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ইউনিলিভারের তৈরি প্রসাধনী পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় কোম্পানির সবচেয়ে বড় দুই বাজার ইউরোপ ও চীনের ক্রেতারা এই প্রতিষ্ঠানের সাবান, শ্যাম্পুসহ অন্যান্য পণ্য কেনা কমিয়ে দিয়েছেন। কোম্পানির এক মূল্যায়ন প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
কোম্পানির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও তার জেরে রাশিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্র-ইউরোপ দুই পক্ষ পরস্পরের ওপর পাল্টাপাল্টি একগুচ্ছ নিষেধাজ্ঞা জারি করায় আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি ও প্রসাধন সামগ্রীর বিভিন্ন কাঁচামালের দাম কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। ফলে বিগত বিভিন্ন সময়ের চেয়ে পণ্য উৎপাদনের খরচ গেছে বেড়ে এবং বাড়তি এই ব্যয়ের সঙ্গে সমন্বয় করতেই বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে নিজেদের পণ্যের দাম বাড়াতে বাধ্য হয়েছে কোম্পানি।
এদিকে, যে কারণে নিজেদের পণ্যের দাম বাড়াতে বাধ্য হয়েছে ইউনিলিভার— প্রায় একই কারণে অর্থাৎ রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও করোনা মহামারি পরবর্তী পরিস্থিতির প্রভাবে বিশ্বজুড়েই সাধারণ মানুষের আয় কমে গেছে; সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে খাদ্য, জ্বালানি, ওষুধসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রায় সব পণ্যের দাম।
কোম্পানির মূল্যায়ন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছর বিভিন্ন প্রসাধানী পণ্যের দাম সর্বোচ্চ ১২ দশমিক ৫ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি করেছে ইউনিলিভার; এবং দাম বৃদ্ধির পর ইউরোপ ও চীনের বাজারে ইউনিলিভারের পণ্যের বিক্রি কমেছে শতকরা হিসেবে ১ দশমিক ৬ শতাংশেরও বেশি।
মঙ্গলবার লন্ডনে ইউনিলিভার কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে কোম্পানির আর্থিক শাখার শীর্ষ কর্মকর্তা গ্র্যামি পিটকেথলি বলেন, ‘বর্তমানে ইউরোপের ভোক্তাদের কাছে আমাদের পণ্যের চাহিদা সর্বকালের মধ্যে সবচেয়ে নিম্ন। এই দুই অঞ্চলেই খাদ্য, জ্বালানিপণ্য, যাতায়াত ও পরিবহন খাতে ব্যায় বৃদ্ধি পেয়েছে এবং বাড়তি এই ব্যায়ের সঙ্গে আয়ের ভারসাম্য রাখতে সাধারণ ইউরোপীয়রা প্রসাধনী কম কিনছেন।’
‘আর চীনে আমাদের পণ্য বিক্রি কমে যাওয়ার কারণ সেই দেশের সরকারের নেওয়া ‘জিরো কোভিড’ নীতি। এসব নীতির কারণে ২০২২ সালের প্রায় পুরো বছর ধরেই চীনে লকডাউন চলেছে। ফলে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড হ্রাস পাওয়ায় মানুষের আয়ও কমে গেছে। ফলে স্বাভাকিভাবেই চীনে আমাদের পণ্যের বিক্রি কমে গেছে।’
তবে এই অবস্থা কেটে যাবে বলে আশা করছে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবারের সংবাদ সম্মেলনে গ্র্যামি পিটকেথলি বলেন, ‘চলতি বছর আমরা আট শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য নিয়েছি। বর্তমানে যে কঠিন সময় আমরা পার করছি, আশা করছি এই অবস্থা কেটে যাবে এবং বছর শেষে আমরা আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারব।’
ইউনিলিভার কোম্পানির তহবিল ব্যবস্থাপক জ্যাক মার্টিন এ সম্পর্কে রয়টার্সকে বলেন, ‘পণ্য বিক্রির হার কিছুটা কমেছে এবং অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে বড় পরিবর্তন না এলে এই হার বাড়ানো খুব কঠিন।’
সম্পাদক ও প্রকাশক- মেহেদী হাসান
Copyright © 2025 Livenews24. All rights reserved.