মোঃনূর ইসলাম নয়।।
গত তিন দিনের বৃষ্টি ও দমকা
হাওয়ায় দিনাজপুরের শতশত বিঘা জমির আমন ধান মাটিতে নুয়ে পড়েছে।
বিভিন্ন এলাকায় আমন চাষিদের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন আগাম
শীতকালীন সবজি ও আলু চাষিরা। তবে কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন,
থেমে থেমে বৃষ্টিপাত হলে ফসলের মাঠে পানি বেশি দিন জমে থাকতে
পারবে না। তাই ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা কম। গত সোমবার বিকেল থেকে শুরু হওয়া
বৃষ্টি ও দমকা হাওয়ায় ঘরবাড়ি ও গাছপালার ক্ষয়ক্ষতি না হলেও জেলার শতাধিক
হেক্টর জমির আমন ধান মাটিতে নুয়ে গেছে। ১০-১৫ দিনের মধ্যে এসব ধান
কেটে ঘরে তুলতেন কৃষকেরা।
এখন বড় ধরনের লোকসানের আশঙ্কা করছেন তারা। অপরদিকে আগাম সবজি ও
আলু চাষিদের মাথায় হাত। বর্তমানে আলুর দাম নেই, আগাম আলু করে লাভ
করার আশায় এখন ক্ষতির মুখে কৃষক। বুধবার সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা
ঘুরে দেখা যায়, আধাপাকা ধানের গাছ ও সবজি ক্ষেত পানিতে ডুবে
আছে। মাটিতে নুয়ে পড়া ধানগাছ গোছা বেঁধে দাঁড় করানোর চেষ্টা
করছেন অনেক কৃষক। অনেকে আবার সবজি ও আলু ক্ষেতের পানি ড্রেন করে
বের করতে ব্যাস্ত।
সদর উপজেলার কৃষক মফিজ বলেন, আর মাত্র ১০-১৫ দিন পরই ক্ষেতের ধান পাকতে
শুরু করবে। কিন্তু হঠাৎ এই বৃষ্টি ও দমকা হাওয়ায় ৭০-৮০ শতাংশ জমির আমন
ধান মাটিতে হেলে পড়েছে। এই ধান এখন কি হবে, কিভাবে এই ক্ষতি পূরণ
হবে ভেবে পাচ্ছি না। ওই এলাকার আরেক কৃষক ননি গোপাল বলেন, ‘তিন
বিঘা জমিতে আগাম ব্রি সুমন স্বর্ণা জাতের ধান লাগিয়েছি। মাঠে
ধান পেকে গেছে। দু-এক দিন পর ঘরে তুলব। অসময়ের বৃষ্টিতে পাকা ধান
নুয়ে পড়েছে।
এতে ধান তুলতে পারলেও গুণগত মান নষ্ট হয়ে যাবে। বিরল উপজেলার মাধববাটি
এলাকার কৃষক হোসেন বলেন, আগাম সবজি ও আলু করেছি লাভের আশায়।
কিন্তু এই বৃষ্টি সব শেষ করে দিল। আলু ক্ষেত পানিতে ডুবে আছে। আলু
যেগুলো লাগানো হয়েছে আর বৃষ্টি হলে সব আলু পচেঁ যাবে। সবজি
ক্ষেতেও বিজগুলো পানিতে পচেঁ যাওয়া শুরু করছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক প্রদীপ কুমার গুহ বলেন,
যেসব জমির ধানে সবেমাত্র শিষ এসেছে বা বের হয়নি, ওই জমির ধানের
কিছুটা ক্ষতি হতে পারে। পাশাপাশি আলুখেতে পানি জমে থাকায় চাষিরা
কিছুটা ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়তে পারেন। চলতি মৌসুমে জেলায় ২ লাখ ৩৭
হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষাবাদ হয়েছে বলে কৃষি অফিস
জানায়।
দিনাজপুর অঞ্চল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ শাহ আলম
কৃষকের মাঠ পর্যবেক্ষন করতে এসে জানান, মাঠ পর্যবেক্ষণ করে আমরা
দেখলাম প্রায় ৬ হাজার হেক্টর জমির ধান, সবজি ও আলুর ক্ষতি হয়েছে।কৃষকদের নামের তালিকা করা শুরু হয়েছে। ক্ষতি পূরণ দেওয়ার জন্য আলোচনা
করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বার্তা প্রেরক
সম্পাদক ও প্রকাশক- মেহেদী হাসান
Copyright © 2024 Livenews24. All rights reserved.