অনলাইন ডেস্ক।।
কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলায় ৫ নম্বর সাক্ষী হাফেজ মোহাম্মদ আমিনের সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা শেষ হয়েছে।
মঙ্গলবার (৭ সেপ্টেম্বর) সকাল সোয়া ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত টানা সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা করা হয়। দিনব্যাপী কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইলের আদালতে হাফেজ মোহাম্মদ আমিনকে নিয়ে এ সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়। এ নিয়ে এ পর্যন্ত পাঁচ সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হলো।
আদালত প্রাঙ্গণ থেকে বেরিয়ে আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট রানা দাশ গুপ্ত জানান, ‘সিনহা হত্যা মামলার ৫ নম্বর সাক্ষী হাফেজ মোহাম্মদ আমিন একজন বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিক। ঘটনার সময় এই সাক্ষী মসজিদের ছাদ থেকে হত্যাকাণ্ডের সবকিছু দেখেছেন বলে আদালতকে যে তথ্য দিয়েছেন তা সঠিক নয়। কারণ, সে যে মসজিদে চাকরি করে সেই মসজিদের পরিচালনা কমিটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকের নামও জানেন না। সুতরাং তার সাক্ষ্য দেওয়ার আইনগত কোনো অধিকার নেই’।
বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর জানান, ‘রোহিঙ্গা বলে কি তার কোনো চোখ নেই? সে প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশি। তিনি যে মসজিদে চাকরি করেন, সেই মসজিদে কোনো কমিটি নেই। তাই মসজিদ কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম জানার প্রশ্নই ওঠে না’।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ফরিদুল আলম জানান, ‘মামলার ৫ নম্বর সাক্ষী আদালতকে যথার্থ বলেছেন। সে রোহিঙ্গা নাগরিক নয়, সে বাংলাদেশি নাগরিক। এ ছাড়া কোনো হত্যাকাণ্ডের দৃশ্য নিজ চোখে দেখেছেন। কারণ, সেদিন মাগরিবের নামাজের পর মসজিদের ছাদে উঠে ছিলেন ঈদুল আযহার চাঁদ দেখার জন্য। এ সময় সাক্ষী হাফেজ মোহাম্মদ আমিন হত্যাকাণ্ডের সব ঘটনা দেখেছেন। তাকে রোহিঙ্গা বলার কোনো যুক্তি নেই। এটি মামলাকে ভিন্ন খাতে নেওয়ার আসামিপক্ষের কৌশল। তাই, কেউ বিভ্রান্ত হবেন না’।
এদিকে মেজর সিনহা হত্যা মামলার আসামি বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশকে কারাবিধি অনুযায়ী সব সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার আদেশ দিয়েছেন আদালত। মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের সময় প্রদীপের আইনজীবী রানা দাশ গুপ্তের ডিভিশন চেয়ে আবেদনের প্রেক্ষিতে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইলের আদালত এ আদেশ দেন।
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মামলার আসামি বরখাস্ত ওসি প্রদীপসহ সব আসামিদের পুলিশের কড়া নিরাপত্তায় আদালতে আনা হয়। গত রবিবার মোহাম্মদ আলী ৩ নম্বর সাক্ষী হিসাবে আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ করেন। এ ছাড়া গত ২৩ থেকে ২৫ আগস্ট টানা তিন দিন মামলার ১ নম্বর সাক্ষী ও বাদী শারমিন সাহরিয়া ফেরদৌস এবং ২ নম্বর সাক্ষী সাহেদুল ইসলাম সিফাতের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ করে আদালত।
গত বছর ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান।
এ ঘটনায় সে সময় সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদী হয়ে টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের সাবেক ইনচার্জ পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ নয় পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলায় প্রধান আসামি করা হয় লিয়াকত আলীকে।
সম্পাদক ও প্রকাশক- মেহেদী হাসান
Copyright © 2024 Livenews24. All rights reserved.