ডেস্ক রিপোর্ট।।
আমার মেয়ে কম্পা (১৪) কোথায়, আপনার আমার কম্পাকে (কল্পনা রাণী বর্মণ) ফিরেয়ে দিন, ফিরিয়ে দিন। আমি আমার কম্পাকে চাই।’ আদরের কিশোরী মেয়ের নাম বলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল মর্গের সামনে উচ্চস্বরে কান্না করছিলেন বাবা পরভা চন্দ্র বর্মন। পাশ থেকে তাকে মিছে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন স্ত্রী ও ছেলে।
পরভা চন্দ্র বর্মন বলেন, গতকাল (বৃহস্পতিবার) সন্ধ্যায় আমাকে ফোন করে বলল, ফ্যাক্টরিতে আগুন লাগছে। আমার মেয়ে কল্পনা রাণী বর্বণ ওখানে কাজ করত। এরপর সেখানে গিয়ে দেখি আগুন জ্বলছে। সারারাত ছিলাম। মেয়ের খবর পাইনি।
‘এরপর আজকে জানাইলো, যারা মারা গেছে, তাদের লাশ ঢাকা নিয়ে যাচ্ছে। প্রথমে ঢাকা মেডিকেলে এসে বিভিন্ন জায়গায় খুঁজেছি। তারপর এখানে (মর্গে) এলাম।’
ঢামেক হাসপাতালে পরভা চন্দ্রের সঙ্গে এসেছেন তার স্ত্রী সুমা রাণী বর্মণ ও ছেলে। মেয়ের খোঁজ পাওয়ার আশায় মর্গের সামনেই দাঁড়িয়ে আছেন তারা।
কল্পনা রাণী বর্মণের ভাই জানান, তাদের গ্রামের বাড়ি মৌলভীবাজার। ওখানেই থাকেন। কিছুদিন আগে নারায়ণগঞ্জের বড়পা এলাকায় তার নানির বাড়ি ঘুরতে এসেছিল কম্পা। স্কুল বন্ধ, তাই ৬ দিন আগে এ ফ্যাক্টরিতে (হাসেম ফুড বেভারেজ) কাজে যোগ দিয়েছে। ওখানে তার বোন চকলেট প্যাকেজিংয়ের কাজ করতো। যখন শুনেছে যে কারখানায় আগুন লেগেছে, এরপর যাওয়ার পরে কোনো খোঁজ পায়নি। আজকে এখানে এসেছেন, কিন্তু এখন পর্যন্ত বোনের খোঁজ পাননি বলে তিনি জানান।
জানা গেছে, ওই কারখানায় মারা যাওয়াদের মধ্যে অধিকাংশই শিশু শ্রমিক। এ পর্যন্ত ৫২ জন মারা গেছে। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার (8 জুলাই) বিকেলে আগুর লাগার পর আতঙ্কে তিনজন লাফিয়ে পড়েড় মারা যান। এরপর শুক্রবার ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা উদ্ধার অভিযান চালিয়ে একে একে ৪৯ জনের মরদেহ বের করে আনেন। মরদেহগুলো পুড়ে শনাক্তের অনুপযোগী হওয়ায় ঢামেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এখন স্বজনদের ডিএনএ সংগ্রহ করে মরদেহ শনাক্ত করা হবে।
সম্পাদক ও প্রকাশক- মেহেদী হাসান
Copyright © 2024 Livenews24. All rights reserved.