অনলাইন ডেস্ক |
পুরোদস্তুর সুস্থ ইমরান প্রতিদিন সকালেই বেরিয়ে পড়ে বাসা থেকে। কর্মস্থলে কাজ শেষে প্রায়ই ফেরেন রাত সাড়ে ৭টা-৮টার মধ্যে। কিন্তু আজ আর ফিরতে পারেননি ইমরান। নিজ কর্মস্থল বেঙ্গল মিটের ঠিক বিপরীত পাশের ভবনের নিচতলা থেকে সন্ধ্যায় আকস্মিক বিস্ফোরণে পুড়ে গেছে তার পুরো শরীর। আজ তার ঠাঁই হয়েছে ঢাকা মেডিকেল বার্ন ইউনিটে।
রোববার (২৭ জুন) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে রাজধানীর মগবাজার ওয়্যারলেস গেট এলাকার আড়ং শো রুমের ঠিক বিপরীতের একটি ভবনের নিচতলা থেকে বিকট শব্দে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ওই বিস্ফোরণের পর অন্তত ছয়জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
একই ঘটনায় অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত ও দগ্ধ হয়েছেন। তাদের মধ্যে ১৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আহতদের ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিট এবং আশপাশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। কেবল ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগেই নেওয়া হয়েছে ৩৯ জনকে।
একই ঘটনার নির্মম শিকার বেঙ্গল মিটের সেলসম্যান মো. ইমরান হোসেন। ঢামেক বার্ন ইউনিটের সামনে থেকে কথা হয় বোন আইরিনের সঙ্গে। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, মগবাজারের বেঙ্গল মিটে দুই বছর ধরে সেলসম্যান হিসেবে কর্মরত। ভাইয়া মাত্র তিন বছর আগে বিয়ে করেছেন। আমরা মগবাজারেই থাকি। ভাইয়া থাকেন শান্তিনগরে।
প্রতিদিনের মতো আজও ভাই সকালেই বেরিয়ে পড়েছিল। হয়ত তিনি ফিরতেন একটু পরেই। আমরা আজ শান্তিনগরের বাসাতেই ছিলাম। কিন্তু তার আর ফেরা হলো না। খবর পেলাম ভাই দগ্ধ হয়েছেন। ঢামেক বার্ন ইউনিটে ভর্তির খবরে ভাবি তামান্না ও মা’সহ ছুটে আসি।
বোন আইরিন ও স্ত্রী তামান্না আহাজারি করে বলেন, ভাইয়াকে চিনেছি, কিন্তু চিনতে খুব কষ্ট হয়েছে। এভাবে আজ ভাইয়াকে দেখতে হবে ভাবিনি। ভাইয়ের পুরো শরীর রক্তাক্ত ও পোড়া। ভাইয়ার কষ্ট হচ্ছে। সবার দোয়া কামনা করেন তিনি।
পাশেই স্ত্রী তামান্না বার বার মুর্ছা যাচ্ছেন। তিনি শুধু বলছেন, আমার সুস্থ সবল স্বামীকে তোমরা ফিরাইয়া দাও।
এ ব্যাপারে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন পার্থ শংকর পাল বলেন, ইমরানের শরীরের ৯০ শতাংশ পুড়ে গেছে। তার অবস্থা অনেক বেশি আশঙ্কাজনক। তার অবস্থা যেকোনো সময় অবনতি ঘটতে পারে।
সম্পাদক ও প্রকাশক- মেহেদী হাসান
Copyright © 2024 Livenews24. All rights reserved.