প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্বে আড়াই কোটি মানুষ চাকরি হারাবে, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার একটি গবেষণায় এই তথ্য উঠে এসেছে।
করোনা শুধু জীবন ও স্বাস্থ্যেই প্রভাব ফেলছে না, এই ভাইরাস সংক্রমণের প্রভাব পড়েছে অর্থনীতিতেও। যার ফলে ব্যবসা বাণিজ্য নিম্নমুখী এবং কর্মীরা বেশ বাজেভাবে আতঙ্কে ভুগছে।
যুক্তরাজ্যে জীবন এখন স্থবির, ফার্মগুলো ইতোমধ্যে আশঙ্কা জানিয়েছে হাজারো মানুষের চাকরি চলে যেতে পারে।
বাবা-মাকে সাথে নিয়ে যুক্তরাজ্যের নিউক্যাসল থেকে লিডসে ফিরে যেতে বাধ্য হয়েছেন হলি ইয়েরি।২৮ বছর বয়সী এই নারীর স্বপ্নের চাকরি ছিল রেস্তোরা ও বারের ব্যবস্থাপক হিসেবে কাজ করা।
তার চাকরি চলে গেছে এবং তিনি বলছেন, এই ব্যাপারে তার কোনও রাগ নেই, তিনি কাউকে দোষ দিচ্ছেন না।
ভাইরাসের কারণে অপ্রয়োজনীয় ভ্রমণ বাতিল করার যে পরার্মশ ব্রিটিশ সরকার দিয়েছে তার পরপরই প্রচুর অর্ডার ক্যানসেল হতে থাকে একে একে। তখন রেস্তোরাঁ কর্তৃপক্ষ অর্ধেকের মতো কর্মী ছাঁটাই করে।
তবে ইয়েরি একজন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ইংরেজি শিক্ষকও বটে।
তিনি মনে করছেন বেশ কয়েকমাসে রেস্তোরা, ভ্রমণ বা এই সংক্রান্ত যেসব চাকরি আছে সেগুলো টিকবে না।
যুক্তরাজ্যজুড়ে এমন অনেক উদাহরণ আছেন যারা জানেন না পরবর্তী চার থেকে পাঁচ মাস কীভাবে চলবে।
দক্ষিণ পশ্চিম লন্ডনে বাস করা টম ডানোসিয়াস নামে এক ব্যক্তি চাকরি হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন, তিনি মাসে ৮০০ পাউন্ড ভাড়া ও নানাবিধ বিল দেন।
তিনি বলেন, আমার কিছু জমা টাকা আছে, কিন্তু সর্বোচ্চ দুই মাস চলতে পারবো সে টাকা দিয়ে'।
ব্যবসা বিষয়ক উপদেষ্টা বব ডোনেলান আরও ছয় মাসের জন্য চাকরিচ্যুত হয়েছেন।
‘মার্চের শেষেই আমার চুক্তি শেষ হয়ে যাবে, এরই মধ্যে করোনাভাইরাস এলো এবং কোম্পানিও কর্মী ছাটাই করছে। অতএব আমার এই চুক্তি সামনে এগোনোর কোনো সম্ভাবনা নেই’।
ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন যদিও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, আপনারা কর্মীদের পাশে থাকুন।
কিন্তু বাস্তবতা কঠিন, প্রায় ৩৫০ বিলিয়ন ডলারের একটি প্যাকেজও করেছেন চ্যান্সেলর রিশি সুনাক।
এই প্যাকেজের লক্ষ্য হবে মানুষের চাকরি বাঁচানো, পাঁচ ভাগের চার ভাগ বেতনও দেবে সরকার, মাসে ২৫০০ পাউন্ড বেতন দেওয়ার পরিকল্পনা আছে এই প্যাকেজে।
বাংলাদেশের একজন গার্মেন্টস কর্মীর সাথে কথা হচ্ছিল, যদিও এখনো তিনি কাজ করছেন তবে তিনি শঙ্কায় আছেন যেকোনো সময় চাকরি চলে যেতে পারে তার।
‘গত বছর এই সময় ছিল ৩০০ কোটি টাকার অর্ডার ছিল, এই বছর একই সময়ে ১শ’ কোটি টাকায় নেমে আসে’।
তিনি যোগ করেন, যে এলাকায় তিনি কাজ করছেন আশে-পাশের পোশাক কারখানায় চাকরি যাওয়ার খবর তিনি পাননি। এখনও বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরুর দিকে এবং খুব বড় সংখ্যায় না।
ব্যক্তিগত কারণে তিনি নাম ও পরিচয় প্রকাশ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। খবর: বিবিসি বাংলা।
সম্পাদক ও প্রকাশক- মেহেদী হাসান
Copyright © 2024 Livenews24. All rights reserved.