রেকর্ড সংখ্যায় চাকরি ছাড়ছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কর্মীরা। মার্কিন শ্রম বিভাগের সর্বশেষ জব ওপেনিং এবং লেবার টার্নওভার জরিপে (JOLTS) দেখা গেছে যে, আগস্ট মাসে ৪৩ লাখ আমেরিকান চাকরি ছেড়েছে। এই সংখ্যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত সমস্ত কর্মীর ২.৯ শতাংশ, যা সর্বোচ্চ চাকরি ছাড়ার রেকর্ড।
এদিকে, আগস্টে যুক্তরাষ্ট্রে চাকরির সংস্থান সামান্য কমে ১০.৪ মিলিয়ন বা ১ কোটি ৪ লাখে নেমে এসেছে, জুলাইয়ে যা ১১.১ মিলিয়ন (১ কোটি ১১ লাখ) ছিল।
চাকরি ছাড়ার এই উচ্চ হার সাধারণত আমেরিকান কর্মীরা তাদের চাকরির সম্ভাবনা সম্পর্কে কতটা আত্মবিশ্বাসী তার দিকেই ইঙ্গিত করে। কিন্তু এবারের তথ্যে গভীরভাবে ডুব দিলে বোঝা যায় যে, কোভিড-১৯ এর ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত হওয়ার ভয়ও শ্রমিকদের চাকরি ছাড়ার কারণ হতে পারে।
বাসস্থান এবং খাদ্য পরিষেবা খাতে গ্রাহকদের মুখোমুখি হয়ে কাজ করতে হত এমন প্রায় ৮,৯২,০০০ কর্মী আগস্টে কোভিড সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন, যা আগের মাসের তুলনায় ১,৫৭,০০০ বেশি।
চাকরি ছেড়ে চলে যাওয়া লোকের সংখ্যা এবং চাকরির শূন্যপদের সংখ্যা যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের জন্যও উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে।
গত বছর কোভিড লকডাউনের প্রথম ঢেউয়ে ২২ মিলিয়ন (২ কোটি ২০ লাখ) মানুষ চাকরি হারিয়েছিলেন, তাদের মধ্যে এখনও প্রায় ৫০ লাখ মানুষকে চাকরি দেওয়া সম্ভব হয়নি। কিন্তু ন্যাশনাল ফেডারেশন অব ইন্ডিপেন্ডেন্ট বিজনেসের এক জরিপে দেখা গেছে, ৫১ শতাংশ ক্ষুদ্র ব্যবসার মালিক বলেছেন যে, তাদের প্রতিষ্ঠানে চাকরির সুযোগ আছে কিন্তু সেপ্টেম্বরের মধ্যে তা পূরণ করার জন্য লোক পাওয়া যাবে না।
শ্রমিকদের কাজে যোগ দিতে প্রলুব্ধ করার জন্য বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সাইনিং বোনাস এবং মজুরি বাড়ানোর মতো প্রণোদনা দিয়ে আসছে। প্রায় ৪২ শতাংশ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী বলেছেন যে, তারা গত মাসে বেতন ভাতা বাড়িয়েছেন। এটি আগস্ট থেকে এক পয়েন্ট উপরে এবং ৪৮ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা, শিশুদের যত্নের ব্যবস্থার অভাব এবং মার্কিন সরকারের উদ্দীপক ডলারে পূর্ণ সঞ্চয়ী হিসাব সবই শ্রমিকদের চাকরি ছাড়ার সম্ভাব্য কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
তবে নিঃসন্দেহে চাকরির বাজার কিছু সম্ভাব্য বিপদের সম্মুখীন হতে যাচ্ছে।
ফেডারেল বেকারত্বের সুবিধাদিও সেপ্টেম্বরের শুরুতে শেষ হয়ে গেছে, মার্কিন শ্রম বিভাগের মাসিক চাকরির তথ্য সংকলনের এক সপ্তাহ আগে; তাই সামাজিক নিরাপত্তা জালে সেই শূন্যতার প্রভাব এখনও নতুন তথ্যে দেখা যায়নি।
এবং কনফারেন্স বোর্ডের ভোক্তাদের আস্থার পরিমাপ- যা বর্তমানে অর্থনীতি সম্পর্কে এবং ভবিষ্যতের প্রত্যাশা সম্পর্কে মানুষ কেমন অনুভব করে তাও নির্ধারণ করে- তাতে আগস্টের তীব্র পতনের পর সেপ্টেম্বরেও পতন ঘটেছে।