Friday, April 26, 2024
HomeScrolling৬৪% রোগী ওষুধ সেবন করে না

৬৪% রোগী ওষুধ সেবন করে না

বিশ্ব উচ্চ রক্তচাপ দিবস-

বাংলাদেশে ১৮ বছর বয়সী ঊর্ধ্ব যে ২১ শতাংশ মানুষ উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত, তাদের মাত্র ১ শতাংশ রোগী সরকারি চিকিৎসা পাচ্ছে। সে হিসাবে তিন কোটি রোগীর মধ্যে সরকারিভাবে নিবন্ধিত হয়েছে ৮৯ হাজারের মতো এবং এসব রোগীর ৫৪টি উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে নিয়মিতভাবে এক মাসের ওষুধ দেওয়া হচ্ছে এবং ফলোআপ করা হচ্ছে।

সরকার আগামী ২০২৩ সালের মধ্যে রোগটির প্রাদুর্ভাব ২৫ শতাংশ কমিয়ে আনতে ২০১৮ সাল থেকে পাঁচ বছর মেয়াদি জাতীয় লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। অথচ লক্ষ্যমাত্রার ৪৪২টি উপজেলার মধ্যে এখন পর্যন্ত মাত্র ২০০ উপজেলায় এনসিডি (নন-কমিউনিকেবল বা অসংক্রামক ব্যাধি) কর্নার স্থাপন করা গেছে। এসব উপজেলার স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে অনিয়মিতভাবে রোগীদের বিনামূল্যে ওষুধ দেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে ৮০ উপজেলায় ডিজিটাল কর্নারে রোগীর তথ্য সংগ্রহ শুরু হয়েছে। আর গত চার বছরে ৫৪ উপজেলায় মাত্র এক লাখের মতো রোগীকে নিবন্ধনের আওতায় আনতে পেরেছে সরকার।

এসব রোগীকে সরকার তিনটি ওষুধ বিনামূল্যে দিচ্ছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, মৌলিক সাত-আট ধরন ও সমন্বিত ওষুধ মিলে বাজারে ১০-১২ রকমের উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ আছে। এর মধ্যে সরকার বিনামূল্যে দিচ্ছে তিন রকম অ্যামলোডিপাইন, লোসারটান ও হাইড্রোক্লোরোথায়াজাইড। এর মধ্যে প্রথম দুটো সরকারি ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান এসেনসিয়াল ড্রাগস থেকে দেওয়া হয় ও তৃতীয়টা সরকারি অপারেশন প্ল্যান থেকে উপজেলাগুলোতে সরবরাহ করে।

চিকিৎসকরা আরও জানিয়েছেন, অন্যান্য সরকারি হাসপাতালে উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ সরবরাহ থাকলেও সেখানে রোগটির আলাদা চিকিৎসা নেই। এমনকি ৫৪ উপজেলার বাইরে অন্যান্য উপজেলায় এখনো নিয়মিতভাবে ওষুধ পাচ্ছে না রোগীরা।   সরকারি সার্ভিলেন্স ও বেসরকারি গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, দেশে উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত অর্ধেক নারী (৫১%) এবং দুই-তৃতীয়াংশ পুরুষই (৬৭%) জানে না যে তাদের উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে। উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত অধিকাংশ রোগীই (৬৪%) কোনো ওষুধ সেবন করে না। এমনকি প্রতি ১০টি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ৭টিতে উচ্চ রক্তচাপজনিত চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়। তবে উচ্চ রক্তচাপ নির্ণয় ও ব্যবস্থাপনা গাইডলাইন রয়েছে মাত্র ১৭ শতাংশ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। প্রশিক্ষিত কর্মী রয়েছে মাত্র ২৯ শতাংশ স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে।

সর্বশেষ ‘বাংলাদেশ এনসিডি স্টেপস সার্ভে ২০১৮’ ও ‘বাংলাদেশ ডেমোগ্রাফিক অ্যান্ড হেলথ সার্ভে ২০১৭-১৮’ থেকে এবং এসব সার্ভের সঙ্গে যুক্ত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে উচ্চ রক্তচাপের সরকারি চিকিৎসার এমন চিত্র পাওয়া গেছে।

এ ব্যাপারে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের হাইপারটেনশন কন্ট্রোল প্রোগ্রামের (জাতীয় কর্মসূচির) ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার এবং হাসপাতালের ডিপার্টমেন্ট অব ইপিডেমিওলজি অ্যান্ড রিসার্চের রিসার্চ ফেলো ডা. শামীম জুবায়ের দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘গত এক-দেড় বছরে কাজ করে প্রায় এক লাখ রোগীকে এ সুবিধা দিতে পারছি। ৫৪ উপজেলায় বিনামূল্যে ওষুধ দেওয়া হচ্ছে, তাতে দেখা যাচ্ছে যে ২১ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত, তাদের মাত্র ১ শতাংশ চিকিৎসার আওতায় এসেছে। যেহেতু একেবারেই নতুন কর্মসূচি, তাই আশা করছি ধীরে ধীরে সচেতনতা বাড়বে। তখন হয়তো সর্বোচ্চ ৫-৬ শতাংশ রোগী এ সুবিধার আওতায় আসবে। বাকি যে লোকগুলো তাদের কিছু অংশ ব্যক্তিগত খরচে চিকিৎসা নেবে, কিছু অংশ মাঝেমধ্যে ওষুধ খাবে ও কিছু অংশ খাবে না।’

অবশ্য উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সরকারি অর্জন বেশ ভালো বলে মনে করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন। তিনি দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আমাদের অর্জন বেশ ভালো। দুই বছরের মধ্যে লাখখানেক রোগীর রেজিস্ট্রেশন করতে পেরেছি, এটা কোনো দেশ পেরেছে কি না সন্দেহ আছে। কিন্তু আমাদের লক্ষ্য ৪২২টি উপজেলা। এখনো আমরা অর্ধেক উপজেলা কাভার দিতে পেরেছি। আগামী বছর বাকি ২০০ উপজেলা কাভার দিতে পারি, তাহলে বলতে পারব সবখানে পৌঁছানো গেছে। আমাদের লক্ষ্য ২০২৩ সাল। এছাড়া আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে আমরা উচ্চ রক্তচাপ অথবা ডায়াবেটিসের কারণে ৩০-৭০ বছর বয়সী যে ২২ শতাংশ মানুষের মৃত্যু হচ্ছে, সেই মৃত্যু এক-তৃতীয়াংশ কমিয়ে আনতে চাই।’

এ কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘সরকার উপজেলাগুলোতে এনসিডি কর্নারের মাধ্যমে উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের তিনটি ওষুধ বিনামূল্যে দিচ্ছে, ডায়াগনসিস করার জন্য ও রক্তচাপ মাপার জন্য যন্ত্রপাতি দিচ্ছে। বর্তমানে ২০০ উপজেলায় এনসিডি ম্যানেজমেন্টসহ ওষুধ সরবরাহ করছি। এর মধ্যে ৮০ উপজেলায় ডিজিটালাইজেশনভাবে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। ৫৪ উপজেলা থেকে ইতিমধ্যে তথ্য পাচ্ছি এবং এসব উপজেলায় ৮৯ হাজার রোগীর রেজিস্ট্রেশন আছে। বাকি উপজেলাগুলোতে ধাপে ধাপে করে ফেলব। আগামী বছর অনুদান পেলে এনসিডি কর্নার করে সারা বাংলাদেশ কাভার দিতে পারব। আশা করছি এ বছর ২৫০ উপজেলা ডিজিটালাইজেশন করতে পারব।’

৫ জনে ১ জন আক্রান্ত : সর্বশেষ সরকারি জরিপ ‘বাংলাদেশ এনসিডি স্টেপস সার্ভে, ২০১৮’-তে ‘বাংলাদেশে উচ্চ রক্তচাপ পরিস্থিতি উদ্বেগজনক’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। জরিপের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রতি পাঁচজনে একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত, যা মোট প্রাপ্তবয়স্ক জনসংখ্যার ২১ শতাংশ। সে হিসাবে তিন কোটি মানুষ এ রোগে ভুগছে।

অন্যদিকে ‘বাংলাদেশ ডেমোগ্রাফিক অ্যান্ড হেলথ সার্ভে ২০১৭-১৮’ অনুযায়ী, ২০১১ থেকে ২০১৭-১৮ সাল সময়ের মধ্যে, অর্থাৎ ছয় বছরে ৩৫ বছর ও তদূর্ধ্ব জনগোষ্ঠীর মধ্যে উচ্চ রক্তচাপের প্রকোপ উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে পুরুষের মধ্যে ২০ থেকে বেড়ে ৩৪ শতাংশে এবং নারীর ক্ষেত্রে ৩২ থেকে ৪৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।

নারীরা বেশি আক্রান্ত : ‘বাংলাদেশ এনসিডি স্টেপস সার্ভে, ২০১৮’ অনুযায়ী, দেশে পুরুষের তুলনায় নারীরা বেশি উচ্চ রক্তচাপে ভুগছে নারী ২৪ দশমিক ১ শতাংশ ও পুরুষ ১৭ দশমিক ৯ শতাংশ। আক্রান্তদের মধ্যে ওষুধ গ্রহণের মাধ্যমে রোগটি নিয়ন্ত্রণে রেখেছে মাত্র ১৪ শতাংশ অর্থাৎ প্রতি সাতজনে একজনেরও কম।

অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতা রয়েছে এমন নারীদের ৪৯ শতাংশ ও পুরুষদের ৪২ শতাংশ উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত। অথচ স্বাভাবিক ওজনের নারী এবং পুরুষের মধ্যে এ হার যথাক্রমে ২৫ ও ২৪ শতাংশ। এ দুই জরিপের তথ্য বিশ্লেষণ করে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বর্তমানে যে তিন কোটি মানুষ উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত, ২০৩০ সাল নাগাদ এ সংখ্যা ৩ কোটি ৮০ লাখে দাঁড়াতে পারে।

গ্লোবাল বার্ডেন অব ডিজিজ স্টাডি (জিবিডি) ২০১৯-এর তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে মৃত্যু এবং পঙ্গুত্বের প্রধান তিনটি কারণের একটি উচ্চ রক্তচাপ। বাংলাদেশে বছরে যে ২ লাখ ৭৭ হাজার মানুষ হৃদরোগজনিত অসুস্থতায় মারা যাচ্ছে, তার অন্যতম প্রধান কারণ উচ্চ রক্তচাপ।

বিশ্বে ৩০ বছরে বেড়েছে ৬৩ কোটি রোগী : বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং ইমপেরিয়াল কলেজ লন্ডনের সর্বশেষ ২০১৯ সালের যৌথ গবেষণার ফলাফল অনুযায়ী, গত ৩০ বছরে (১৯৯০-২০১৯) বিশ্বে ৩০-৭৯ বছর বয়সী জনগোষ্ঠীর মধ্যে ৬৩ কোটি উচ্চ রক্তচাপের রোগী বেড়েছে। অর্থাৎ ১৯৯০ সালের ৬৫ কোটি থেকে রোগী ২০১৯ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২৮ কোটিতে। এ সময় রোগটির প্রকোপ ধনী দেশগুলো থেকে কমে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে বেড়েছে। ২০১৯ সালে কানাডা, পেরু এবং সুইজারল্যান্ডের মতো ধনী দেশগুলোতে বিশ্বের সর্বনিম্ন উচ্চ রক্তচাপের প্রকোপ ছিল। অন্যদিকে ডমিনিকান রিপাবলিক, জ্যামাইকা ও প্যারাগুয়েতে নারী এবং হাঙ্গেরি, প্যারাগুয়ে ও পোল্যান্ডে পুরুষ জনগোষ্ঠীর মধ্যে রোগটির সর্বোচ্চ হার ছিল।

গবেষণার তথ্যমতে, উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত ১০০ কোটিরও বেশি মানুষের (৮২%) বসবাস নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশে। উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত ৪৬ শতাংশ রোগী জানে না যে তার উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে। উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত ৭২ কোটি অর্থাৎ অর্ধেকেরও বেশি রোগী প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পায় না। তাদের মধ্যে নারী ৫৩ ও পুরুষ ৬২ শতাংশ।

৫ গ্রামের বেশি লবণ নয় : রোগটি নিয়ন্ত্রণে পরামর্শ দিয়ে ডা. শামীম জুবায়ের বলেন, ‘১৮ বছর বা তদূর্ধ্ব বয়সী মানুষকে অবশ্যই রক্তচাপ পরিমাপ করতে হবে। যদি রক্তচাপ নরমাল থাকে, তাহলে আবার ছয় মাস পরে মাপতে হবে। আর যদি রক্তচাপের রোগী হিসেবে চিহ্নিত হন, তাহলে অবশ্যই নিয়মিত ওষুধ খেতে হবে। ওষুধ নিয়মিত খেলে রোগটি নিয়ন্ত্রণে থাকবে এবং কোনো ধরনের জটিলতা তৈরি হবে না।’

এ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক আরও বলেন, ‘শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। কারণ যেহেতু শরীর হার্ট পাম্প করে, অতিরিক্ত ওজন হলে হার্ট সঠিকভাবে পাম্প করতে পারে না। এর ফলে রক্ত গোটা শরীরে প্রবাহিত হতে পারে না। তেল-চর্বি জাতীয় খাবার, অর্থাৎ কোলেস্টেরল বৃদ্ধি করে বা যার সঙ্গে সরাসরি ফ্যাটি এসিডের সম্পর্ক, সে জাতীয় খাবার পরিহার করতে হবে। কারণ এসব খাদ্যের কারণে রক্তনালি ব্লক হয়ে যেতে পারে।’

বিশেষ করে লবণ খাওয়ার ক্ষেত্রে খুবই সতর্ক থাকতে হবে বলে জানান ডা. শামীম জুবায়ের। তিনি বলেন, ‘লবণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ কমপোনেন্ট যেটা এককভাবে উচ্চ রক্তচাপ ও স্ট্রোক নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারবে। একজন সুস্থ মানুষ কাঁচা লবণ বা রান্নায় ব্যবহৃত লবণসহ সারা দিনে ৫ গ্রাম লবণ খেতে পারবে। অথচ দেশের মানুষ দিনে প্রায় ৯-১০ গ্রাম লবণ খায়। জাপান, ফিনল্যান্ডসহ যেসব দেশে লবণের সমস্যা ছিল, সেসব দেশে লবণ খাওয়াকে দারুণভাবে নিয়ন্ত্রণ করে স্ট্রোক ১০ থেকে ১ শতাংশে নামিয়ে এনেছে।’

লক্ষণ ও ঝুঁকি : চিকিৎসকরা জানান, রক্ত চলাচলের সময় ধমনির ভেতরের গায়ে যে পার্শ্বচাপ তৈরি হয় তাকে রক্তচাপ বলে। রক্তচাপ যদি স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে অনেক বেড়ে যায় তাহলে তাকে উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশন বলে। রক্তচাপ সাধারণত দুটি মাত্রা বা সংখ্যার মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়। প্রথম সংখ্যাটি সিস্টোলিক, যা হৃৎপিণ্ড সংকুচিত হয়ে রক্তনালিতে যে চাপ তৈরি হয় তা বোঝায়। দ্বিতীয় সংখ্যাটি ডায়াস্টোলিক, যা হৃৎপিণ্ডের প্রসারণের সময়ে রক্তনালিতে চাপ বোঝায়। স্বাভাবিক অবস্থায় একজন প্রাপ্তবয়স্ক সুস্থ মানুষের রক্তচাপের পরিমাপ ১২০/৮০ মি.মি. পারদচাপ ধরা হয়ে থাকে। রক্তচাপের এ মাত্রা দুটি ভিন্ন দিনে ১৪০/৯০ মি.মি. পারদচাপ বা তার বেশি হলে বুঝতে হবে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে। তবে বয়স নির্বিশেষে রক্তচাপ কিছুটা কম বা বেশি হতে পারে। ডায়াবেটিস ও কিডনি রোগীদের ক্ষেত্রে ১৩০/৮০ মি.মি. পারদচাপ এর অধিক হলে তা উচ্চ রক্তচাপের পর্যায়ে পড়তে পারে।

চিকিৎসকরা আরও জানান, অধিকাংশ সময় উচ্চ রক্তচাপের নির্দিষ্ট কোনো লক্ষণ এবং উপসর্গ থাকে না। এজন্য উচ্চ রক্তচাপকে নীরব ঘাতক বলা হয়। তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে সকালের দিকে মাথাব্যথা, নাক দিয়ে রক্ত পড়া, হৃৎপিণ্ডের অনিয়মিত ছন্দ, দৃষ্টিতে পরিবর্তন এবং কানে গুঞ্জন অনুভূতি ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দিতে পারে। অত্যধিক উচ্চ রক্তচাপ ক্লান্তি, বমি বমি ভাব, বমি, বিভ্রান্তি, উদ্বেগ, বুকে ব্যথা এবং পেশি কম্পনের কারণ হতে পারে। উচ্চ রক্তচাপে ধমনি শক্ত হয়ে হৃৎপিণ্ডে রক্ত ও অক্সিজেনের প্রবাহ হ্রাস পেতে পারে। ফলে বুকে ব্যথা বা অ্যানজাইনা, হার্ট অ্যাটাক, হার্ট ফেইল এবং হার্ট বিট অনিয়মিত হতে পারে। উচ্চ রক্তচাপের কারণে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ অর্থাৎ স্ট্রোক হতে পারে। এছাড়াও উচ্চ রক্তচাপের কারণে কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, এমনকি বিকলও হয়ে যেতে পারে।

আজ বিশ্ব উচ্চ রক্তচাপ দিবস : বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশেও নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি পালিত হচ্ছে। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য বিষয়- রক্তচাপ সঠিকভাবে পরিমাপ করুন, এটি নিয়ন্ত্রণে রাখুন, দীর্ঘদিন বাঁচুন। ওয়ার্ল্ড হাইপারটেনশন লিগের সদস্য হিসেবে হাইপারটেনশন কমিটি অব ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ ২০০৬ সাল থেকে ১৭ মে দিবসটি পালন করে আসছে।

info-dr

RELATED ARTICLES
Continue to the category

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments