রবিউল হাসান।।
অনেকেই ভুলে গেছে সেই নব্বই দশকের সময়কার ভিসিআরের কথা। ভুলেতো থাকবই, বর্তমান যুগে ইউটিউব,ফেইস বুক, টিকটক, লাইকি এত্তসব এপস এর মধ্যে সেই সামান্য একটা ভিসিআর? আর তাও আবার ১৪” সাদাকালো? বর্তমান সময়ের অনেক ছেলে মেয়েরা হয়তবা বলবে ভিসিআর টা আবার কি? দেখতে কেমন? খায় না মাথায় দেয়?
আমরা যারা নব্বই দশকের শিশু কিশোর অথবা যুবক ছিলাম। তাদের কাছে ভিসিআর নামের এই বস্তুটা মহামূল্যবান সম্পদ ছিলো। তখন কোনো গ্রামে যদি শুনতাম ভিসিআর আসবে। সকাল থেকেই বন্ধুবান্ধব নিয়ে রেডি হয়ে থাকতাম। আর গ্রাম ভরে বলে বেড়াতাম ওই গ্রামে ভিসিআর আইবো, তুই যাবি না? আরে কার আনন্দ কে দেখে! ভিসিআরের খবর শুনলে আনন্দে আত্মহারা হয়ে যেতাম।
আর যদি পাশের বাড়ি অথবা নিজের বাড়িতে ভিসিআর আনার কথা শুনতাম। তাহলে কে দেখে কার আনন্দ। বাবার কাছ থেকে ৫টাকা মার কাছ থেকে ৫টাকা চাচার কাছ থেকে ৫টাকা এমন করে চাদা তুলে। গ্রামের সকলে মিলে যখন ভিসিআর দেখার জন্য উদ্যোগ নিতো । কতইনা আনন্দ হতো। চাচী বলতো জসিমের ছবি আনবি, ভাবি বলতো সাবানার ছবি আনবি, কেউ বলতো মান্নার ছবি আনবি।
বিকেলে যখন ভিসিআর নিয়ে অপারেটর গ্রামে ঢুকতো। তখন মনে হতো যেন নতুন বউ এসেছেগ্রামে। ছেলে বুড়ো ভিসিআর দেখতে চলে আসতো। সকলে ভিসিআরের দিকে অপলক তাকিয়ে থাকতো। আর কৌতুহলী হয়ে শুধু জানতে চাইতো কি ছবি আনছো? কি ছবি আনছো?
সন্ধে হলেই শুরু হতো ভিসিআর দেখার পালা। বাড়ির উঠোনটাকে প্রেক্ষাগৃহ বানিয়ে যে যার সুবিধা মতো জায়গা দখল করে বসে থাকতো। আর রাতভর চলতো সেই ভিসিআর, সিনেমা শেষ হলে অপারেটর আরেকটা সিনেমা চালিয়ে দিত।
১৪” অথবা ১৯”ইঞ্চির সাদাকালো টেলিভিশনটা দেখে যত আনন্দ পেতাম? এখন আর ৩০” বা ৫০ইঞ্চি” রঙিন টিভিতেও সেই আনন্দ পাইনা। তবে যুগের সাথে তাল মিলিয়ে এই রঙিন টিভি আর ফেইস বুক,ইউটিউব, টিকটকের সময়গুলোও অতিত হয়ে যাবে। আসবে নতুন এপস, নতুন প্রোগ্রাম নতুন দুনিয়া।
হারিয়ে গেছে সেই গ্রামীণ উৎসব- ভিসিআর
RELATED ARTICLES
Continue to the categoryRecent Comments
Hello world!
on