Friday, April 26, 2024
HomeScrollingশাজাহান খান মাদারীপুরে জামাত-বিএনপিকে পুনর্বাসন করেছেন’’ অন্যদিকে তাদের কুরুচিপূর্ন বক্তব্যকে মিথ্যা বলেছেন...

শাজাহান খান মাদারীপুরে জামাত-বিএনপিকে পুনর্বাসন করেছেন’’ অন্যদিকে তাদের কুরুচিপূর্ন বক্তব্যকে মিথ্যা বলেছেন শাজাহান খান

স্টাফ রিপোর্টার-মাদারীপুর।।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও সাংসদ শাজাহান খান মাদারীপুরে জামাত-বিএনপিকে পুনর্বাসন করেছে বলে মন্তব্য করেছেন মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদ মোল্লা। সোমবার রাতে জেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে ঐতিহাসিক ৬ দফা দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
অন্যদিকে এই বক্তব্যের প্রতিবাদের শাজাহান খান বলেন, যারা মিথ্যের উপর ভিত্তি করে রাজনীতি করে তারা সবই মিথ্যা বলে এই রাজনীতি ঠিকবে না। আমি কখনোই বিএনপি জামাতকে পূর্নবাসনতো দুরের কথা আমি তাদের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালে আগুন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে দাড়িয়ে ছিল কে’ তারা কি দাড়িয়েছিল ? দাড়িয়েছিলাম আমি। জীবনের ঝুকি নিয়ে ফাইট করেছিলাম আমি। তারা তখন কোথায় ছিল।’’

সাম্প্রতিক রাজৈর উপজেলার একটি আলোচনা সভায় মাদারীপুর জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি সাহাবদ্দিন মোল্লা, মাদারীপুুর- ২ আসনের এমপি, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের পিতা মৌলভী আচমত আলী খান মাদারীপুর জেলা আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন এবং মাদারীপুরে সংসদ সদস্য এবং বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠসহচর ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ছিলেন তাকে নিয়ে একটি মন্তব্য করেন, সেখানে বলেন, তার পিতা নামে সব কিছু করেছেন, তাছাড়া তার পিতার নামে স্বাধীনতা পদক এনেছেন। সেতো মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না। একথার প্রেক্ষিত্রে গত রবিবার বিকালে সম্মিলিত মুক্তিযোদ্ধা সংসদ প্রতিবাদ সভা করেন সেখান জেলা আওয়ামীলীগের বহিস্কার দাবী জানান এবং সোমবার রাতে মাদারীপুর জেলা আওয়ামীলীগের কার্যালয়ে ৬দফা অনুষ্ঠানের আলোচনা সভায় মাদারীপুুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদ মোল্লা বলেন, ‘শাজাহান খান ঢাকায় গিয়ে খালেদা জিয়াকে গালাগালি করে বক্তব্য দেন। আবার রাতেই মাদারীপুরে এসে আপনি জামাত-শিবির ও বিএনপিকে নিয়ে মিটিং করেন, তাদের পূর্ণবাসন করছেন। এসব কিন্তু ভাল লক্ষণ না। আমার কাছে এসবের প্রমাণ আছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগের লোক চিকিৎসার অভাবে ধুকে ধুকে মরে আপনি তাদের সহযোগিতা না করে। অথচ আপনি সোহ্রাওয়ার্দী হাসপাতালে গিয়ে বিএনপির লোকদের সহযোগিতা করেন। তাদের লাখ লাখ টাকা দেন সেই প্রমাণও আমাদের কাছে আছে।’
গত রোববার বিকেলে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির পদত্যাগের দাবি জানিয়ে প্রতিবাদ সভা করেছিল সাংসদ শাজাহান খান সমর্থিত মুক্তিযোদ্ধারা। এই প্রসঙ্গ টেনে শাহাবুদ্দিন আহমেদ মোল্লা বলেন, ‘শাজাহান খানের নেতৃত্বে আমার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সভা হয়েছে। সেই প্রতিবাদ সভায় সভাপতিত্ব করেন মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান হাওলাদার। কি তার পরিচয়? তিনি জাসদ ও বিএনপি করেছেন। বিএনপির এমন এক নেতা কী আওয়ামী লীগের সভাপতির পদত্যাগ চাইতে পারে? এটা যারা আমরা আওয়ামী লীগ করি তাদের জন্য লজ্জা।’
সাংসদ শাজাহান খানের পূর্বের ইতিহাস টেনে জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ এই নেতা বলেন, শাজাহান খান বুকে হাত রেখে বলেন ১৫ বছর আগে আপনাদের কী ছিল? এখন কি হয়েছেন? এখন যা হয়েছেন, তা রাজৈর-মাদারীপুর মানুষের ভোটে। আপনি এমপি-মন্ত্রী হয়েছেন কিন্তু জনগণের কোন উন্নয়ন হয়নি। সাধারণ কর্মীদের কোন উন্নয়ন হয়নি। শুধু নিজের পরিবার ও তার ব্যক্তিগত লোকের উন্নয়ন করেছেন তিনি।
শাহাবুদ্দিন আহমেদ মোল্লা বলেন, শাজাহান খান আসুন, সামনাসামনি আসুন। আপনি আপনার খতিয়ান নিয়ে বসেন, আর আমি আমার খতিয়ান নিয়ে বসি। আমরা যারা আওয়ামী লীগ করে আপনার জন্য কি করেছি, আর আপনি আমাদের জন্য কি করেছেন? এসব প্রশ্নের জবাব আপনি দিতে পারবেন না। সেই সাহস আপনার নেই।
৬ দফায় যারা রক্ত দিয়েছেন সে সকল শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি আরও বলেন, রাজৈর ৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ মাদারীপুরের অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সভাপতি শাজাহান খানের সন্ত্রান, স্ত্রী ও তিনি নিজেই। জেলার তৃণমূলের নেতাকর্মীরা কী কামলা? শাজাহান খানের জন্য সারা জীবন তারা কৃষান দিবে? এর জবাব একদিন আপনাকে দিতে হবে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য শাজাহান খানকে হুশিয়ারি করে শাহাবুদ্দিন মোল্লা বলেন, শাজাহান খান যাদের দিয়ে আমার পদত্যাগ চান এটা কিন্তু ভাল লক্ষণ না। জেলা আওয়ামী লীগের অফিসে আসার মতো সৎ সাহস আপনার নাই। আপনি আমাকে জিজ্ঞাসা করেন। আমি আপনাকে নিয়ে কি বলেছি। আমার বিরুদ্ধে কোন কথা থাকলে তা আওয়ামী লীগের পরিবারের মধ্যে আলোচনা করুণ। ফেসবুকে রাজাকার, আলবদরদের সন্তানদের দিয়ে আমাদের ও আওয়ামী লীগের কুৎসা রচনা করে যাচ্ছেন, এটাও কিন্তু ভাল লক্ষণ না। আমি বলতে চাই, এসব বন্ধ করুণ। আমরা রাজনীতি করি স্বচ্ছ ভাবে করতে চাই। আমরা যারা আওয়ামী লীগ করি তারা বিরোধী দল থাকতেও যেমন ছিলাম এখনো তেমনি আছি। পরিবর্তন আপনাদের হয়েছে। আমাদের কোন পরিবর্তন হয়নি।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি জাহাঙ্গীর কবির, সাধারণ সম্পাদক কাজল কৃষ্ণ দে, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও মাদারীপুর পৌরসভার মেয়র খালিদ হোসেন, যুবলীগের সভাপতি আতাহার হোসেন ব্যাপারী, ছাত্রলীগের সভাপতি জাহিদ হাসান প্রমুখ।

এব্যাপারে মাদারীপুর-২ আসনের এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা সাবেক নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান জানান, যারা মিথ্যের উপর ভিত্তি করে রাজনীতি করে তারা সবই মিথ্যা বলে এই রাজনীতি টিকবে না। আমি কখনোই বিএনপি জামাতকে পূর্নবাসনতো দুরের কথা আমি তাদের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালে আগুন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে দাড়িয়ে ছিল কে’ তারা কি দাড়িয়েছিল ? দাড়িয়েছিলাম আমি। জীবনের ঝুকি নিয়ে ফাইট করেছিলাম আমি। তারা তখন কোথায় ছিল।’’
তিনি আরও বলেন, আজ আওয়ামীলীগের কর্মীরা ব্যবসা করে দাড়িয়েছে। বিএনপির কর্মীরা কি দাড়িয়েছে। বিএনপির কর্মীর সাথে আমাদের কোন ব্যবসা নাই। এ সব মিথ্যা কথা বলে মানুষের মন গলানো যাবে না।’ এসব কথা যারা বলে, তাদের কথা ১০০ ভাগ মিথ্যা।

তিনি আরও বলেন, মিথ্যাবাদী কুরুচি সম্পুর্ণ মানুষ, হাওয়া ভবনের সাথে যারা ব্যবসা করে তাদের সাথে বসার মানুষিগতা আমার নাই। হাওয়া ভবনের দোসর যারা। শাহাবুদ্দিন মোল্লার নাম পেপারের উঠেছিল। সেতো হাওয়া ভবনের ব্যবসা যারা করে তারাতো মিথ্যা বলেই তো তাদের অবস্থান তৈরি করতে চাইবে’ কিন্ত আর সেই অবস্থান হবে না। মাদারীপুুরের মানুষ তাদের গ্রহন করবে না। তাদের প্রতি ঘৃণা সৃষ্টি হয়েছে সেই ঘৃর্ণা আগুনে পরিনিত হবে, সেই আগুনে জ্বলে পুড়ে মরবে।

তিনি আরও বলেন, সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারকে বিএনপি করেছে বলে, যে সবসময় আওয়ামীলীগে মিছিল মিটিং করে সে বিএনপি হয় কি করে।;
তারা যে জেলা আওয়ামীলীগের কমিটি করেছে তাদের মধ্যে স্বাধীনতা বিরোধী ৪জনকে রেখেছে, তারা আওয়ামীলীক হয় কিভাবে? আর যারা আওয়ামীলীগ করে তাদের বিএনপি হয় কি করে?

উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ধরে মাদারীপুরে জেলা আওয়ামী লীগ দুটি গ্রুপে বিভক্ত। একটি গ্রুপের নেতৃত্ব দেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ আফম বাহাউদ্দিন নাসিম এবং অন্যটির নেতৃত্ব দেন সাবেক নৌপরিবহন মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মাদারীপুর-২ আসনের সাংসদ শাজাহান খান। বর্তমান জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাহাবুদ্দিন আহম্মেদ মোল্লা বাহাউদ্দিন নাসিমের অনুসারী।

 

RELATED ARTICLES
Continue to the category

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments