সীমিত পরিসরে ও কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে সৌদি আরবে রবিবার শুরু হয়েছে পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতা। আজ ফজরের পর মিনায় ফজরের নামাজ আদায় করেই ‘লাব্বায়িক আল্লাহুম্মা লাব্বায়িক’ ধ্বনিতে হজযাত্রীরা আরাফাতের ময়দানে গিয়ে নিজ নিজ খিমায় তশরিফ নেন।
এখানে সমবেত হাজিরা দিনভর আল্লাহর দরবারে আকুতি জানাবেন গোনাহ থেকে মুক্তি ও আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের। হাদিসে দিনটিকে দোয়া কবুলের দিন বলে ঘোষণা করা হয়েছে।
আরাফাতের ময়দান তিন দিক পাহাড়বেষ্টিত। মধ্যে দুই মাইল দৈর্ঘ্য ও দুই মাইল প্রস্থের সমতল ভূমি। এই সমতল ভূমিতে মসজিদে নামিরা সংলগ্ন এলাকায় স্থাপিত তাঁবুতে হাজিরা অবস্থান করছেন। আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করাই হজের মূল কাজ, এখানে অবস্থান না করলে হজ আদায় হবে না।
আজ স্থানীয় সময় দুপুর সাড়ে ১২টার পর আরাফাতের ময়দানে অবস্থিত মসজিদে নামিরা থেকে হজের খুতবা দেবেন কাবার ইমাম শায়খ বানদার বিন আবদুল আজিজ বালিলাহ। আরাফাতের ময়দানে উপস্থিত সফেদ-শুভ্র কাপড়ের ইহরাম পরিহিত হাজিদের সামনে দেওয়া হজের খুতবা বিশ্ব পরিস্থিতির কারণে বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। এ খুতবা যেমন সমবেত হাজিরা শোনেন, তেমনি শোনেন বিশ্ববাসী। খুতবা সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন ও বিশ্বের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি টেলিভিশন সরাসরি সম্প্রচার করে থাকে।
খুতবায় হজের খতিব প্রাণঘাতী বৈশ্বিক মহামারি করোনা থেকে মুক্তি, গোনাহ মাফ, আল্লাহর রহমত কামনাসহ সম-সাময়িক প্রসঙ্গ নিয়ে বিশ্ববাসীর প্রতি নানা নির্দেশনামূলক বক্তব্য তুলে ধরবেন। খুতবায় মুসলিম উম্মাহর ঐক্য ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাতও করা হবে। এরপর জোহর ও আসরের নামাজ আদায় করবেন সমবেত হজযাত্রীরা।
সারা দিন এখানে অবস্থান শেষে সূর্যাস্তের পর হাজিদের মুজদালিফায় নিয়ে যাওয়া হবে। মুজদালিফায় গিয়ে মাগরিব ও এশার নামাজ আদায় করে রাতে সেখানে অবস্থান করবেন। পরে ফজরের নামাজ আদায় করে হাজিরা মিনায় ফিরবেন।
মিনায় বড় শয়তানকে সাতটি পাথর মারার পর পশু কোরবানি দিয়ে মাথার চুল ছেঁটে কিংবা ন্যাড়া করে ইহরাম ছাড়বেন। এরপর স্বাভাবিক পোশাক পরে মিনা থেকে মসজিদে হারামে গিয়ে কাবা শরিফ সাতবার তাওয়াফ করবেন। তাওয়াফের পর সাফা ও মারওয়ায় ‘সাঈ’ (সাতবার দৌড়াবেন) করবেন। সেখান থেকে তারা আবার মিনায় যাবেন। মিনায় যত দিন থাকবেন, তত দিন তিনটি (বড়, মধ্যম, ছোট) শয়তানকে ২১টি পাথর নিক্ষেপ করবেন।