Saturday, April 20, 2024
HomeScrollingভোগান্তির আরেক নাম ঢাকার পথে যাত্রা

ভোগান্তির আরেক নাম ঢাকার পথে যাত্রা

মেহেদী হাসান সোহাগ, মাদারীপুর প্রতিনিধি |

‘বেতনের বেশির ভাগ খরচ হয়ে যায় যানবাহনে। এই কষ্টের দিনে ভাড়া কেন অতিরিক্ত রাখবে? কেউ কিছু বলে না। আমরা দুর্ভোগ মাথায় নিয়ে শুধু ছুটে বেড়াই। ভোগান্তির আরেক নাম ঢাকার পথে যাত্রা’।

এমনটাই বলেছে নাজমুল নামে এক পোশাক শ্রমিক। কর্মস্থলে যোগ দিতে পথের সব ভোগান্তি মাথায় নিয়ে রাজধানী ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়া দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের হাজারো যাত্রীর একজন তিনি।

রোববার (১ আগস্ট) ভোর থেকে শিবচরের বাংলাবাজার ঘাটে দেখা যায় যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড়। লঞ্চ চালু হওয়ায় ফেরি পারাপারে ভোগান্তি কিছুটা কম ছিল যাত্রীদের। সোমবার সকাল পর্যন্ত লঞ্চ চলাচলের নির্দেশনা থাকায় লঞ্চঘাটেই যাত্রীদের ভিড় বেশি দেখা গেছে।

বাংলাবাজার ঘাট সূত্রে জানা গেছে, শ্রমিকদের যাতায়াতের সুবিধার জন্য বাস ও লঞ্চ চলাচল শুরু হয়েছে। বাস চলাচল শুরু করলেও দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে মাইক্রোবাস, মাহিন্দ্রা, পিকআপ, মোটরসাইকেলে করেও ঘাটে আসছেন যাত্রীরা। সকল যানবাহনেই বাড়তি ভাড়ার চাপ রয়েছে। তা ছাড়া ভোর ৬টা থেকে নৌরুটে লঞ্চ চলাচল করলেও বেলা ১১টার দিকে লঞ্চ বন্ধ করে দেয় মালিক সমিতি। শিমুলিয়া পাড়ে লঞ্চগুলোকে বাড়তি যাত্রী বহনের দায়ে জরিমানা করায় তারা লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখে। তবে এক ঘণ্টা পর আবারও লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক করা হয়।

লঞ্চ মালিকেরা জানান, শিবচরের বাংলাবাজার ঘাট থেকে ধারণক্ষমতার কম যাত্রী নিয়েই লঞ্চ চলছে। তবে যাত্রীদের প্রচণ্ড চাপ থাকায় নিয়ন্ত্রণ করা কষ্টকর হচ্ছে। তারপরও অতিরিক্ত যাত্রী আমরা বহন করছি না। অথচ শিমুলিয়া পাড়ে গিয়ে যাত্রী নামানোর সঙ্গে সঙ্গেই আমাদের লঞ্চকে জরিমানা করা হচ্ছে। এ লোকসান গুনতে রাজি নই আমরা। এ কারণে বেলা ১১টায় লঞ্চ চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।

ঢাকাগামী যাত্রীরা জানান, এ রুটে বাড়তি ভাড়া গুণেই গন্তব্য যেতে হয়। এখন ডাবলেরও বেশি ভাড়া দিতে হচ্ছে। ঘাটে আসতে সব গাড়িতেই বাড়তি ভাড়া। আমরা নিম্ন আয়ের মানুষ। বেতনের বেশির ভাগই খরচ হয়ে যায় যানবাহনে।

মো. রতন নামে এক যুবক বলেন, সকাল থেকে লঞ্চ চলছিল। ঘাটে আসলাম আর লঞ্চও বন্ধ করে দিয়েছে। অথচ ১২টায় বন্ধ করার কথা ছিল। লঞ্চ না ছাড়লে আবার ফেরিতে যেতে হবে।

তবে এক ঘণ্টা পর আবার লঞ্চ চালু হয়।

অপর এক যাত্রী বলেন, ফেরিতে গরু-ছাগলের মতো যাত্রীদের পার হতে হয়। রোদ আর গরমে দু’ঘণ্টা গাদাগাদি করে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় ফেরিতে।

বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌরুটের লঞ্চ মালিক সমিতি মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মনিরুজ্জামান মনির বলেন, বাংলাবাজার ঘাট থেকে প্রশাসনের উপস্থিতিতে গুনে গুনে যাত্রী তোলা হয় লঞ্চে। ঘাটে হাজার হাজার যাত্রীর চাপ। এর মধ্যেও লঞ্চগুলো ধারণক্ষমতার কম যাত্রী নিয়েই ছেড়ে যাচ্ছে। অথচ শিমুলিয়া পাড়ে যাওয়ার পর জরিমানা করা হচ্ছে লঞ্চগুলোকে। এ কারণে মালিকেরা লঞ্চ না চালানোর সিদ্ধান্ত নেয়। ১১টা থেকে সিদ্ধান্ত মতো আমরা লঞ্চ বন্ধ করে দিয়েছিলাম। পরে বিআইডব্লিউটিএর সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। আমরা আবার লঞ্চ চালু করেছি। রাত ১০টা পর্যন্ত আমরা লঞ্চ চালাব।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাবাজার লঞ্চ ঘাটের টি আই আক্তার হোসেন বলেন, আমাকে আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ লঞ্চ চলাচল শুরু করতে অনুমতি দিয়েছে। আগামীকাল (সোমবার) ৬টা পর্যন্ত চলবে বিআইডব্লিউটিএর থেকে সিদ্ধান্ত হয়েছে। ইতিমধ্যে বিভিন্ন মিডিয়ায় বিষয়টি প্রচার হচ্ছে।

বাংলাবাজার ঘাট ম্যানেজার মো. সালাউদ্দিন বলেন, লঞ্চ চলাচল শুরু করায় ফেরিতে চাপ কমেছে। এখনো গার্মেন্টস কর্মীদের প্রচণ্ড চাপ রয়েছে।  এ জন্য ফেরি সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে।

RELATED ARTICLES
Continue to the category

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments