মোঃ হাফিজুল শরীফ হাফিজ।
অবৈধপথে ইউরোপ যাওয়ার সময় গত সপ্তাহে ভূমধ্যসাগরের তিউনিশিয়া উপকূলে নৌকাডুবির ঘটনায় উদ্ধার ৩৩ বাংলাদেশির ২৯ জনই মাদারীপুরের। ওই ঘটনায় নিখোঁজ ৫০ জনের মধ্যেও আছেন জেলার একাধিক ব্যক্তি। তবে তাদের একজনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে।
পুলিশ ও অভিবাসনপ্রত্যাশীদের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গত রবিবারের ওই ঘটনায় জীবিত উদ্ধার হওয়াদের মধ্যে মাদারীপুর জেলারই ২৯ জন। আবার তাদের মধ্যে সদর উপজেলার পেয়ারপুর ইউনিয়নের নয়াচর গ্রামেরই ১৪ জন। নৌকাডুবিতে ওই গ্রামের সেন্টু মন্ডল এখনো নিখোঁজ রয়েছেন বলে পরিবারের দাবি।
এসব অভিবাসনপ্রত্যাশীর স্বজনদের অভিযোগ, নয়াচর গ্রামের মহসিন নামে একজন ইতালি নেওয়ার কথা বলে প্রত্যেকের পরিবারের কাছ থেকে সাড়ে ৭ লাখ টাকা করে নেয়। জমিজমা বিক্রি কিংবা ব্যাংকঋণ এনে তারা দালালের হাতে টাকা তুলে দেয়। কিন্তু তাদের গন্তব্যে পৌঁছানোর আগেই ভিডিও পাঠিয়ে তাদের পরিবারের কাছে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করছে দালাল চক্র।
উদ্ধার হওয়া এমরানের বড় ভাই সরোয়ার জানান, ‘ধারদেনা, বাড়ি পর্যন্ত বিক্রি করে আমার ভাইকে বিদেশে পাঠিয়েছি। আল্লাহ যেহেতু বাঁচিয়ে রেখেছে তাই এই দেশের ও সেই দেশের সরকারের কাছে দাবি আমার ভাইয়ের জন্য একটা কাজের ব্যবস্থা করে দেয়। আর যদি দেশে আসে তাহলে দেনার দায়ে আত্মহত্যা ছাড়া উপায় থাকবে না।’
নিখোঁজ সেন্টু মন্ডলের স্ত্রী সাথী আক্তার বলেন, ‘আমার স্বামীর খোঁজ পাইনি। তিনি বেঁচে আছেন কিনা তাও জানি না। আমি এখন তিন অবুঝ সন্তান নিয়ে কোথায় দাঁড়াব। দেনার টাকা কীভাবে দেব।’
এদিকে মহসিনের ফুফু রহিমা বলেন, আমার ভাতিজা সবার কাছে আগেই বলে নিয়েছে সাগরের বিষয় আমি দেখব না। এটা বলছে কিনা তাদের কাছে জেনে দেখেন। তাছাড়া মহসিনও তো সেখানে উদ্ধার হয়েছে। তার মা ও পরিবার ঢাকা থাকে। মহসিন অনেক দিন আগেই লিবিয়া গেছে।’
মাদারীপুর পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল জানান, যারা অবৈধভাবে ইউরোপ নিয়ে যায় তাদের মধ্যে পাঁচজন মানব পাচারকারীকে আমরা শনাক্ত করতে পেরেছি। এই পাঁচজনের মধ্যে দুইজন লিবিয়াতে অবস্থান করছে এবং বাকি তিনজনকে ধরার জন্য আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।