Thursday, March 28, 2024
HomeScrollingজল্লাদ শাহজাহানের নেতৃত্বে হবে বঙ্গবন্ধুর খুনি মাজেদের ফাঁসি

জল্লাদ শাহজাহানের নেতৃত্বে হবে বঙ্গবন্ধুর খুনি মাজেদের ফাঁসি

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন (বরখাস্ত) আবদুল মাজেদের ফাঁসির কার্যক্রম শুরু হয়ে গেছে। শনিবার (১১ এপ্রিল) রাতে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সূত্র জানায়, প্রধান জল্লাদ শাহজাহানের নেতৃত্বে সহকারি মনির এবং সিরাজ ফাঁসি কার্যকর করবে।

জল্লাদ হিসেবে শাহজাহান বহুল আলোচিত একটি নাম। স্মরণীয় ঘটনা হিসেবে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের ফাঁসিকাষ্ঠে ঝোলানো জল্লাদের ভূমিকায় ছিলেন তিনি। এছাড়া শাহজাহানের হাত দিয়ে ফাঁসি কার্যকর হয়েছে শারমিন রীমা হত্যা মামলার বহুল আলোচিত আসামি মুনির, জঙ্গি নেতা সিদ্দিকুল ইসলাম বাংলা ভাই এবং খুলনা অঞ্চলের ত্রাস এরশাদ শিকদারের মতো আরো অনেক অপরাধীর।

এছাড়া শায়খ আব্দুর রহমান, বাংলা ভাইসহ অনেকের ফাঁসি শাহজাহানের নেতৃত্বে পরিচালনা করা হয়।

রাত ১২টা ১ মিনিটে ফাঁসি কার্যকর করা হবে বলে কারাগার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। রাতে ফাঁসির মঞ্চে আলো জ্বালানো হয়েছে। এশার নামাজের পর খুনি মাজেদকে তওবা পড়ানোর প্রস্তুতি চলছে।

শনিবার রাতে কারা মহাপরিদর্শক (আইজি প্রিজনস) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম মোস্তফা কামাল পাশা বলেন, ‘ফাঁসির মঞ্চ থেকে শুরু করে ফাঁসি কার্যকর করতে যা যা ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন সবই নেওয়া হয়েছে। কারাগারের ভেতর ও আশপাশ এলাকায় পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’

‘আজ মধ্য রাতের পর ফাঁসি কার্যকর করা হবে। আইন অনুযায়ী, বঙ্গবন্ধুর খুনির ফাঁসি দিতে কারা কর্তৃপক্ষ সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত’, যোগ করেন আইজি প্রিজন্স।

কারা সূত্র জানায়, ফাঁসির মঞ্চে আলো জ্বালানো হয়েছে। কারারক্ষীরা প্রহরায় আছেন। ফাঁসি কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত আলো জ্বালানো থাকবে। ফাঁসি কার্যকর হয়ে যাওয়ার পর আনুষাঙ্গিক কাজ শেষে আলো নেভানো হবে। বঙ্গবন্ধুর খুনি মাজেদের ফাঁসি কার্যকর করা এখন সময়ের ব্যাপার। বিকেল বেলায় আসামির ওজনের সমান ওজন দিয়ে ফাঁসির ট্রায়ালও করা হয়েছে। এই কারাগারে ২০১৮ সালে ফাঁসির মঞ্চ তৈরি করা হয়। মঞ্চ তৈরির পর এখনও কারও ফাঁসি কার্যকর করা হয়নি। বঙ্গবন্ধুর খুনি মাজেদের ফাঁসিই প্রথম কার্যকর করা হবে।

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর বিগত দুই দশক পা‌লি‌য়ে ভার‌ত গিয়েছি‌লেন আবদুল মাজেদ। গত মা‌র্চের মাঝামা‌ঝি‌ সময় তি‌নি ঢাকায় আসেন। পরে সোমবার (৬ এপ্রিল) রাত ৩টা ৪৫ মিনিটের দিকে গাবতলী বাসস্ট্যান্ডের সামনে থেকে মাজেদকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার ৪৪ বছর ৭ মাস ২১ দিন পর গ্রেপ্তার হন তিনি। সবশেষ শুক্রবার স্ত্রীসহ পাঁচজন কারাগারে মাজেদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ফাঁসির আগে প্রত্যেক আসামিকে পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয়।

গত বুধবার ঢাকা জেলা ও দায়রা জজ এম হেলাল উদ্দিন চৌধুরী মাজেদের মৃত্যু পরোয়ানা জারির আদেশ দেন। ওইদিন বিকেলে মাজেদ রাষ্ট্রপতির কাছে এ আবেদন করেন। কারা কর্তৃপক্ষ আবেদনটি বিকেলেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দেয়। সেখান থেকে বঙ্গভবনে পৌঁছানো হয়। প্রাণভিক্ষার আবেদনটি বঙ্গভবনে পৌঁছার পরপরই তা খারিজ করে দেন রাষ্ট্রপতি। এটি প্রত্যাখ্যাত হওয়ায় কারা কর্তৃপক্ষের সামনে দণ্ড কার্যকরে বাধা থাকছে না।

এর আগে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় আবদুল মাজেদসহ ১২ আসামিকে ২০০৯ সালে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের মধ্যে সৈয়দ ফারুক রহমান, সুলতান শাহরিয়ার রশীদ খান, বজলুল হুদা, এ কে এম মহিউদ্দিন আহমেদ ও মুহিউদ্দিন আহমেদের ফাঁসি ২০১০ সালের ২৭ জানুয়ারি কার্যকর হয়।

রায় কার্যকরের আগে ২০০২ সালে পলাতক অবস্থায় জিম্বাবুয়েতে মারা যান আসামি আজিজ পাশা। মাজেদ গ্রেফতার হওয়ার পর বর্তমানে পলাতক রয়েছেন পাঁচজন। পলাতক আসামিরারা হলেন- খন্দকার আবদুর রশীদ, শরিফুল হক ডালিম, এস এইচ এম বি নূর চৌধুরী, এ এম রাশেদ চৌধুরী ও মোসলেম উদ্দিন। তারা সবাই সাবেক সেনা কর্মকর্তা। তারা বিভিন্ন দেশে পলাতক পালিয়ে আছেন।

RELATED ARTICLES
Continue to the category

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments