কঠোর লকডাউনে শিল্প-কারখানা খোলার দ্বিতীয় দিনও বাংলাবাজার শিমুলিয়া নৌরুটের ফেরি ও লঞ্চযোগে কর্মস্থলে ছুটছেন শত শত মানুষ। ভোগান্তিকে সঙ্গী করেই কর্মস্থলে যোগ দেওয়ার উদ্দেশ্যে রাজধানীতে যাচ্ছেন দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের হাজারো যাত্রী।
একদিকে লকডাউন অন্যদিকে যানবাহন বাড়তি ভাড়া সব মিলিয়ে চরম ভোগান্তির মধ্যেই যেতে হচ্ছে তাদের।
সোমবার সকাল থেকে কর্মস্থলে যোগ দেওয়াসহ নানা প্রয়োজনে বিধিনিষেধের মধ্যেও ঢাকার অভিমুখে লঞ্চ ও ফেরি পাড়ি দিতে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের শত শত যাত্রী আসছেন মাদারীপুরের বাংলাবাজার ঘাটে। ফেরির পাশাপাশি লঞ্চেও যাত্রীরা পারাপার হচ্ছে। তবে লঞ্চ চালু হওয়ায় ফেরিতে পার হওয়ার যাত্রীদের ভোগান্তি কিছুটা কমেছে বলে জানান যাত্রীরা।
তবে ঘাট থেকে ধারণ ক্ষমতার বেশি যাত্রী নিয়ে শিমুলিয়া ঘাটে যাচ্ছে প্রতিটি লঞ্চ। এসব লঞ্চে উপেক্ষিত থাকছে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব।
এদিকে ফেরিঘাটে যানবাহনের বাড়তি চাপ রয়েছে। ঘাটে আটকে থাকা যানবাহনের পাশাপাশি যাত্রীরাও পদ্মা পার হচ্ছেন ফেরিতে। গত দুই দিনের চেয়ে ফেরিতে আজ যাত্রী চাপ কমেছে অনেকটা।
বাংলাবাজার ঘাট সূত্রে জানা গেছে, শ্রমিকদের যাতায়াতের সুবিধার জন্য গতকাল থেকে বাস ও লঞ্চ চলাচল শুরু করেছে। বাস চলাচল শুরু করলেও দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে মাইক্রোবাস, মাহিন্দ্রা, পিকআপভ্যান, মোটরসাইকেলে করেও ঘাটে আসছে যাত্রীরা। সকল যানবাহনেই বাড়তি ভাড়ার চাপ রয়েছে।
বিআইডব্লিটিসি ও বিআইডব্লিটিএর ঘাট কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, আজ সকাল থেকে এই নৌরুটে ৪৬টি লঞ্চ ও ৯টি ফেরি যোগে যানবাহন ও যাত্রী পারাপার করা হচ্ছে। ১২টা পর্যন্ত চলাচলের কথা থাকলেও এখনো চলছে লঞ্চগুলো ঘাটে রাখার জন্য।
মাদারীপুর থেকে সাভারগামী যাত্রী মো. শহিদুল্লাহর বলেন, ‘গতকাল থেকে কারখানা খুলছে। অফিস থেকে বারবার ফোন দিচ্ছে। গতকাল বাড়িতে পাট ধোয়ার কাজ ছিল, তাই যেতে পারিনি।। আজ যাচ্ছি।
পটুয়াখালী থেকে ঘাটে আগত রাশেদ নামে এক মাছ ব্যবসায়ী বলেন, যাত্রাবাড়ীতে মাছের আড়তে চাকরি করি। ঈদে বাড়ি এসেছিলাম। গতকাল ফোন দিছে আড়ত থেকে তাই যাচ্ছি। এই পর্যন্ত আইতে আগে ৪ শত টাকা লাগতো আর আইজকা আইলাম ৭ শো টাকা দিয়া।
রাজা নামে লঞ্চের এক যাত্রী বলেন, ‘চিকিৎসার জন্য যাচ্ছি। অনেক মানুষ লঞ্চে যাচ্ছে। ভাড়াও বেশি নিচ্ছে, যাত্রীও বেশি নিচ্ছে। আমাদের কিছু বলার নেই, আর বললেই কি হবে?
বিআইডাব্লিউটিসি বাংলাবাজার ঘাটের ব্যবস্থাপক মো. সালাউদ্দিন বলেন, সকাল থেকে তিনটি রো রো, পাঁচটি মিডিয়াম ও একটি ছোট ফেরিসহ ৯টি ফেরি চলাচল করছে। ফেরিতে যাত্রী তেমন নেই। তবে যানবাহন পারাপার বেড়েছে।’
বিআইডব্লিউটিএ বাংলাবাজার লঞ্চঘাটের টিআই আক্তার হোসেন এই রুটে বর্তমানে ৪৬টি লঞ্চ চলাচল করছে। দুপুর ১২টা পর্যন্ত লঞ্চ চালানোর নির্দেশনা রয়েছে।