Tuesday, April 16, 2024
HomeScrollingএলাকায় অপরিচিত হওয়ায় যুবককে গাছে বেঁধে অমানবিক নির্যাতন

এলাকায় অপরিচিত হওয়ায় যুবককে গাছে বেঁধে অমানবিক নির্যাতন

সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার জামতৈল ইউনিয়নের জামতৈল কলেজপাড়া এলাকায় শুক্রবার বিকেলে অজ্ঞাত এক যুবক (২৫) এলাকায় সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করছিল। এ সময় ওই এলাকার রুহুল আমিন মাস্টারের ছেলে মাছের হ্যাচারি ব্যবসায়ী ফরহাদুল হক হ্যাপী (৫৫) ও তার ছেলে মো. শান্ত (২৮) তাকে ধাওয়া দেন। পরে ধরে এনে রশি দিয়ে গাছের সঙ্গে পিঠমোড়া করে হাত-পা বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় অমানবিক ভাবে নির্যাতন করেন তারা।

এ নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে ভাইরাল হয়। এ ঘটনায় শনিবার দুপুরে কামারখন্দ থানা পুলিশ হ্যাচারি ব্যবসায়ী ফরহাদুল হক হ্যাপীকে আটক করে। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানায় পুলিশ।

ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিওতে দেখা যায়, হ্যাচারি ব্যবসায়ী হ্যাপী (৫৫) গাছে বাঁধা অজ্ঞাত যুবকটির হাতের নখগুলো একটি প্লায়ার্স দিয়ে উপড়ে ফেলছেন। এ সময় হ্যাপী বলেন, ‘ওর আঙুল দুইটা ভাঙছি। ও অন্য চোরদের নাম না বলা পর্যন্ত ওর আঙুল সবগুলা ভাঙমু। তার আগে ওকে ছাড়মু না। আমি ওকে মেরে ফেলমু না। ওর হাত-পা ভাংমু। তারপর ছাড়মু’।

এ সময় ওই যুবকের আর্তচিৎকারে এলাকার লোকজন এগিয়ে এসে ওই যুবককে এভাবে না মেরে পুলিশে দেওয়ার জন্য বলেন। কিন্তু হ্যাপী এতে রাজি না হয়ে তাকে নির্যাতন করতেই থাকেন।

এ বিষয়ে এলাকাবাসী জানান, তাকে বারবার এ অমানবিক নির্যাতন করতে নিষেধ করা হলেও বাপ-ছেলে কেউ এ নিষেধ শোনেনি। তারা বৃষ্টির মধ্যে কাঁদা-পানিতে বসিয়ে গাছের সঙ্গে পিঠমোড়া করে হাত-পা বেঁধে প্রায় দুই ঘণ্টা নির্যাতন চালায়। এতে ওই যুবক বারবার সংজ্ঞাহীন হয়ে চরম অসুস্থ হয়ে পড়ে। একপর্যায়ে সে পায়ে ভর দিয়ে দাঁড়ানোর শক্তি হারিয়ে ফেলে। এ সময় অবস্থা বেগতিক দেখে হ্যাপীর ছেলে শান্ত তাকে ছেড়ে দেয়। কিন্তু সে উঠে দাঁড়াতে পারছিল না। ফলে শান্ত নিজেই তার জামার কলার ধরে টেনেহিঁচড়ে তুলে এলাকা থেকে তাড়িয়ে দেয়।

এ বিষয়ে আটকের আগে শনিবার সকালে হ্যাচারি ব্যবসায়ী ফরহাদুল হক হ্যাপী দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘কিছুদিন আগে আমার একটি ছাগল হারিয়ে গেছে। আমার ধারণা ও-ই ছাগলটি সে চুরি করেছে। এ দিন সে আবার আরেকটি ছাগল চুরি করতে আসে। এ সময় আমাকে দেখে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে। আমি তাকে তাড়া করে ধরে ফেলি। তার সঙ্গে আর কারা জড়িত আছে তাদের নাম সে বলেনি। তাই তাকে ২/১টা চড় থাপ্পড় দিয়ে ছেড়ে দিয়েছি। এটা কোনো দোষের কিছু না। এ ব্যাপারে কামারখন্দ থানা থেকে পুলিশ এসেছিল। আমি বাড়িতে ছিলাম না। এ বিষয়ে পুলিশের সঙ্গে আমার ফোনে কথা হয়েছে। তারা বিষয়টি বুঝতে পেরেছে’।

এ বিষয়ে কামারখন্দ থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন,’খবর পেয়ে ওই দিনই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু নির্যাতিত যুবক ও নির্যাতনকারী কাউকে সেখানে পাওয়া না যাওয়ায় তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া যায়নি। তবে শনিবার দুপুরে অভিযান চালিয়ে নির্যাতনকারী হ্যাচারি ব্যবসায়ী ফরহাদুল হক হ্যাপীকে আটক করা হয়েছে। এ ছাড়া এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে’।

তবে ওই যুবকের নাম বা তার সর্বশেষ অবস্থান বিষয়ে পুলিশ কোনো তথ্য দিতে পারেনি। অনুসন্ধানেও তার বিষয়ে কিছু জানা যায়নি।

RELATED ARTICLES
Continue to the category

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments