আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলীয় শহর কুন্দুজের একটি শিয়া মসজিদে শুক্রবার এক ভয়াবহ বিস্ফোরণে অন্তত ৫০ জন নিহত হয়েছেন। খবরঃ এএফপি।
তালেবানের প্রধান মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুহাজিদ বলেন, ‘আজ বিকেলে, কুন্দুজ প্রদেশের রাজধানী বান্দারের খান আবাদ জেলায় আমাদের শিয়া ভাইদের (স্বদেশি) একটি মসজিদে বিস্ফোরণ ঘটে, যার ফলে আমাদের বেশ কয়েকজন ভাই শহীদ ও আহত হয়েছেন’।
স্থানীয় গণমাধ্যম কয়েক ডজন হতাহতের খবর দিয়েছে। এখনো কেউ এই হামলার দায় স্বীকার করেনি। তবে তালেবানদের তিক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী চরমপন্থী ইসলামিক স্টেট গোষ্ঠী (আইএস) সুন্নি সংখ্যাগরিষ্ঠ আফগানিস্তানে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা সৃষ্টির লক্ষ্যে বারবার শিয়াদের লক্ষ্য করে হামলা চালিয়ে আসছে।
তালেবান সরকারের কুন্দুজ সংস্কৃতি ও তথ্য বিভাগের পরিচালক মতিউল্লাহ রোহানি এএফপিকে নিশ্চিত করেছেন যে, এটি একটি আত্মঘাতী হামলা।
কুন্দুজ প্রদেশের রাজধানী কুন্দুজের বাসিন্দারা বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, জুমার নামাজের সময় একটি শিয়া মসজিদে বিস্ফোরণ ঘটে। উল্লেখ্য, কুন্দুজ প্রদেশের রাজধানীর নামও কুন্দুজ।
সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করা কিছু গ্রাফিক ছবিতে দেখা গেছে মসজিদের মেঝেতে বেশ কয়েকটি রক্তাক্ত দেহ পড়ে আছে। আরেকটি ভিডিওতে দেখা গেছে, পুরুষরা নারী ও শিশুসহ লোকদের ঘটনাস্থল থেকে দূরে রাখছে।
একটি আন্তর্জাতিক দাতা গোষ্ঠীর একজন কর্মীও আহতদের মধ্যে রয়েছেন বলে একটি সূত্র জানিয়েছে।
ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস (এমএসএফ) সূত্র জানিয়েছে, শুক্রবারের হামলার পর কুন্দুজ শহরে তাদের হাসপাতালে ১৫ জনের মৃতদেহ এসেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই হাসপাতালের এক কর্মী বলেন, ‘আমরা ৯০ জনেরও বেশি আহত রোগী এবং ১৫ জনেরও বেশি মৃত রোগী পেয়েছি। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। কারণ হসাপাতালে আরও হতাহত লোককে আনা হচ্ছে’।
তবে ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপির বরাতে দুবাই ভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম আল আরাবিয়া জানিয়েছে, নিহতের সংখ্যা ইতিমধ্যেই বেড়ে ৫০ জনে দাঁড়িয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কুন্দুজ সেন্ট্রাল হাসপাতালের একজন চিকিৎসক বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমরা আমাদের হাসপাতালে ৩৫ টি মৃতদেহ এবং ৫০ জনের বেশি আহত মানুষ পেয়েছি’।
আফগান জনসংখ্যার প্রায় ২০ শতাংশ শিয়া। এদের মধ্যে অনেকেই হাজারা নৃতাত্বিক জাতিগোষ্ঠীর সদস্য, যারা কয়েক দশক ধরে আফগানিস্তানে ব্যাপকভাবে নির্যাতিত হয়ে আসছে।
২০১৭ সালের অক্টোবরে, কাবুলের পশ্চিমের এক শিয়া মসজিদে ইসালামিক স্টেট (আইএস) এর এক আত্মঘাতী হামলায় হামলায় ৫৬ জন নিহত হয় এবং নারী ও শিশুসহ ৫৫ জন আহত হয়।
চলতি বছরের মে মাসে কাবুলের একটি স্কুলের বাইরে ধারাবাহিক বোমা হামলায় কমপক্ষে ৮৫ জন নিহত হয়। নিহতদের বেশিরভাগই তরুণী। হাজারা সম্প্রদায়ের উপর ওই হামলায় ৩০০ জনেরও বেশি আহত হয়।