Friday, March 29, 2024
HomeScrollingআট মাসের সন্তানকে রেখে স্ত্রীকে নির্যাতন করে তাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে স্বামী কাওসার...

আট মাসের সন্তানকে রেখে স্ত্রীকে নির্যাতন করে তাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে স্বামী কাওসার কারাগারে

মাদারীপুর প্রতিনিধি।।

বিয়ের পর থেকে যৌতুকের জন্য চালানো হতো অমানবিক নির্যাতন। ভেবেছিলেন সন্তান হলে স্বামী আর নির্যাতন চালাবে না। তা আর হয়নি। সবশেষ যৌতুকের ৫ লাখ টাকা দিতে না পারায় তিন মাস আগে ৮ মাসের শিশু সন্তানকে রেখে নাজমিনকে তাড়িয়ে দেওয়া হয় বাবার বাড়িতে। এমন অভিযোগে স্বামী কাওসার আহম্মেদেকে জামিন নামঞ্জুর করে বিজ্ঞ আদালত জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল এর বিচারক মো. জাকির হোসেন এ নির্দেশ দেন।

ভুক্তভোগীর অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, মাদারীপুর সদর উপজেলার মস্তফাপুর এলাকার ভ্যানচালক ফেরদাউস বেপারীর মেয়ে নাজমিনের সাথে দুই বছর আগে ডাসার উপজেলার দক্ষিন ভাউতলী গ্রামের ইদ্রিস মুন্সীর ছেলে কাওসার আহম্মেদের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন ভালো কাটলেও তারপর থেকে নানাভাবে যৌতুকের টাকার জন্য চাপ দিতে থাকে নাজমিনের পরিবারকে। মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে ভ্যানচালক ফেরদাউস বেপারী ৩ লক্ষ টাকা মেয়ে জামাই কাওসারের হাতে তুলে দেন। কিছুদিন পর তাদের সংসারে আলিশবা নামে এক কন্যাসন্তান জন্মগ্রহণ করে। গত ১৪ মার্চ (মঙ্গলবার) আবারো নাজমিনের পরিবারের কাছে ৫ লাখ টাকা দাবী করে কাওসার। পরিবার টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে শিশু আলিশবাকে রেখে নাজমিনকে তার বাবার বাড়ি পাঠিয়ে দেয় কাওসার। এরপর থেকে স্বামী কাওসারের সাথে যোগাযোগ করতে পারেনি নাজমিন ও তার পরিবার। পরে উপায় না দেখে সন্তানকে ফেরত পেতে আদালতের দারস্থ হয়েছেন তিনি। এদিকে ঘটনার ৩ মাস হয়ে গেলেও নাজমিন জানে না তার সন্তান কেমন এবং কোথায় আছে। আজ নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইবুনালে জামিন নেয়ার জন্য আসলে বিজ্ঞ আদালত জামিন নামঞ্জুর করে উক্ত আসামি কাওসারকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। মামলা আসামি পেশায় ঢাকা জজ কোর্টের একজন আইনজীবী।

মামলার বাদী নাজমিন বলেন, আমি আমার স্বামীর সাথে সংসার করতে চাইছিলাম। কিন্তু আমার স্বামী যৌতুকের জন্য মারধোর চালাত। অনেক কষ্ট করে মুখ বুঝে সহ্য করছিলাম। কিন্তু টাকার জন্য ওনি আমার দুধের বাচ্চাটারে রেখে আমাকে তাড়িয়ে দিয়েছে। আজ ঘটনার প্রায় তিন মাস হয়ে গেছে কিন্তু আমার বাচ্চার কোনো খোঁজ নাই। আমার বাচ্চাটা বেঁচে আছে না মেরে ফেলেছে, আমি কিছুই জানি না। আমি আমার বাচ্চারটারে ফেরত চাই। সে আমাকে না জানিয়ে আর একটা বিয়ে করছে। আমি তার শাস্তি চাই।

মামলার বাদীর ছোট বোন অন্তরা জানান, আমরা ঐ ছোট শিশু বাচ্চাকে ফেরত চাই ও মামলার আসামির অপরাধের শাস্তি চাই।

মামলার প্রধান আইনজীবী ও মাদারীপুর আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট মো. গোলাম কিবরিয়া হাওলাদার জানান, আমি এই মামলার একজন আইনজীবী হিসেবে বলবো সে যেটা করেছে এখন থেকে প্রায় আড়াই মাস আগে ৮ মাসের শিশু বাচ্চাকে রেখে বাদী নাজমিনকে তাড়িয়ে দেয় এবং সে বাচ্চা কোথায় আছে কেমন আছে কোন সৎ উত্তর দিতে পারে নাই। এছাড়া এ বিষয় বিভিন্ন পত্রিকা ও সংবাদ মাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে। আজ বিজ্ঞ বিচারক উক্ত মামলার আসামিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল আদালতের পাবলিক প্রসেকিউটর (পিপি)মোসলেম আলী আকন জানান, উক্ত আসামি তার স্ত্রীকে তালাক দিয়েছে কিন্ত কোন নোটিশ আসে নাই তার স্ত্রীর কাছে এবং সবচেয়ে বড় অপরাধ করেছে ৮ আট মাসের শিশুকে সে রেখে দিয়েছে। আইনে আছে ১৮ বছর(প্রাপ্ত বয়স্ক) না হওয়া পযন্ত মায়ের কাছে থাকবে তার সন্তান। আর এই অপরাধে আজ আসামিকে বিজ্ঞ আদালত জামিন নামঞ্জুর করে জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

 

LN24BD

RELATED ARTICLES
Continue to the category

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments