Wednesday, April 24, 2024
HomeScrollingআইসিইউতে আহমদ শফি, মেডিকেল বোর্ড গঠন

আইসিইউতে আহমদ শফি, মেডিকেল বোর্ড গঠন

শিক্ষার্থীর কঠোর আন্দোলনের মুখে হাটহাজারী দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম মাদ্রাসার মহাপরিচালক (মুহতামিম) পদ থেকে পদত্যাগের পর অসুস্থতাবোধ করায় হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) মধ্যরাতে তাকে অ্যাম্বুলেন্সে হাটহাজারী মাদ্রাসা থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়।

পরে হাসপাতালের ৩য় তলার ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটের (আইসিইউ) ৮ নম্বর বেডে ভর্তি করা হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. আফতাবুল ইসলাম। তিনি জানান, শফি হুজুর হৃদরোগসহ বার্ধক্যজনিত নানা জটিল রোগে ভুগছেন। তার চিকিৎসায় মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। তার অবস্থা উন্নতির দিকে।

প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাতে শিক্ষার্থীদের তীব্র আন্দোলনের মুখে হাটহাজারী দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম মাদ্রাসার মহাপরিচালক (মুহতামিম) পদ থেকে পদত্যাগ করেন হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফি।

রাতে হাটহাজারী মাদ্রাসার শুরা সদস্যদের বৈঠকে আল্লামা শফি এই ঘোষণা দেন। তবে বৈঠকে তাকে হাটহাজারী মাদ্রাসার উপদেষ্টা হিসেবে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান মাদ্রাসার মজলিশে শুরা সদস্য মাওলানা সালাউদ্দিন নানুপুরী।

এর আগে বুধবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিনভর হাটহাজারী দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম মাদ্রাসার মহাপরিচালক আল্লামা শাহ আহমদ শফিকে ‘সম্মানজনকভাবে’ অব্যাহতি দিয়ে নতুন একজনকে নিয়োগ, আল্লামা শফির ছেলে আনাস মাদানিকে মাদ্রাসা থেকে অপসারণসহ ৬ দফা দাবিতে বিক্ষোভ করেন মাদ্রাসার একদল শিক্ষার্থী।

একপর্যায়ে মাদ্রাসার সামনে চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি সড়কে অবস্থান নেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। পরে পুলিশ সড়ক থেকে তাদের সরিয়ে দিয়ে মাদ্রাসার ভেতরে ঢুকিয়ে দেয়। এ সময় মাদ্রাসার ভেতর ভাংচুরের অভিযোগও উঠে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে বুধবার রাতেই আনাস মাদানিকে তার পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় মজলিশা শুরার এক বৈঠকে। মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের ওপর ‘নির্যাতন’ বন্ধ করার অঙ্গীকারসহ কয়েকটি দাবি মেনে নেওয়া হয় ওই বৈঠকে।

এর মধ্যে বৃহস্পতিবারও সকাল থেকে ফের বিক্ষোভ, ভাংচুর করে একদল বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেখানে বিপুল পরিমাণ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়। সন্ধ্যায় হাটহাজারী মাদ্রাসা বন্ধ ঘোষণা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ২৪ আগস্ট কওমি মাদ্রাসাসমূহের কিতাব বিভাগের কার্যক্রম শুরু ও পরীক্ষা গ্রহণের জন্য কতিপয় শর্তসাপেক্ষে অনুমতি প্রদান করা হয়।

‘কিন্তু আরোপিত শর্তসমূহ যথাযথভাবে প্রতিপালিত না হওয়ায় চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী উপজেলার আল জামেয়াতুল আহলিয়া দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম মাদ্রাসাটি পুনরাদেশ না দেওয়া পর্যন্ত নির্দেশক্রমে বন্ধ ঘোষণা করা হলো। ’

তবে এতেও পরিস্থিতি শান্ত না হলে বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে ফের বৈঠকে বসেন হাটহাজারী মাদ্রাসার মজলিশে শুরার সদস্যরা। সেখানে আল্লামা শাহ আহমদ শফি তার পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন। তার এই ঘোষণার পরপরই আন্দোলন সমাপ্ত ঘোষণা করেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।

দেশের কওমি মাদ্রাসাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে পুরনো এবং বড় মাদ্রাসা হিসেবে পরিচিত হাটহাজারী দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম মাদ্রাসা। এই মাদ্রাসার মহাপরিচালক হিসেবে কওমি মাদ্রাসাগুলোর নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন আল্লামা শাহ আহমদ শফি।

RELATED ARTICLES
Continue to the category

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments