আমিরুল ইসলাম কবিরঃ
গাইবান্ধার সাদুল্যাপুরে সেপ্টেম্বর মাসে ২৩ জন মেয়ে ‘উধাও’ হয়েছে। এর মধ্যে একজন দুই সন্তানের জননী। আর বাকিরা অষ্টম থেকে ডিগ্রি শ্রেণির ছাত্রী। এসব ঘটনায় একজনের অভিভাবক থানায় অপহরণ মামলা করেছেন। অন্যদের অভিভাবক থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) অথবা পুলিশের কাছে মৌখিকভাবে অভিযোগ করেছেন।
৩০ সেপ্টেম্বর বুধবার উপজেলা পরিষদের মাসিক আইন-শৃঙ্খলা সভায় এ তথ্য তুলে ধরেন সাদুল্যাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদ রানা। তিনি বলেন, প্রেমঘটিত কারণে এই উপজেলার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে এখন বাড়তি চিন্তা করতে হচ্ছে।
বুধবার উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা আরিফুর রহমান কনকের সভাপতিত্বে ওই মাসিক আইন-শৃঙ্খলা সভা শুরু হয়। এতে আলোচনা করেন, সাদুল্লাপুর উপজেলা চেয়ারম্যান সাহারিয়া খাঁন বিপ্লব,থানা অফিসার ইন চার্জ (ওসি) মাসুদ রানা,উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শাহিনুল ইসলাম মন্ডল,কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান বসুনিয়া,শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল্লাহিস শাফি,সমাজ সেবা কর্মকর্তা মানিক চন্দ্র রায়,খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোফাপখারুল ইসলাম, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা সাহানাজ আক্তার,উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আব্দুল জলিল সরকার,জাতীয় পাটির সভাপতি আজিজুল ইসলাম,জাসদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রশিদ আজমী,প্রেসক্লাব সভাপতি শাহজাহান সোহেল,হিন্দু বৌদ্ধ ঐক্য পরিষদের রনজিত কুমার অধিকারী,নাগরিক কমিটির সভাপতি আবুল বাশার মো. আব্দুল হান্নান পিন্টু,ইউপি চেয়ারম্যান শাহীন সরকার, সামছুল আলম মাষ্টার,রফিকুল ইসলাম মন্ডল নওশা ও রবিউল করিম দুলা।
সভায় উপজেলার মহিপুর কলেজের প্রভাষক রনজিত কুমার অধিকারী বলেন,অপ্রাপ্ত বয়সের শিশু-কিশোরদের হাতে অ্যানড্রয়েড মোবাইল ফোন তুলে দেয়ায় সমাজে অপরাধ প্রবণতা বেড়েছে। অভিভাবক মহল সচেতন না হওয়ায় বিপথগামী হচ্ছে শিশু- কিশোররা। এই ফোনের মাধ্যমে তারা ফেসবুক ব্যবহার করে অথবা কথা বলে প্রেমে জড়িয়ে পড়ছে। আর এই বয়সের প্রেমের কারণে পরিবারের অজান্তে তারা বাড়ি ছাড়ছে।
সাদুল্যাপুর থানার ওসি মাসুদ রানা সভায় বলেন,এই মুহূর্তে এখানকান বড় আতঙ্কের বিষয় হচ্ছে মোবাইল প্রেম। অবুঝ শিশুরা কিছু বুঝে উঠার আগেই ফেসবুকে অথবা মোবাইল প্রেমে জড়িয়ে অজানার উদ্দেশে পাড়ি জমাচ্ছে। তারা বাবা-মা সহ বাড়ির অন্য কারো সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেনা। এই শিশুদের অনেকের পরিবার লোকলজ্জার ভয়ে আইন- শৃঙ্খলাবাহিনীকে পর্যন্ত জানাতে চান না। আবার কোনো অভিভাবক থানায় আসলেও সাধারণ ডায়েরি করেই চুপ থাকতে চান। এভাবে সেপ্টেম্বর মাসে এই উপজেলার ২৩ জন মেয়ে বাড়ি ছাড়া হয়েছে। এর মধ্যে মাত্র একজনের অভিভাবক অপহরণ মামলা করেছেন। অন্যান্য অভিভাবক সাধারণ ডায়েরি অথবা মৌখিকভাবে বিষয়টি জানিয়েছেন।
উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা সাহানাজ আক্তার বলেন,শিশু-কিশোরদের মোবাইল প্রেম অথবা ফেসবুক আসক্তি বন্ধ করতে কাউন্সিলিং জরুরি হয়ে পড়েছে। করোনার কারণে এখন যেহেতু বিদ্যালয় বন্ধ তাই আমরা চেষ্টা করবো গ্রামে গ্রামে ঘুরে শিশু- কিশোরদের সচেতন করে তুলতে। একই সঙ্গে এ ব্যাপারে অভিভাবক মহলের সচেতন হওয়া জরুরী।
উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সাহারিয়া খাঁন বিপ্লব বলেন, সন্তানের হাতে মোবাইল ফোন তুলে দেয়ার আগে অভিভাবকদের অনেক কিছুই ভাবতে হবে। সন্তান কোথায় যাচ্ছে,কার সঙ্গে ঘুড়ছে এসব বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে। অভিভাবকরা সচেতন হলে সন্তানরা বিপথগামী হওয়া থেকে রক্ষা পাবে।√#
গাইবান্ধার সাদুল্যাপুরে এক মাসে প্রেমের টানে ‘উধাও ২৩ মেয়ে !
RELATED ARTICLES
Continue to the categoryRecent Comments
Hello world!
on